- স্যার আসবো ?
- আসুন।
- আজ্ঞে আমি সামন্ত। ভজহরি সামন্ত। ঢাকুরিয়া থেকে আসছি। ওই গতকাল কথা হয়েছিল।
- ও, হ্যাভ আ সিট।
- থ্যাঙ্ক ইউ স্যার। ওই স্ক্র্যাপ’য়ের ব্যাপারে…
- জাস্ট গিভ মি আ মিনিট। একটা আর্জেন্ট মেইল সেন্ড করে নি।…………………………………………...হুম, এই বার বলুন।
- আজ্ঞে আমি সামন্ত। ভজহরি…
- বললেন তো।কাজের কথায় আসুন।
- আপনাদের লোহার স্ক্র্যাপ প্রচুর জেনারেট হয় শুনলাম।
- লোহা নয়। সোনা।
- আজ্ঞে ?
- ওয়েল, আই মিন আমাদের যে আয়রন ওয়েস্ট জেনারেট হয়, রোলিং মিল্সগুলোর কাছে সেগুলো সোনার সমান।
- হে হে, বটেই তো স্যার। সান্যাল সাহেবও তাই কথাই বললে।
- সান্যাল আপনাকে পাঠিয়েছে ?
- আজ্ঞে। উনি বুঝি আপনাকে বলেননি কিছু ?
- বলছিল বটে কিছু একটা আমাদের সাঁতরাগাছির ফ্যাক্টরির ব্যাপারে। এনিওয়েজ বলুন আপনার এখানে আসার অবজেক্টিভ। সিগারেট চলে ?
- হে হে হে। সো কাইন্ড অফ ইউ।
- আসুন।
- ওই সাঁতরাগাছির ফ্যাক্টরির স্ক্র্যাপের ব্যাপারে ইন্টারেস্ট নিয়ে এসেছিলাম। সান্যাল সাহেব বললেন যে আপনিই ডিসিশন-মেকার।
- স্যার আপনি চাইলে…
- দেখুন মিস্টার…
- আজ্ঞে সামন্ত।
- দেখুন মিস্টার সামন্ত, উই জেনারেট অ্যারাউন্ড সেভেন্টি টনস্ এভ্রি মান্থ।
- আজ্ঞে আপনি চাইলে পুরোটাই তুলে নেওয়ার…
- বর্তমানে আমরা বত্রিশ টাকা কিলোতে বিক্রি করছি।
- স্যার, আমি পঁয়ত্রিশ পর্যন্ত…
- মিস্টার সামন্ত, দামটা পরে। আপনার এই স্ক্র্যাপ’য়ের ভ্যালু সম্বন্ধে কি কোন ধারণা আছে ?
- ইনভয়েসিং আপনি যে দামে চাইবেন স্যার।
- যাক, সান্যাল লোক চেনে।
- হে হে হে।
- বর্তমানে ইনভয়েসিং হচ্ছে সতেরো তে। আই ওয়ান্ট ইউ টু ইনভয়েস অ্যাট টুয়েন্টি পার কিলো। বুঝতেই পারছেন। পার্টি চেঞ্জ করতে হলে আমাকে জাস্টিফাই করতে হবে।
- তা ত বটেই স্যার।
- অ্যান্ড আই ওয়ান্ট থার্টি নাইন পার কিলো।
- স্যার উনচল্লিশে মারা পড়বো স্যার।
- রুটিটা সম্পূর্ণ আমার উদরে যাবে না মিস্টার সামন্ত। অনেককে ভাগ দিতে হবে। এই সান্যালও কি এমনি এমনি আপনাকে আমার রেফারেন্স দিয়েছে ভেবেছেন সামন্তবাবু ?
- সে আমি বুঝি স্যার। কিন্তু…
- আমার সময় কম মিস্টার সামন্ত। আর আই হ্যাভ আদার অফার্স। অ্যান্ড থার্টি নাইন ইজ মাই ফাইনাল অফার।
- সামনের মাস থেকে তাহলে আমি ট্রাক লাগাতে পারি কি স্যার ?
- কফি চলবে ?
****
- জানিস আমার বাবা মনে হয় তোর বাবাকে চেনে।
- ধ্যাত। কি করে চিনবে ?
- হ্যাঁ রে।কাল তোর বাবা আমার বাবার অফিসে এসেছিল মনে হয়। তোর বাবার নাম ভজহরি সামন্ত না ? ঢাকুরিয়া তে বাড়ি তো তোদের?
- হ্যাঁ। তাই তো।
- কাল বাবা রাত্রেবেলা মা কে গল্প করছিল। আমি শুনেছি। আমার মনে হল নিশ্চয়ই তোর বাবা হবে। বাবা কিছু নতুন ডিল সেট্ করার কথা বলছিল। আমি অবশ্য সে সবের মানে বুঝি না।
- হতে পারে রে। বাবা তো কত লোকের সঙ্গে দেখা করে বেড়ায় দিনভর। এই জানিস আমার বাবাও কাল রাত্রে মাকে গল্প করছিল কিছু ফিসফিস করে। তবে বাবা ডিল সেট করার কথা বলেনি, কিন্তু কিছু দাঁও মারার কথা বলছিল। দাঁও মারা মানে কি ?
- দাঁও মানে বোধ হয় ডিল। বুঝলি ?
- এই জানিস, আমার বাবা মনে হয় তোর দাদুকে চেনে। বাবা তোর দাদুর নাম বলেছিল বটে।
- আমার দাদুর নাম বলছিল তোর বাবা ?
- হ্যাঁ। মানে বাবা বলছিল যে বাবা ঢ্যামনার ছেলের সাথে দেখা করেছিল। তোর দাদুর নাম কি ঢ্যামনা ?
- এই রে। আমার দাদুর নাম তো মৃত্যুঞ্জয় মুখোপাধ্যায় রে। ঢ্যামনা তো নয়। তাহলে বোধ হয় আমার বাবার সাথে অন্য কোন ভজহরি সামন্ত’র দেখা হয়েছে, তোর বাবার নয়।
- হবে হয়তো, বাবাদের কথা বাদ দে তো। চল টিফিন খাই। আজ তুই কি এনেছিস ?
2 comments:
Oh the innocence of children...
অপূর্ব। আমি অনেকসময় ভাবি, এই ঘুষখোর জোচ্চোরের দল বাড়িতে গিয়ে নিজের ছেলেমেয়েকে কি শেখায়। চিন্তাটা আপনি লেখায় ধরেছেন অত্যন্ত সুন্দর ভাবে। খুব ভাল লাগল পড়ে।
Post a Comment