উবের ওলার ঠেলায় কলকাতার ট্যাক্সি অ্যাডভেঞ্চার কমে আসছে। ইলেক্ট্রনিকালি সার্জ-সহ ভাড়া দিতে গায়ে লাগে না। টেকনোলজির কাঁঠাল কেউ মাথায় দমাদম ভাঙলেও গায়ে লাগে না। কিন্তু ওলা-উবেরের আগে ব্যাপারটা অন্য রকম ছিল। শুধু অন্য রকম নয়; রীতিমত অ্যাডভেঞ্চার।
আমি সেই সব দিনগুলোতে অ্যাডভেঞ্চারিস্ট ছিলাম । ট্রেকিংয়ে গিয়ে নয়, জঙ্গলে পথ হারিয়ে নয়; আমার যাবতীয় অ্যাডভেঞ্চার ছিল কলকাতায় ট্যাক্সি পাকড়াও করার গালগল্পে। সে এক জমজমাট উত্তেজনা, বুকে দমাদম হাতুড়ি।
কী রকম?
এই ধরুন রাত আটটা। পার্ক স্ট্রিট। ফাঁকা এক জোড়া ট্যাক্সি ফুটপাথ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে।
প্রথমটিকে ধরলাম; “বালিগঞ্জ ফাঁড়ি যাবে ভাই?”
-“বেহালা যাবেন দাদা?” সপাট উত্তর।
-“বেহালা? আরে আমি চাইছি বলিগঞ্জ যেতে....বালিগঞ্জ ফাঁড়ি”!
-“আমি বেহালা যাবো, ইচ্ছে হলে চলুন...নয়ত অন্য ট্যাক্সি দেখুন”।
-“ইয়ার্কি পেয়েছেন নাকি ? আমি বালিগঞ্জ যাব!”
-“পঞ্চাশ টাকা বেশি লাগবে, বলিগঞ্জ যেতে হলে...”।
-“কী ? জুলুম নাকি ?”।
-“গলা তুলে আওয়াজ দেবেন না স্যার, গায়ে পড়ে ইনসাল্ট সহ্য করবো না...”!
-“বটে?আপনি এমএলএ অনিল মিত্রকে চেনেন? আপনি জানেন সে আমার কে হয় ”?
-“ আপনি জানেন হাত কাটা কার্তিককে চেনেন? আপনি জানেন সে আমার কে হয়”?
_ “বটে? আপনার গাড়ির নম্বর আমি পুলিশে দেবো”!
-“বিধানসভায় দিন, কানের কাছে ঘ্যানর ঘ্যানর করবেন না”!
ভীষ্ন জরুরী দরকার। ট্যাক্সি না পেলেই নয়। হুড়মুড় করে ছুটে গেলাম পাশেই দাঁড়িয়ে থাক দ্বিতীয় ট্যাক্সিটির কাছে। ভাবলাম এইবারে নিজেই ট্যাক্সির দরজা খুলে গ্যাঁট হয়ে বসে পড়ব। তবে দরজার হাতলে হাত দেওয়ার আগেই ড্রাইভারের প্রশ্ন: “দম করে দরজা খুলবেন না স্যার, যাবেন কোথায়”?
-“ যেখানেই যাই,আপনি নিয়ে যাবেন”, কড়া হতে চেষ্টা করলাম। গলা ইস্পাত কঠিন করতে চাইলাম কিন্তু কেমন একটা কুঁক শব্দ বেরিয়ে সব মাটি করল।
-“ট্যাক্সির ইঞ্জিন ডাউন হতে পারে”, নির্ভীক উত্তর।
-“ইঞ্জিন ডাউন হতে পারে? হতে পারে মানে কী? ইঞ্জিন ডাউন আছে না নেই”?
-“যাবেন কোথায়”?
-“সেটা শুনে বলবেন যে সত্যি ইঞ্জিন ডাউন কী না”?
-“অত কথার সময় নেই আমার”!
-“বালিগঞ্জ যাবো”!
_ “আশি টাকা বেশি লাগবে”।
-“হোয়াট ? আশি? মগের মুলুক নাকি?”
-“ইঞ্জিন ডাউন আছে, অন্য ট্যাক্সি দেখুন”।
-“পঞ্চাশ টাকা বেশি দিতে রাজি আছি”, সত্যিই ভীষণ জরুরী দরকার ছিলো।
-“উঠে বসুন”, পেছনের দরজা খুলে দিতে দিতে বললেন ড্রাইভার-দাদা।
আমি সেই সব দিনগুলোতে অ্যাডভেঞ্চারিস্ট ছিলাম । ট্রেকিংয়ে গিয়ে নয়, জঙ্গলে পথ হারিয়ে নয়; আমার যাবতীয় অ্যাডভেঞ্চার ছিল কলকাতায় ট্যাক্সি পাকড়াও করার গালগল্পে। সে এক জমজমাট উত্তেজনা, বুকে দমাদম হাতুড়ি।
কী রকম?
এই ধরুন রাত আটটা। পার্ক স্ট্রিট। ফাঁকা এক জোড়া ট্যাক্সি ফুটপাথ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে।
প্রথমটিকে ধরলাম; “বালিগঞ্জ ফাঁড়ি যাবে ভাই?”
-“বেহালা যাবেন দাদা?” সপাট উত্তর।
-“বেহালা? আরে আমি চাইছি বলিগঞ্জ যেতে....বালিগঞ্জ ফাঁড়ি”!
-“আমি বেহালা যাবো, ইচ্ছে হলে চলুন...নয়ত অন্য ট্যাক্সি দেখুন”।
-“ইয়ার্কি পেয়েছেন নাকি ? আমি বালিগঞ্জ যাব!”
-“পঞ্চাশ টাকা বেশি লাগবে, বলিগঞ্জ যেতে হলে...”।
-“কী ? জুলুম নাকি ?”।
-“গলা তুলে আওয়াজ দেবেন না স্যার, গায়ে পড়ে ইনসাল্ট সহ্য করবো না...”!
-“বটে?আপনি এমএলএ অনিল মিত্রকে চেনেন? আপনি জানেন সে আমার কে হয় ”?
-“ আপনি জানেন হাত কাটা কার্তিককে চেনেন? আপনি জানেন সে আমার কে হয়”?
_ “বটে? আপনার গাড়ির নম্বর আমি পুলিশে দেবো”!
-“বিধানসভায় দিন, কানের কাছে ঘ্যানর ঘ্যানর করবেন না”!
ভীষ্ন জরুরী দরকার। ট্যাক্সি না পেলেই নয়। হুড়মুড় করে ছুটে গেলাম পাশেই দাঁড়িয়ে থাক দ্বিতীয় ট্যাক্সিটির কাছে। ভাবলাম এইবারে নিজেই ট্যাক্সির দরজা খুলে গ্যাঁট হয়ে বসে পড়ব। তবে দরজার হাতলে হাত দেওয়ার আগেই ড্রাইভারের প্রশ্ন: “দম করে দরজা খুলবেন না স্যার, যাবেন কোথায়”?
-“ যেখানেই যাই,আপনি নিয়ে যাবেন”, কড়া হতে চেষ্টা করলাম। গলা ইস্পাত কঠিন করতে চাইলাম কিন্তু কেমন একটা কুঁক শব্দ বেরিয়ে সব মাটি করল।
-“ট্যাক্সির ইঞ্জিন ডাউন হতে পারে”, নির্ভীক উত্তর।
-“ইঞ্জিন ডাউন হতে পারে? হতে পারে মানে কী? ইঞ্জিন ডাউন আছে না নেই”?
-“যাবেন কোথায়”?
-“সেটা শুনে বলবেন যে সত্যি ইঞ্জিন ডাউন কী না”?
-“অত কথার সময় নেই আমার”!
-“বালিগঞ্জ যাবো”!
_ “আশি টাকা বেশি লাগবে”।
-“হোয়াট ? আশি? মগের মুলুক নাকি?”
-“ইঞ্জিন ডাউন আছে, অন্য ট্যাক্সি দেখুন”।
-“পঞ্চাশ টাকা বেশি দিতে রাজি আছি”, সত্যিই ভীষণ জরুরী দরকার ছিলো।
-“উঠে বসুন”, পেছনের দরজা খুলে দিতে দিতে বললেন ড্রাইভার-দাদা।
No comments:
Post a Comment