Tuesday, February 5, 2013

বসাসুর

-          আগরওয়ালের এপ্রুভালটা করিয়ে এনেছো ?
-          কালকে করবো স্যার।
-          এম কে আর ওয়ার্কস’য়ের ফাইল টা ক্লিয়ার করা হয়েছে ?
-          ভাবছি সেটা আর এ মাসে ধরে লাভ নেই স্যার।
-          মান্থলি রিপোর্ট ?
-          এই যাঃ, ভুলে গেছি।
-          তুমি অফিস আসো কি করতে ? বাড়ি থাকলেই পারো, মাস মাইনেটা আমি না হয় মানিঅর্ডার করে দেবো।
-          ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার থাকতে অমন মহাভারতের আমলের কথা বলবেন না তো! মানি অর্ডার শুনলে লোকে হাসবে।
-          মুখে মুখে তর্ক ?
-          গলার আওয়াজ তুলছেন কেন ? পাঁচ ফুটের মধ্যেই তো দুজনায় আছি।
-          বেয়াদপ!
-          খিস্তি মারলে কিন্ত বস-টস বলে তোয়াক্কা করবো না স্যার।
-          থ্রেট করছো ?
-          হুমকি, চমকানি; যা বলবেন।
-          আমি তোমার প্রমোশন আটকে দেবো।
-          আপনার প্রমোশনে আমি ইয়ে করি মাইরি।
বেহেড বেআক্কেলে লোক মশায় আপনি। রইলো আপনার চাকরি। এই আমার রেসিগনেশনের চিঠি। আর আগরওয়ালের থেকে যে আপনি নিয়মিত কমিশন খান; সে কথাও বড় কত্তা দের জানিয়ে যাব।
-          আহা ভাই মুকুজ্যে, তোমার এই দোষ- ইয়ং ম্যান কি না- অল্পেতেই মাথা গরম। অমন রেসিগনেশন রেসিগনেশন বাই তুলোনা তো! তুমিই তো ফিউচার আমাদের। একটু ঠাণ্ডা হয়ে নাও তো দেখি। একটা কাপুচিনো আনাই ? আর মান্থলি রিপোর্ট নিয়ে তোমায় আর বেশি ভাবতে হবে না। আমার হাতে বেশ কিছুটা খালি সময় থাকে। আই উইল মেক ইট। ইউ রিল্যাক্স। রিল্যাক্স। আর ছুটি-টুটির দরকার থাকলে আমায় বলতে প্লিজ হেসিটেট করো না, তোমরা আজকালকার ইয়ং ম্যানরা এত লাজুক যে কেন। 
স্বপ্ন-ভাবনাটা দারুন গাঢ় হয়ে এসেছিলো; এমন সময় পিওন বিশে ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিলে; “বড় সাহেব ডেকেছেন। বলেছেন আগরওয়ালের ফাইলটা নিয়ে যেতে”

মুখ তেতো হয়ে গেল। কলজে ঠাণ্ডা মেরে গেল।
নিজেকে হেঁচড়ে নিয়ে ঢুকলাম বসের ঘরে।
-          আগরওয়ালের এপ্রুভালটা করিয়ে এনেছো ?
-          কালকের মধ্যে হয়ে যাবে স্যার।
-          টুয়েন্টি ফোর আওয়ারস ? ইডিয়ট! এম কে আর ওয়ার্কস’য়ের ফাইল টা ক্লিয়ার করা হয়েছে ?
-          আজ সন্ধ্যের মধ্যেই...।
-          উফ! যত নিষ্কর্মার পাল্লায় পড়েছি।  মান্থলি রিপোর্ট ?
-          কাল ভুলে গেছিলাম স্যার ... এই ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই...
-          দেখি আগামি পাঁচ বছরের মধ্যে তুমি প্রমোশন কি করে পাও, নন-সেন্স কোথাকার! কোনও কাজ ঠিক সময়ে হয় না। অফিসে বসে কি নেত্য করা হয় ?
-          সরি স্যার
-          শাট আপ! আচ্ছা বেআক্কেলে পিস তুমি। তোমায় কি করে টাইট করতে হবে আমি বেশ জানি। বর-কত্তা কে বলে তোমায় এমন কানাগলিতে ট্রান্সফার করাবো...
-          প্লিজ স্যার, মায়ের অসুখ, ছেলের স্কুল, ট্রান্সফার হলে জলে পড়ে যাবো। আসলে দিবাকরদা অসুস্থ হওয়ায় ওর কাজটাও করতে হচ্ছে...তাই এ কাজ গুলো একটু...
-          হোয়াট ? হামকো অজুহাত দেতা হ্যায় ?
-          নো অজুহাত স্যার। ফ্যাক্ট।
-          মুখে মুখে তক্কও করা হচ্ছে আজকাল ?
-          সরি স্যার, এমন আর কোনও দিন হবে না।
-          ব্লাফ।
-          মা কালির দিব্বি। সমস্ত পেন্ডীং ব্যাপারগুলো আজই ম্যানেজ করে নেব স্যার।
-          আজকের মধ্যে না হলে আমি তোমার খাল খিঁচে নেবো। নাউ গেট আউট।

1 comment:

Anonymous said...

ASHADHARON eita khub enjoy korlam