প্রতিটি লুচির সঙ্গে আমি উর্বর থেকে উর্বরতর হয়ে চলি। বেগুনভাজার প্রতিটি কামড়ের ফলে আমার রন্ধ্রে জড়ো হয় স্নেহ-উল্লাস। আলু ভাজা যে মুহূর্তে জিভ ছুয়ে যায় সে মুহূর্তে আমি খুঁজে পাই দিন খাই-নির্ভরতার স্পর্শ। ধবধবে, ময়দায় প্রস্তুত, বর্তুল অতি-দৈবিক সৃষ্টি এই লুচি, কখনো গোল বেগুন ভাজার খোবলানো হৃদয়, কখনো মিহি আলু-ভাজার সাথে নিবিষ্ট হয়ে; মুখের ভিতরে লালা-মিশ্রিত হয়ে স্বর্গীয় মণ্ডে পরিণত হয়। সেই প্রাণাধিক লুচি-আলু-বেগুন মণ্ড গলা বেয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় উদরে নামে বটে, কিন্তু রসিক মাত্রই জানেন যে লুচির জাগতিক অস্তিত্বটুকু উদর-মুখী হলেও; লুচির পরমাত্মা নেমে আসে মানব হৃদয়ে। স্নায়ু এরপর সড়গড় হয়ে ওঠে, মানসপটে ভেসে ওঠে জিহ্বা-প্রেরিত সূর্যদয়। নোনতা-ঝালের তৈল স্পর্শ ঝেড়ে লুচি-খন্ড স্বল্প-মিষ্ট পায়েসে গা-ভাসিয়ে খোঁজে উন্মেষ। পবিত্রতা পায় এক অতি সাধারণ নাগরিক প্রাত:রাশ।
এরপর জিলিপির সহজ কামড়ে নির্মল ভালোবাসায় স্তিমিত হয়ে আসে সকালের ক্ষুধা। সুস্বাগতম দিন ও দৈনিক যুদ্ধগুলি।
No comments:
Post a Comment