একদিকে আপনার পেটে প্রবল ক্ষিদে, অন্যদিকে আপনার চারিদিকে হিমসাগর, জলভরা, পাঠিসাপটার পাহাড় – আপনি দেখছেন, নাড়া-চারা করেছেন কিন্তু কিচ্ছুটি মুখে পুরতে পারছেন না। ডায়েবেটিস!
আপনার জিভের ডগায় চিনির কনা আর মাটির বুকে প্লাস্টিক প্যাকেট একই ব্যাপার।
অবশেষে আপনি একটি বিস্বাদ ক্রিম-ক্র্যকার
বিস্কুট, চিনি-হীন গরম জল-মাফিক চা’য়ে চুবিয়ে মুখে চালান করলেন। তারপর ঢেকুর
তোলার চেষ্টা করে বললেন “এই তোফা”।
কলেজ ছাত্র হিসেবে যখন বইমেলায় ঘুরঘুর করতে যেতাম তখন
ওই পেটের ক্ষিদের বদলে থাকতো বই’য়ের নেশা। যাবতীয় বুক-স্টল গুলো ছিলো হিমসাগর-জলভরার
পাহাড়। আর বাদলা-হাওয়া খেলে যাওয়া পকেট ছিলো ডায়েবেটিস। এক ঠোঙ্গা
বাদাম ছিলো আমার সেই ক্রিম-ক্র্যকার বিস্কুট।
বয়েস বেড়েছে। চাকরি এসে পকেটকে পেশী-বহুল করে তুলেছে। উমদা জিন্দেগি। কিন্তু কোথায়
ক্ষিদে স্যার! বস’য়ের ফাইল আর বউ’য়ের শপিং কে তোল্লাই দিতে দিতে, অম্বল অভ্যেসে দাঁড়িয়েছে- কোন ব্যাটার সাধ্য বই-ক্ষিদে বয়ে বেড়ায়। আর বই কিনেই বা কি হবে জনাব, আমি দেখবো টিভি জুড়ে মুন্নির কোমর-দুলুনি
আর আমার শো-কেস বুক-ভর্তি বঙ্কিম-শঙ্খ-বিভুতি নিয়ে হুপিং কাশবে।
সব গেজে গ্যাছে গুরু। এখন শুধু অপেক্ষা কবে আসলি
ডায়েবেটিস এসে কলজের হাতে বাটি ধরিয়ে দিয়ে যাবে।
1 comment:
এরকমই হয়। আগে পড়ার জন্য বই ছিল না। বই কেনার টাকা ছিল না। এখন সময় নেই। একই ব্যাপার ঘটেছে ভিডিও গেম-এর ক্ষেত্রেও।
Post a Comment