কিছু কিছু ব্র্যান্ড আদ্যোপান্ত বাঙালি, সে কোনও অমুক-লিভারের নয় বা কোনও তমুক-গ্যাম্বেল’এরও নয়। এই পণ্য-নামগুলো বাঙালির বাঙ্গালিয়ানা ঘিরে রয়েছে, অন্তত নব্বই দশক পর্যন্তও ছিল। আর আমরা যারা এখন টি-টুয়েন্টি তথা ডিশ-টিভি তথা ফেসবুক-মগ্ন, তাদের কাছে এই নামগুলোর একক ডেফিনিসন হচ্ছে ‘ছেলেবেলার গন্ধ’।
~ বোরোলীন: সুরভিত অ্যান্টিসেপটিক ক্রীম। চ্যাটচ্যাটে, বাতাস ভারী গন্ধে ভরপুর। তবু ঠোঁট-ফাটা থেকে ছড়ে যাওয়া হাঁটু, বোরোলীন ছিল সর্বত্র। এখনো বোরোলিনের ছিপি খুললে মা’এর কথা মনে আসে।
~ মার্গো সাবান: সবুজ। ভীষণ টেকসই। চেটে দেখেছি, সত্যিই নিম-তেতো। ফ্যানা-ট্যানার পরোয়া নেই, এন্তার গায়ে-পিঠে ঘষে চলো।
~ নাইসিল: আমার বাঙালি রক্ত আমায় দিয়েছে দুপুর রোদে ফুটবল, আর দিয়েছে ঘামাচি, ভাগ্যিস নাইসিল ছিলো।
~
শালিমার নারকোল তেল/ কেওকারপীন হেয়ার অয়েল: নিয়মিত মা মাথায় ঘষে দিত শালিমার নারকোল তেল এবং সেটা এতটাই পরিমাণে যে গোটাদিন মাথা চুপ-চুপ করতো। তবে বিশেষ কিছুদিনে পেতাম ইস্পেশ্যাল কেও-কারপীন হেয়ার অয়েল, দিদিদের বদান্যতায়।
~ দুলাল চন্দ্র ভড়ের তাল মিছরি: স্টক করতো বড়-জ্যাঠা, আমার চুরি বিদ্যার হাতে খড়ি।
~ অজন্তা হাওয়াই: সার্থক এর মুগুর মার্কা। পাড়ার তপুদা’কে দেখেছি এই হাওয়াই চটি পড়ে ফাস্ট-বোলিং করতে। আমার প্রিয় রঙ: নীল।
~ কে সি পালের ছাতা: ছাতা ছাড়া বাঙালি আর মেটে ছাড়া পাঁঠা, ও একি ব্যাপার। ‘রৌদ্র-ছায়া-মাথা ব্যথা / ভরসা তো একটাই / কে সি পাল ছাতা’
~ ব্রিটানিয়া থিন-অ্যারারুট: “যতদিন দেহে আছে প্রাণ/ প্রাণপনে এ ‘টা’য়ের গাইব জয়গান”। আমার ছোটমামার কথায় ‘বাঙালি কে ফিনিশ করতে হলে, ব্রিগেড আর ব্রিটানিয়া থিন-অ্যারারুট ভ্যানিস করে দাও; ব্যাস’।
"এতগুলি পণ্যেরে হে মা জননী
রেখেছো বাঙালি করে
গ্ল্যামার দাওনি"
1 comment:
Osadharon..
sei nostalgia..
Post a Comment