প্যান্ডোরা অস্থির হয়ে
পায়চারি করচিলেন। ঘেইমে-নেয়ে সে এক একাকার কাণ্ড। ঢাউস বাক্সখানা রাখা আছে
চিলেকোঠার ঘরে। কত্তা বার বার কয়ে গিয়েচেন যেন বাক্সখানের ধারে কাছে প্যান্ডোরা না
ঘেঁষে। কিন্তু মনের মধ্যে তার কেমন যেন এতাল-বেতাল হচ্ছে গো।
মিনসে ভর দুপুরে অমন
বাক্স নিয়ে এলেন কেন গো। আনলেনই যখন তখন চিলেকোঠার কোনায় লুইকে রাখলেন কেন গো। লুইকে
রাখলেনই যখন, তখন প্যান্ডোরাকে সে বাক্সের ধারে কাছে যেতে বারণ করলেন কেন গো। মিনসে
বারণ করে আবার নিজে বাড়ি থেকে বেইরে গেলেন কেন গো। এখন প্যান্ডোরা কি করবে গো।
চিন্তেয় চিন্তেয় হাঁপ
ধরে যায় প্যান্ডোরার। বাক্সে কি এমন যেমন তেমন ব্যাপার আছে গো ? বাক্সে কি এমন
বাঘ-ভল্লুক রইচে গো ? কি এমন বাক্স যা প্যান্ডোরা ধইরলে তার মিনসের মান-ইজ্জৎ লটকে
যাবে গো ? মিনসে কি নতুন পিরীতির খপ্পরে পড়েচে গো? বাক্সে করে সতীনের গয়না এনেচে নাকি
অ্যাঁ ? এনে নুকিয়ে রেখেচে ? প্যান্ডোরার কি এমন সব্বনাশ হতে চলেচে গো ? প্যান্ডোরা
কি করবে গো ?
ও হরি, প্যান্ডোরা কি
করবে গো ? প্যান্ডোরার কি সব্বনাশ হল গো ?
নাঃ, এমন হতে দেওয়া
যাচ্চে না। প্যান্ডোরা ঠিক করলে সে ঝ্যাঁটা মারবে মিনসের নিষেধের মুখে। দুদ্দাড়
করে সিঁড়ি বেয়ে চিলেকোঠায় উঠে গেলেন প্যান্ডোরা বউঠান। ঘরের কোনে মেঝেতে রাখা
আধ-হাত লম্বা সাদা কাগজের বাক্স। বিকেলের আবছায়াতে দেখতে পষ্ট নয় গো। প্যান্ডোরা
উবু হয়ে বসলেন বাক্স খানার পাশে। মন শক্ত করলেন। সাদা কাগজের বাক্স রঙিন ফিতে দিয়ে
বাঁধা। প্যান্ডোরার তর সইল না গো। তর সইল না।
প্যান্ডোরা রঙিন ফিতে
ছিঁড়ে বাক্সর ঢাকা খুললেন। ভেতরে থরে থরে সাজানো; কৃষ্ণনগরের রসিক, ঢলঢলে সরভাজা’দের দল।
No comments:
Post a Comment