ছোটমামা – “ কি বললি ? এবার পুজোয় তুই পাড়ায়
থাকবি না?”
আমি-“ কতবার বলব ? নো। না। নেভার। হাওড়া টু
কালকা টিকিট কেটে ফেলেছি।
পুজোর পাঁচটা দিন শিমলা এবং মানালিতে কমপ্লিট
রিল্যাক্সেশন”
ছোটমামা – “ টিকিট কাটার সময় আমার পারমিশন নিয়েছিলি
?”
আমি- “ বাবা’র পারমিশন নিয়েছি”
ছোটমামা – “ ভারি এক্কেবারে পিতৃভক্তি উথলে
উঠেছে। টিকিট ক্যান্সেল কর। তোর যাওয়ার কোন প্রয়োজন আমি দেখছি না। এক কাড়ি টাকা
নষ্ট। কলকাতার অক্টোবরে গায়ে কম্বল চাপা দিস, শিমলে গেলে বেঁচে ফিরবি ভেবেছিস ?”
আমি- “ সে আমি বুঝবো”
ছোটমামা – “ আমরা গুরুজনেরা থাকতে তুই কি বুঝবি
রে আহাম্মক ? তুই চলে গেলে নবমীর থিয়েটারে শিশুপাল হবে কে ? আমি গলা কাটবো কার ?”
আমি – “ বাঃ রে, আমি শিশুপাল হতে যাব কোন দুঃখে
? প্রত্যেকবার যত ফালতু রোলে আমায় কাস্ট করা, আই ওন্ট টলারেট”
ছোটমামা – “ ফালতু কথা। তুই জানিস শিশুপালের
ডায়লগ ডেলিভারি কি মর্মান্তিক ? বিশু শিশুপালের রোল পাওয়ার জন্যে আমায় ভজহরির
ডিনার অফার করেছে সে খবর রাখিস ?”
আমি – “ ওসব ছাড়ো। বারোয়ারী মণ্ডপে লেবারের মত
খাটাবে। ভোগ বিতরণে হাত লাগা রে, ধুনুচি প্রস্তুত কর রে, বৃষ্টি নামলে চেয়ার সরা
রে, এটা আন রে, সেটা কেন রে, ভিড় সামলা রে, হ্যান কর রে, ত্যান কর রে। উফ পাঁচটা
দিন জুড়ে; সকাল টু রাত ভলেন্টিয়ারগিরির নামে বেগার খাটুনি। ওই থ্যাঙ্কলেস্ হয়রানির মধ্যে এ বান্দা নেই।
তাছাড়া হিমাচল আমায় ডাকছে মামা, রিফিউজ করতে পারব না”
ছোটমামা – “ ন্যাকা! হিমাচল ডাকছে! তুই জানিস
পুজোর সময় যে বাঙালি পাড়ার পুজো বাদ দিয়ে ব্যাংকক বা ঊটি গিয়ে নেত্য করে তাঁদের
দশা কেমন ?
বিরিয়ানি বাদে আরসালানের মতন। ভুঁড়ি বাদে
গণেশের মত। ময়দান বাদ কলকাতার মত। টুপি বাদে হিমেশ রেশমিয়ার মত। আপেল বাদে নিউটনের
মত। লংকা কুচি বাদে এগ রোলের মত। কচুরি বাদে রবিবারের সকালের মত...”
আমি- “থামো থামো। মাথা চিনচিন করছে”
ছোটমামা – “ ঠিক হ্যায়। মর গিয়ে তুই শিমলায়।
শুধু ইয়ে, এ বারে থিয়েটারে দোলন দ্রৌপদির পার্ট করছে। কাল থেকে রিহার্সাল শুরু।
টানা দেড় মাস চলবে; সন্ধ্যে সাতটা থেকে রাত নটা পর্যন্ত। ভাবছিলাম তোকে বলব যে তোর
বাড়ির কাছাকাছি থাকে যখন, তখন দোলন কে রোজ রিহার্সালের শেষে বাড়ি পর্যন্ত সঙ্গে
নিয়ে যেতে। এখন ভাবছি তুই যখন শিমলা কাটছিস, তখন বিশুকেই শিশুপালের পার্টটা অফার
করি”
আমি – মামা ইয়ে, আমি বলছিলাম কি...
ছোটমামা – কি ?
আমি – ভেবে দেখলাম তুমি মন্দ বলনি। টনসিলটা
এমনিতেই এত ট্রাবল দিচ্ছে। অক্টোবরের শিমলার টেম্পারেচারে আবার কোল্যাপ্স না করে
যাই। ভাবছি টিকিটটা ক্যান্সেল করে দি বল ? তাছাড়া শিশুপালের ক্যারেক্টারে একটা বেশ
ইয়ে আছে...তাই না ?
ছোটমামা – “ ভারি ইয়ে হয়েছিস, মামা’র সামনেও অমন
ইয়ে ভাবে ইয়ে রিভিল করতে আছে ? হা হা হা হা হা হা......”
1 comment:
না না! অক্টোবরে শিমলার টেম্পো হেয়াব্বি থাকে... একদম ফাস্টোকেলাস... ও সব দ্রৌপদী ফৌপদী অনেক পেয়ে যাবে। তুমি কাকা চলে এসো...। বাংলা মামারা এরকমই হয়ে থাকে কনফুসিয়াস...। মনে নেই। "এই ভাষাতেই প্রথম বোলে ডাকনু মায়ে মামা বলে"!
Post a Comment