“বিবাহবার্ষিকী”র মধ্যে একটা রবীন্দ্র-জয়ন্তী’জাত ব্যাপার ছিলো। এই সেই দিন
পর্যন্ত। রবীন্দ্রনাথের ঝাড়-পোছ করা ক্যালেণ্ডার বাঁধানো ছবির মত বউ’টি সন্ধ্যে থেকে এসো-বসো ভঙ্গিতে প্রস্তুত। রঙিন হাফ পাঞ্জাবিতে পুরোনো
হয়ে যাওয়া বর-রূপি ধুপ কাঠি। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের
শুভেচ্ছার হারমোনিয়াম।
Wednesday, November 28, 2012
Friday, November 16, 2012
ভালো থাকুন সায়ন্তনি
আজ এ শহরে এক মধ্যবয়স্ক দম্পতী ছুটে আসছেন। একে অপরকে সামলে রাখবার প্রবল চেষ্টা করে চলেছেন
দুজনে। তবু সমস্ত কিছু চোখের সামনে ভেসে যাচ্ছে। দাউ দাউ আগুনে চামড়া গলে যাওয়ার যন্ত্রনা।
বুকের রক্তে ঠান্ডা জল মিশে যাওয়ার আভাস। কষ্ট শব্দটি কী আলখেল্লা। মানুষ মারা যাওয়ার
সময় কেমন কষ্ট হয় ? দু:খ
টের পাওয়া যায় ? স্বামী-স্ত্রী সযত্নে ভাবতে চাইছেন। ভেসে যেতে
চাইছেন। চুরমার হতে চাইছেন। মারা যেতে চাইছেন।
এই মূহুর্তে, যখন
আমরা কেউ অফিসে ব্যস্ত, কেউ রাস্তায়, কেউ
চাকরির খোঁজে, কেউ ঘরের আরামে, কেউ দুপুর
ঘুমে; দুইজন মানুষ সুতীব্র ভাবে ধেয়ে আসছেন কোলকাতার দিকে। ছুটছেন, অথচ পৌছতে চাইছেন না
Thursday, November 8, 2012
বং প্যাকিং -(দ্বিতীয় কিস্তি)
বাঙালির দিগ্বিজয়ে বেরোতে এমন কোনও তোপ-প্রস্তুতি
লাগে না। অতি সহজ কয়টি সরঞ্জাম জুটে গেলেই
বাঙালি অতি সহজে বিশ্ব-ভ্রমণ করে আসতে পারেন। সেগুলো কী?
(আগাম বলে রাখা : লিষ্টিটি ঘোরতর পুরুষ-রুচি ভিত্ত্বিক )
১। জেলুসিল এবং ইসবগুল। কম্যুনিজ্ম
এবং ক্যাপিটালিজ্ম; দুটো দিক’য়েই সামাল দেওয়ার সঠিক প্রস্তুতি তো চাই।
২। টর্চ। অন্ধকারে হেল্পলেস
হয়ে ল্যাজে-গোবরে হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। নেকু পুচকে মাল নয়; চার কী পাঁচ সেলের মিনি গদা মার্কা টর্চ; আলোর আলো, অস্ত্র’র অস্ত্র।
Tuesday, November 6, 2012
নারী ঠ্যাকাতে নারি
পুরুষ কণ্ঠ : যা বলছি, মন দিয়ে শোনো। এবার থেকে আমার এলাকায় তোমার ধেই ধেই করে যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়ানো চলবে না।
নারী কণ্ঠ: হে: , শখ দ্যাখো বুড়োর। ভারী তো ভূতুড়ে এলাকার মালিক, তার এলাকায় আবার ঘুরে বেড়ানো বারণ। আর এই হাড় হিম কড়া ঠাণ্ডায় কোন ভদ্রমহিলা ঘুরে বেড়াতে চায়?
পুরুষ কণ্ঠ: খবরদার গিন্নী!
আমার পাড়া নিয়ে কুত্সা করেছো কি....
নারী কণ্ঠ: কি করবে মিনসে? ঝুটি ধরে মাথায় জেনুইন অর্ধ-চন্দ্র বসিয়ে দেবো....
পুরুষ কণ্ঠ: আহ:, লজ্জা নারীর ইয়ে....
নারী কণ্ঠ: থামো....ন্যাকা ভূত।
পুরুষ কণ্ঠ: না মানে বলছিলাম
কি, এ পাড়ার আমিই নেতা কিনা, তাই আমি ভাবছিলাম যে নিয়ম করে দেবো যা পাড়ার রাস্তায় মেয়ে-বৌ’দের বেরোনো বারণ....
নারী কণ্ঠ: পেটে পেটে এতো ? মেয়েদের বাইরে বেরোনো বারণ? এই দু;সাহসের কারণ?
পরুষ কণ্ঠ: আহ চটছো কেনো ডার্লিং, আসলে নেতা হিসেবে তেমন কেউ মানতে চাইছে নে, আমার ডাইরেক্ট এসিসট্যান্ট দুজনেই আমায় গাঁজাখোর বলে আড়ালে ঠাট্টা করে। এমন অবস্থায় একটা কঠিন নিয়ম যদি বলবত্ নাই করতে
পারি, তবে তো ইজ্জত্
ধুলোয় মিশবে....
নারী কণ্ঠ: অ! তোমার কেরদানি দ্যাখাবে বলে মেয়ে
চাবকানো নিয়ম চালু করা? মানবো না!
পুরুষ কণ্ঠ: আহ, স্যুইটি! একটু ভেবে দ্যাখো দেকিনি, দন্ড-মুণ্ডের কর্ত্তার ওয়াইফ যদি নিয়ম না মানে, পাবলিকে
মানবে নাকি?
নারী কণ্ঠ: তোমাদের
মত মালের চামড়া ছাড়িয়ে ডুগডুগি বানানো উচিত্...
পাপন আর মাঠ
সন্ধ্যে বেলা। বিশাল একটা
মাঠ। একজনকে বাদ দিলে, সম্পূর্ণ ফাঁকা। মাঠের ঠিক মাঝখানটায় বসে পাপন। হূই দিকে একটা গোলপোস্ট আর ঠিক উল্টো দিকে একটা। এক-ছটাক
দু-ছটাক ঘাস মাঠ জুড়ে ছড়িয়ে, অল্প বালি, অল্প কাদা। শুধু মাঠের ঠিক মাঝখানটায়, অর্থাত্ পাপন যেখানে বসে আছে, সেইখানটা
একটু ন্যাড়া; কারণ এইটা হল ক্যাম্বিস বলে খেলার ক্রিকেটের
পীচ। পাপন বাঁ হাতে ব্যাট করে। সবে রিভার্স স্যুইপটা হাতে আসছে। গরম পড়ে
গেলে অবশ্য শুধু ফুটবল আর ফুটবল। বর্ষায় করায় ল্যাপ্টা-লেপ্টি হয়ে ফুটবলের যে কী মজা; আহা। মান্তুদা তো এই মাঠে প্র্যাকটিস করেই কলকাতার ফার্স্ট ডিভিশনে চান্স পেয়ে গেছিলো।
ঘাস উপড়ে ফেলে গোড়ার ফ্যাকাশে সবুজ দিকটা জুত্ করে চাটতে
পারলে মিষ্টি স্বাদ জ্বিভে লাগে। বিকেলের আড্ডায় মগ্ন হয়ে কতবার ঘাস মুখে দিয়ে ফেলেছে পাপন। গরু হয়ে থাকাটা নেহাত্
মন্দ নয়; ঘাস
ব্যাপারটায় অসুবিধে বিশেষ নেই, তাছাড়া অঙ্কস্যারের গরু বলে ডাকটা আর অপমানজনক লাগবে না
Monday, November 5, 2012
অবনিবাবু দরজা খুলতে চান না
- অবনি বাড়ি আছো ?
- আজ্ঞে না।
- অবনি ঠাট্টা করছো?
- যা: শালা।
- অবনি তুমি গাল দাও?
- যা বাব্বা।
- অবনি তুমি বিরক্ত হচ্ছো?
- হতেও পারি।
- অবনি তুমি কি দোনমনায় ভূগছো?
- আঃ, কি হচ্ছেটা কি?
- অবনি তুমি কি পাল্টা প্রশ্ন করছো?
- সকাল সকাল দরজায় খটখট, কে তুমি
বাবা?
- অবনি তুমি কি তোমার বাবার কণ্ঠস্বর চেনো না?
- কেলিও দেবো কিন্তু!
- অবনি তুমি লোকের গায়ে হাত তোলো?
- চোপ!
- অবনি তুমি সমস্ত অপ্রিয় প্রশ্ন চুপ করিয়ে দিতে চাও?
- কান মলছি স্যার। দোর খুলছি।
Friday, November 2, 2012
আপনি কি বাঙালি ?
আপনি কি মাঙ্কি-টুপি ব্যবহারে
কুণ্ঠা বোধ করেন?
আপনার গলায় রবীন্দ্রসঙ্গীত আসলে
কি কণ্ঠস্বর আপনা থেকে ভারী হয়ে যায় না?
আপনি কি জেলুসিল সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল
নন?
আপনি কি নলেন গুড়ের আশায় ক্যালেণ্ডারের
দিকে তাকিয়ে থাকেন না?
আপনি কি “রোম্যান্স মানেই উত্তম”
বলে গলে যান না?
আপনি কি পর্ণ কে পানু বলে অভিহিত
করেন না?
আপনি কি “বোকা” শব্দটিকে ঘোরতর
অসুম্পূর্ণ বলে মনে করেন না
দু:স্বপ্ন
- “তুমি কি
ভয় পেয়েছো মধু?”, বাবার স্পষ্ট কণ্ঠস্বর
করওয়া চৌথ’য়ের কবলে
(ঘটনাটি অথবা দুর্ঘটনাটি ঠিক এক বছর পুরনো)
সকাল সকাল বোমা। ব্রেকফাস্ট নেই। হোয়াট? এনার্কি নাকি? বউ’য়ের কাছে এনকোয়েরী করতেই মালুম হলো কেস : করওয়া চৌথ! আধা-কম্যুনিষ্ট বউ বলে কী! এসব তো উত্তর ভারতীয় ব্যাপার-স্যাপার!তায় উপোস করে থাকার নিয়ম হলো স্ত্রী’দের’; স্বামী’দের আয়ু-বৃদ্ধির অভিপ্রায়ে। এসবের মধ্যে গোদা-বাঙালি পুরুষ-সিংহ আমি ফাঁসলাম কেমন করে? ভাত-ডাল-চচ্চড়ি-ঝোল গিলে অফিসে বেরোনো অভ্যেস; এদিকে এক আনফোরসিন দুর্যোগ এসে হাজির।
বউ বুঝিয়ে বলায় কেস খোলসা হলো। রীতি-রেওয়াজের
মুখে কেরোসিন; এই বঙ্গ-করোয়া চৌথটা হলো নব্য সামাজিক ফ্যাশন-বিশেষ।
বাঙালির দেশি-কসমোপলিটিয়ানা
অর্জনের দিকে আর একটি পদক্ষেপ; বউয়ের বান্ধবী-মহলে
সবাই নাকি ব্যাপারটা জাতি নির্বিশেষে গ্রহণ করেছে। গতবার বউয়ের খপ্পড়ে পরে ধানতেরাসে পকেট-ত্রাস উত্সব
পালন করতে বাধ্য হয়েছিলাম। এবারে করওয়া চৌথ’য়ের পাল্লায় পড়লাম। আমার উপোসের কারণ হচ্ছে স্ত্রী-মুখী সমব্যথা। যেহেতু বউ উপোস যাবে; সেহেতু বর’ও উপোস যাবে; রোম্যান্সের
হিসেব তাই বলে; বউ’এর বান্ধবীদের বরেরা
নাকি স্বেচ্ছায় উপোস যাচ্ছে। লে হালুয়া। কখন সন্ধ্যেবেলা বউ চালুনি দিয়ে চাঁদ দেখবে, তারপর সে খাবে; এবং বলি-নায়কের
মত আমারও Chivalry’র কেতা মেনে তার পরেই জল-স্পর্শ করা উচিত।
আমি আপ্রাণ বোঝাবার চেষ্টা করলাম যে এই উপোস কী ভাবে বাঙালি জাতির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে
দিতে পারে; কিন্তু কে শোনে কার কথা। অবশেষে নির্জলা অবস্থায় অফিস-মুখো হলাম
Subscribe to:
Posts (Atom)