তিনি - আমার
হাতে সময় একদম নেই।
বৈজ্ঞানিক - শান্ত হন। যানটি প্রস্তুত প্রায়।
তিনি - এটা মাঝ পথে বিগড়ে যাবে না তো ? নয়তো
সত্যিই আমায় আত্মহত্যা করতে হবে বৈজ্ঞানিক...
বৈজ্ঞানিক - কি বলছেন স্যার ? ম্যানহ্যাটন
প্রজেক্ট অমন বাঘা জিনিষ তৈরি করছে জেনেও আপনি এই মহা-গোপন প্রোজেক্ট থেকে আমাদের
সরিয়ে বোমা বানানোয় নিযুক্ত করেননি। আপনার বিশ্বাসের অমর্যাদা হয়নি। যন্ত্রটি
নিশ্চিন্তে কাজ করবে। আপনার পাত্তা আর কোনও দিন কেউ পাচ্ছে না।
তিনি – আমার স্ত্রীও যাবেন আমার
সাথে...জেনারেল...ব্যবস্থা সব ঠিকঠাক ?
জেনারেল – অবশ্যই। আপনার
ও আপনার স্ত্রীর ডামি দুজনকে তৈরি রাখা হয়েছে। আপনাদের যাত্রা শুরু হলেই সেই ডামি
দুজনকে বাধ্য করা হবে আত্মহত্যা করতে।
তিনি – গুড। জেনারেল,
মনে রাখবেন যুদ্ধ এখানেই শেষ নয়। আমেরিকার এই বেলেল্লাপনার জবাব আমি দেবই। আমার
ল্যান্ডিং’য়ের প্ল্যান তৈরি তো ?
জেনারেল – আলবাত। আপনি
যেখানে যাবেন সে দেশ, ভাষা ও সময় অবিশ্যি আপনার জন্যে নতুন। কিন্তু আমাদের স্পেশাল
টাস্ক-ফোর্স চার বছর আগেই সেখানে পৌঁছে
ঘাঁটি গেড়েছে। আমাদের পূর্ব-পরিকল্পিত প্ল্যান বি অনুযায়ী তারা ইতিমধ্যেই সে দেশের
রুচি-সংস্কৃতির সঙ্গে মিলে তাঁদেরই আপনজন হয়ে গেছে। আমাদের সেনানীরা প্রস্তুত হয়ে রয়েছে; আপনারা সে দেশে পৌছলে আপনাদের ট্রেনিং দিয়ে ছয়
মাসের মধ্যে সে দেশের আবহাওয়া, পরিবেশ ও রুচির নিরিখে যোগ্য করে তুলবে। এক বছরের
মধ্যে সে দেশ শাসন করবেন আপনি; অবশ্যই আড়ালে থেকে। সে সময়ের টেকনোলজি সম্পূর্ণ
রপ্ত করে নিয়েছে আমাদের এই বিশেষ টাস্ক ফোর্স। প্ল্যান বি সফল হবেই, আমেরিকা ধ্বংস
হবেই, জয় আপনারই হবে।
তিনি – ইতিহাস সামাল দেওয়ার
দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হয়েছে আমায় জেনারেল। সফল তো হতেই হবে। কিন্তু ও দেশে
গিয়ে, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ব্লু-প্রিন্ট আশা করি আমাদের
টাস্ক-ফোর্স ইতিমধ্যেই তৈরি রেখেছে ?
জেনারেল – নিশ্চয়ই। সে সময়ও যুদ্ধ ঘোষণা হবে, তবে
তখন হুজুগ অর্থনীতির নয়। প্ল্যান বি’র যুদ্ধ শুরু হবে ধর্মের হুঙ্কার তুলে। আমাদের
টাস্কফোর্স ইতিমধ্যেই সেখানকার এক ধর্মীয় সম্প্রদায়কে আমেরিকার বিরুদ্ধে চমৎকার
ভাবে তাতিয়ে তুলেছে। তাঁদের নেতাও আমাদের পকেটে। সেখানে পৌঁছে সে নেতাকে ও তাঁর
দলবলকে আপনিই চালাবেন; অবশ্যই আড়ালে থেকে।
তিনি – চমৎকার। বৈজ্ঞানিক ?
বৈজ্ঞানিক – বলুন স্যার।
তিনি – এই যন্ত্র একটিই আছে তো ?
বৈজ্ঞানিক – হ্যাঁ। আর আপনারা চলে যাওয়ার সঙ্গে
সঙ্গেই আমাদের ল্যাবরেটরি এবং সমস্ত ফর্মুলা পুড়িয়ে ফেলা হবে।
তিনি – গুড। টাইম মেশিন। আহ:। আমেরিকা পরমাণু
বোমা নিয়ে নেচে উন্মাদ হয়ে যাক। এই আমি বানালাম টাইম মেশিন। সময়ও এখন আমার দাস,
কোথায় লাগে আমেরিকা।
বৈজ্ঞানিক – স্যার, আপনার জেনে রাখা ভালো, আমাদের
এই যন্ত্রে মানুষ ভবিষ্যতেই যেতে পারে, কিন্তু সময়ের উল্টো স্রোতে যেতে পারে না।
তিনি – চলবে বৈজ্ঞানিক। তুমি নিঃস্বার্থ ভাবে যা
করলে, তাঁর তুলনা কোন কিছুর সঙ্গেই হতে পারে না। এই আমি অ্যাডল্ফ হিটলার তোমায়
বলে যাচ্ছি, জার্মান রক্তের শেষ ফোঁটা যতদিন পৃথিবীতে থাকবে, ততদিন তোমার প্রতি
আমার কৃতজ্ঞতা অটল থাকবে। জেনারেল হান্স, ইভা আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে চলে আসবে।
স্বামী-স্ত্রী মিলে আমরা ভবিষ্যৎ এবং প্ল্যান বি’র দিকে রওনা হব তুরন্ত। আশা করি বর্তমানের
এই দুর্যোগ তোমরা সামাল দেবে।
জেনারেল – আপনি বর্তমানের চিন্তা ভুলে যান ফুয়েরার।
আপনার সামনে এখন একটাই স্পষ্ট লক্ষ্য। আমেরিকার ধ্বংস। প্ল্যান বি আপনার অপেক্ষায়
বসে। এই টাইম মেশিন আপনাকে নিয়ে যাবে ১৯৯১ সালের আফগানিস্তানে। সেখানে তালিবানদের
দলকে তাঁতিয়ে তুলে ফের যুদ্ধ শানাবেন আপনি ফুয়েরার। আমেরিকার শয়তানির বদলা আপনি
শয়তানিতেই নেবেন। ওই তালিবানদের সেই সময়ের নেতা ওসামা বিন লাদেনকে পুতুলের মত
চালিয়ে যুদ্ধ হাঁকাতে আপনার কোনও অসুবিধেই হবে না।
তিনি – আশা করি এবার অন্তত তোমাদের আশায় জল পড়বে
না জেনারেল। কিন্তু প্ল্যান বি’র ব্যাক আপ ?
জেনারেল – নিশ্চিন্ত থাকুন ফুয়েরার। প্ল্যান এফ
পর্যন্ত ছকা আছে। বলে রাখি, প্ল্যান বি যেমন উনিশ শো নব্বুইয়ের আফগানিস্তান। তেমনি
প্ল্যান সি হচ্ছে দু হাজার চোদ্দ’র ইউক্রেন বলে এক দেশ। এমনি করে আগামী দুশো বছর
ধরে, পাঁচটি সময়কাল ও বিভিন্ন দেশ জুড়ে এই টাইম মেশিনের যাত্রাপথ প্রোগ্রাম করা আছে।
আমাদের বিশেষ টাস্কফোর্সকেও সে ভাবেই প্ল্যান করতে বলা হয়েছে। সাফল্য আপনার আসবেই।
তিনি – আমার সাফল্য নয় জেনারেল। আমাদের।
জেনারেল – হাইল হিটলার।
বৈজ্ঞানিক – হাইল হিটলার।
2 comments:
মজাদার কল্পনা... এবং বাস্তবের সঙ্গে কল্পনাকে মিশিয়ে একটা সমান্তরাল জগৎ তৈরী করতে যে মুন্সীয়ানা লাগে, সেটা তন্ময়ের পুরোমাত্রায় বিদ্যমান। সমসাময়িক পৃথিবী সম্পর্কে চিন্তাভাবনার প্রকাশটাও প্রশংসনীয়।
একটা ছোট্ট ডিটেইল, "হের" নয়, "হাইল" দিয়ে হোতো অভিবাদনটা।
ধন্যবাদ Suirauqa. শুধরে নিলাম।
Post a Comment