রাত দেড়টায় ঘর্ঘর করে শেষ ট্রাম চলে যায় হ্যারিসন রোডের ওপর দিয়ে। লাগোয়া গলির সাতপুরনো স্যাঁতস্যাঁতে দোতলার ঘরটা কেঁপে ওঠে সে শব্দে। বহু জীর্ণ মেস বাড়িটার তস্য-জীর্ণ কাঠের জানলাগুলো মচড়মচড় করে ওঠে। ট্রামটা যেতেই পাশের বাড়ির মেনিটা একবার ম্যাঁও করে ওঠে। উঠবেই। রোজ।
নিচে সদর দরজার পাশে ঠ্যালা লাগিয়ে শুয়ে থাকে রামলোচন। ট্রাম যেতেই লহমার জন্যে তার ঘুম ভাঙ্গে, আর “সিয়ারাম” বলে এক পাড়াভোলানো দ্বীর্ঘশ্বাস ছাড়ে সে। চিলেকোঠার পায়রাগুলো খলবল করে ওঠে কয়েক মুহূর্তের জন্যে। চৌকিতে শিরশিরে কাঁপুনি টের পাওয়া যায়। ট্রামের ঝুমঝুমির তালে পাশে দাঁড়ানো টেবিলের নড়বড়ে পায়ার কনকন অনুভূত হয় দিব্যি।
এই কয়েক মুহূর্তে শব্দ-মেশালিতে সেই মেসবাসী কিশোরের কলকাতা-যোগ। এই শব্দগুলোকে ঘিরেই তার কলকাতাকে ভালোবাসা, স্নেহ। জেগে থাকা হুটোপুটি-মার্কা কলকাতার আর অন্য কোনও শব্দ বা ডাক কিছুতেই নিজের মত করে ঠাহর করতে পারে না সে। বুঝতেও পারে না।
সে মেস-কিশোর কবিতা বোঝে না, পড়ার ভানও না। শুধু রোজ রাতের ওই ট্রামের ডাকে সে নিয়মিত ভূতের ভয় পায়। জীবনানন্দকে সে ভূত বলে চেনে।
প্রতি রাতে মেসের জানালা বেয়ে ভেসে আসা ট্রামের ঝমঝমে সে কিশোরের রিফিউজি পালকগুলো একটা একটা করে ঝরে পড়ে।
সব দেশ ছাড়ার গল্পে কাঁটাতার থাকে না।
নিচে সদর দরজার পাশে ঠ্যালা লাগিয়ে শুয়ে থাকে রামলোচন। ট্রাম যেতেই লহমার জন্যে তার ঘুম ভাঙ্গে, আর “সিয়ারাম” বলে এক পাড়াভোলানো দ্বীর্ঘশ্বাস ছাড়ে সে। চিলেকোঠার পায়রাগুলো খলবল করে ওঠে কয়েক মুহূর্তের জন্যে। চৌকিতে শিরশিরে কাঁপুনি টের পাওয়া যায়। ট্রামের ঝুমঝুমির তালে পাশে দাঁড়ানো টেবিলের নড়বড়ে পায়ার কনকন অনুভূত হয় দিব্যি।
এই কয়েক মুহূর্তে শব্দ-মেশালিতে সেই মেসবাসী কিশোরের কলকাতা-যোগ। এই শব্দগুলোকে ঘিরেই তার কলকাতাকে ভালোবাসা, স্নেহ। জেগে থাকা হুটোপুটি-মার্কা কলকাতার আর অন্য কোনও শব্দ বা ডাক কিছুতেই নিজের মত করে ঠাহর করতে পারে না সে। বুঝতেও পারে না।
সে মেস-কিশোর কবিতা বোঝে না, পড়ার ভানও না। শুধু রোজ রাতের ওই ট্রামের ডাকে সে নিয়মিত ভূতের ভয় পায়। জীবনানন্দকে সে ভূত বলে চেনে।
প্রতি রাতে মেসের জানালা বেয়ে ভেসে আসা ট্রামের ঝমঝমে সে কিশোরের রিফিউজি পালকগুলো একটা একটা করে ঝরে পড়ে।
সব দেশ ছাড়ার গল্পে কাঁটাতার থাকে না।
1 comment:
তোমার গদ্যের হাতটা খাসা, উদ্ভাবনী শক্তিও! চালিয়ে যাওI
Post a Comment