রবিবারটি মরে আসছে গো, মরে আসছে। শনিবার বিকেল থেকে তা-ধই-তা-ধই বেয়াদপি নেচে চললাম। কচুরী খায়েগা, দুপুরে ঘুমায়েগা, বিশের চায়ের
দোকানে আড্ডা মারেগা, ফ্রেঞ্চ
ওপেনে মেয়েদের টেনিস দেখেগা, মটন গিলকে
চিকেন কো ডাঁটা-মাফিক বোলকে গালি পাড়েগা, দায়-দাইত্ব’র নিকুচি করেগা। ধুর শালা।
পলিটিকাল গুণ্ডাবাজি শেষ হয় না, বউ’য়ের চাহিদার ফিরিস্তি শেষ হয় না, কফি হাউসের আঁতলামি শেষ
হয় না, আনন্দবাজারে
পাত্র-পাত্রী বিজ্ঞাপন পড়ে শেষ হয় না - এই রবিবার শেষ হয় কেন ?
শুক্রবারের শেষ বেলায় দাঁড়িয়ে মনে হয় রবিবারের পর পৃথিবী
ক্ষতম। উইকেণ্ড-মুখী অফিসের শেষ
বেলায় যে ফাইল হাফ-খামচা মেরে রেখে চলে এসেছি, সেই ফাইল কাল আমায় গিলে মুখ আচাবে। বস কলার
পাকড়িয়ে চেল্লাবে, “পাকড়াশীর ফাইল কমপ্লীট হয়নি কেন ? তোমার পাবলিক ফাঁসি হচ্ছে না কেন?”
।
।
বাসে ভীড়, রাস্তায় জ্যাম, লাঞ্চে মুলো-ঘণ্ট – এই সোমবার এসে আমার ঈশ্বর বিশ্বাস
কচুকাটা করে দেয়।
যে ভুবনে সোমবার আসে, সে ভুবনে কাহাকা ভগবান ? কাহাকা আল্লা ? সব বুজরুকি। জীবনে রয়ে গ্যাছে শুধু রবিবারের কচুরী-আর
বাকি হপ্তার ক্যালানি। রবিবার রাত দশটা বাজলেই মনে হয় যে সন্ন্যাসী হয়ে যাওয়াটা তেমন
গলদঘর্ম-কেস নয়। ইলিশ-সর্ষে, হুইস্কি, গুলাম আলী, সঞ্জীব চাটুজ্জ্যে’র মত কিছু ফ্যাক্টর বাদ গেলেও; সন্ন্যাস জীবনে থাকবে হিমালয়ের কম্ফর্টেবল ওয়েদার (বছর দশ মাস কলকাতায় প্যাচপ্যাচ অসহ্য হয়ে উঠছে) আর স্কন্ধ-কাটা সোমবার। আয়ু অন্তত ত্রিশ বছর বেড়ে
যেতে বাধ্য।
তবে এ রক্ত-ঘাম-বেরহমি’র গপ্পেই জিন্দেগি শেষ নয়। পাঁচ দিনের
নরক পেরিয়ে, গোপন প্রেমিকার আঙুলের ডগার মত তুলতুলে
শুক্রবার সন্ধ্যেটি, আদুরে নূপুরের শব্দ হয়ে বুকে গড়িয়ে
পড়বেই। ফের কোনও ফাইল অফিস টেবিলে বেমক্কা অসম্পূর্ণ হয়ে পড়ে থাকবেই। ফের এক রবিবার সকালে,
আমার
পরমাত্মীয় রহিম এক মুখ হাসি নিয়ে আমায় ডেকে নেবে তার পবিত্র দোকানটিতে, “ একদম নধর এবং কচি। এইমাত্তর কাটা। পাঁজড়-ঠ্যাং’য়ের দিক মিশিয়ে দিই কিলো
খানেক ?”
No comments:
Post a Comment