আমি মনে মনে শাহবাগ প্র্যাকটিস
করি। সক্কাল সক্কাল বাথরুমে ঢুকে শাওয়ারের তালে চিৎকার করে উঠি “আমার সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালোবাসি”। এরপর গায়ে ডিও স্প্রে করতে করতে আলতো গলা কাঁপুনিতে ফ্ল্যাট
বাড়ির বাতাস হয়ে ওঠে বিপ্লব-ময় : “ আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি
কি ভুলতে পারি ?” ।
তারপর মুখে সামান্য
লুচি-আলুর দম মুখে পুরে ঝুঁকে পরি আনন্দবাজারে; এক দিকে শাহবাগ; অন্য দিকে শহবাগ। ওপারের
নির্ভীক প্রতিবাদের খবরে গর্বে ফেঁপে উঠি, বাংলা বলে ঢেঁকুর তুলি,গর্জে উঠি ; “আর
একটা লুচি প্লিজ”।
হুন্ডাই গাড়ির
স্টীয়ারিং’য়ে দ্রুত অফিসের দিকে ভেসে যেতে যেতে অবাক হয়ে ভাবি ; “ আমরা কি ভাবে
পাল্টে দিচ্ছি বাংলার জং ধরা যত খোল নলচে; কি ভাবে ঘুরিয়ে দিচ্ছি বাঙ্গালির ভাগ্য-পথ”।
তিন বার জয় বাংলা বলে চালিয়ে দিই গাড়ির মিউজিক সিস্টেম- “ যে
তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক আমি তোমায় ছাড়বো না মা...” । আহা; গায়ে কাঁটা আর মৌলবাদের মুখে
ঝ্যাঁটা।
অফিসে ইংরেজিতে বার-ফাট্টাই
চলে বটে কিন্তু মনে মনে বিপ্লবি বাঙালি হল্লা করে চলে “ জয় শাহবাগ, জয় বাংলা,
স্ক্রিউ রাজাকার”। তবে অফিস তো, মন কে একটু মিউট করে চলতেই হয়।
ঘর ফেরতা টিভি’তে
শাহবাগ, টুইটারে শাহবাগ, ফেসবুকে শাহবাগ - রক্ত গরম হয়ে যায় মাইরি; এত জোর বিপ্লব
পায় যে কি বলবো। নিজেকে সামলাতে পারি না; সামান্য হুইস্কি আর এম-পি-থ্রি’তে প্রতুল
মুখুজ্জের হাতে নিজেকে সঁপে দিয়ে গুনগুন করে চলিঃ “ আমি যা কিছু মহান বরন করেছি
বিনম্র শ্রদ্ধায়, মেশে তেরো নদি সাত সাগরের জল গঙ্গায় পদ্মায় / বাংলা আমার তৃষ্ণার
জল তৃপ্ত শেষ চুমুক / আমি একবার দেখি বার বার দেখি দেখি বাংলার মুখ”।
No comments:
Post a Comment