( বলে রাখি - এটি একটি ব্যাক্তিগত পোষ্ট )
জীবনবাবু বুঝতে
পারছিলেন যে তাঁর নিঃশ্বাসের শনশন শব্দ কুড়ি হাত দূরে দাঁড়িয়েও কেউ বিশ্রী
স্পষ্টতায় শুনতে পারবে। সর্দি নয়। বুকে জমা জল থৈ থৈ করছে। তিরাশি বছর সময় হিসেবে যথেষ্টই, কিন্তু সামগ্রিক
ব্যাপারটা তো আর মামুলি নয়। ডাক্তার সামন্তর
প্রেসক্রিপশন পড়তে তাঁর কোনও অসুবিধে হয় নি; কিডনি প্রায় পঁচানব্বই শতাংশ বিকল।
ডায়লিসিসের ধকল সইবে না তা তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারছেন। ডাক্তারের সঙ্গে তাঁর তিন ছেলের
কি কথাবার্তা হয়েছে তা অবিশ্যি তাঁর কানে আসেনি। বুকের ভিতর কেরোসিন ছড়িয়ে দেশলাই
জ্বেলে দেওয়া দাউদাউ যন্ত্রণা; কথাবার্তা কানে আসবে কি করে ? তবে অদ্ভুতভাবে মগজ
শান্ত রয়েছে। সমস্ত কিছু সুষ্ঠু ভাবে অ্যানালাইজ করতে কোন অসুবিধে হচ্ছে না। ফিউ
ডেইজ। বাট সারটেইনলি নট আ উইক।
অসুবিধে হচ্ছে যে
পুরুষামিটা মজ্জাগত হয়ে গিয়েছে জীবনবাবুর। আঠারো বছর বয়স থেকে স্কুল মাস্টারি আর
সংসার ম্যানেজ করতে করতে পুরুষালী-নির্বিকার-পনা বাড়াবাড়ি রকমের আয়ত্ত হয়ে গেছে। অভাব-দুর্যোগ
সামাল দিয়ে; চার ছেলেমেয়ে মানুষ করতে করতে নার্ভ ঠাণ্ডা হয়ে পড়েনি বটে; কিন্তু
সেন্টিমেন্টের বহিঃপ্রকাশের দ্বারটা প্রায় ক্লগ্ড হয়ে গিয়েছে।