- প্রোফেসর দত্ত, প্রথমেই
আপনাকে আমাদের পত্রিকার তরফ থেকে বলি ; কংগ্রাচুলেশনস।
- অনেক ধন্যবাদ।
- ভারত এবার জগত সভায়
সত্যিই একটা পেল্লায় কিছু করে দেখালে । আর করে যে দেখালে, তা একজন বাঙালির হাত ধরে। আপনার হাত ধরে। দু হাজার
বত্রিশের নোবেল তো পাচ্ছেনই, পৃথিবীর একশো বত্রিশটি দেশ আপনাকে নাগরিকত্ব দিয়ে
নিজেদের ধন্য মনে করছে।
- হে হে হে।
- আমরা ভীষণ গর্বিত আপনাকে
নিয়ে।
- হে হে হে।
- আপনার আবিষ্কার পৃথিবীর
মোড় ঘুরিয়ে দিতে চলেছে। ইন্ধন ও জ্বালানির সমস্যা সম্পূর্ণ উবে যাবে। এই
উলুবেড়িয়ায় বসে, এমন ম্যাজিক করলেন কি করে ? তাও সামান্য সমস্ত শব্দ কে হাতিয়ার
করে ?
- সামান্য ? সামান্য কি বলছেন
? ব্রহ্মাণ্ড ইমার্স্ড রয়েছে স্রেফ একটা শব্দের মধ্যে; ওঁ। একবার ওম বলে দেখুন না
মশায়। বুকের ভেতর অক্সিজেন সাপ্লাই কেমন আলগোছে বেড়ে যায়।
- আপনার আবিষ্কারের
ব্যাপারে একটু খুলে বলুন। আপনার এই অ্যাকউস্টিক-পাওয়ার-জেনারেটর দিয়ে গোটা পৃথিবীর
জ্বালানি সমস্যা কি ভাবে মিটে যাবে ? ডিজেল, এল পি জী; এসবে পকেট কাটা যাওয়ার দিন
কি সত্যি এসে গেছে ? আমাদের সাধারণ পাঠকদের একটু সহজ করে বুঝিয়ে দিন প্লিজ।
- আলবাত। আমার এই
প্রোজেক্ট-উলুবেড়িয়ার কিন্তু সেই শ-খানেক বছর আগেকার প্রোজেক্ট-ম্যানহাটনের চেয়ে
কোনও অংশে কম নয়। ইউরেনিয়াম বা ওই জাতিও সমস্ত রেডিও অ্যাক্টিভ পদার্থ ছিল সে সময়ের
কাঁচা মাল। অ্যাটমিক ফিস্নের মাধ্যমে তৈরি
করা হয়েছিল পারমানবিক শক্তি। যে শক্তিতে চাইলে হিরোশিমাকে ঝলসে দেওয়া যায় আবার
চাইলে সুদানের ছোট্ট গ্রামের ছোট্ট স্কুল ঘরে বাতিও জ্বালানো যায়। তবে আমার
প্রোজেক্ট-উলুবেড়িয়া স্রেফ পদার্থবিদ্যার খেল নয়। এখানে তাঁর সঙ্গে জুড়েছে
বায়ো-মেকানিক্স, সাইকোলজি, কেমিস্ট্রি ও বায়ো-কেমিস্ট্রির কিছু অবস্কিওর ব্রাঞ্চ।
আর আমাদের ক্ষেত্রে কাঁচা মাল হল কিছু পাতি বাঙালি শব্দ।
- এই খানে একটা প্রশ্ন আছে।
শব্দের আবার বাঙালি-অবাঙালি কি ?
- ভালো প্রশ্ন। প্রথমে
আপনাকে বুঝতে হবে আমার এই এই অ্যাকউস্টিক-পাওয়ার-জেনারেটর যন্ত্রটি কি। একদম পাতি।
ডাইমেনশনে ধরুন একটা দশ ফুট বাই বারো ফুট ঘর। তাঁর একদিকে সাউন্ড রিসেপ্টর। মাঝে
প্রসেসর। অন্য-প্রান্তে অত্যাধুনিক ট্রান্সমিশন গ্রিড। শব্দ-নির্জাসটুকু নিয়ে
সেখান থেকে তৈরি হয় ইন্ধন। আর ইন্ধনের জ্বালানি ক্ষমতা এমন হাই ক্লাস যে বাড়ির
চুল্লি থেকে বিমান থেকে রকেট সমস্ত চালানো যায় তা দিয়ে। একটি যন্ত্রের আধ বেলার উৎপাদনে গোটা কলকাতা চলে যাবে তিন দিন। অর্থাৎ
বুঝতেই পারছেন, সমস্ত অর্থনীতির ভোল
পাল্টে যেতে চলেছে।
তবে আমরা শুধু শব্দের ফিজিক্যাল কোয়ালিটিগুলো ব্যাবহার
করি না। আমার এই যন্ত্র যে অ্যালগোরিদ্ম ব্যাবহার করে তাতে ইনপুট-শব্দের ইমোশনাল
টিম্বার আর বি-কিউ খুব গুরুত্বপূর্ণ।