----Coolকাতা'তে প্রকাশিত ( @ maamatimanush.tv )----
প্রথম কিস্তি ঃ
মহালয়ার ব্যাপার-স্যাপার
মহালয়া। সলিড ভাবে ডেভেলপ করতে হবে। এক্কেবারে মার কাটারি লেভেলে জেগে উঠবো। তবেই না বাঙালি, তবেই না সোনার বাংলা। ছেলেবেলায় মনে আছে দাদু মহালয়ার আগের রাতে মন দিয়ে জোগাড় করে রাখতেনএই কটা জিনিষ:
- টর্চ ( অন্ধকার থাকতে উঠতে হবে, সুইচ বোর্ড পর্যন্ত পৌঁছোবার জন্যে)
- রেডিও
- অ্যালার্ম ঘড়ি
- এক প্যাকেট চানাচুর
- চায়ের ব্যবস্থা
ভেবে দেখলাম মোবাইল ফোনে অ্যালার্ম রয়েছে। রেডিও’ও রয়েছে। এমনকি তাতে টর্চও মজুত। তোফা। চেক লিস্ট সহজ হয়ে এলো। অফিস ফেরতা এক প্যাকেট চানাচুর, গরম জলের ফ্লাস্ক আর টি ব্যাগ্স নিয়ে এলাম। ভোর বেলা বউকে চা বানাতে বললে আমার কোপ্তা হয়ে যাওয়ার গভীর সম্ভাবনা রয়েছে।
রাত্রি বেলা চাট্টি কাতলা ঝোল ভাত খেয়ে ফুরফুরে মেজাজে নিদ্রা গেলাম।
ব্যাটাচ্ছেলে ইমবেসাইল মোবাইল; অ্যালার্ম বেবাক ধোঁকা মেরে দিলে! এ-এম পি-এম’য়ে গড়বড় ঘটে যাওয়ায় ঘুম ভাঙল বেলার সাড়ে সাতটায়; বউ’য়ের ধমকানি তে। ধড়ফড় করে উঠে দেখি বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ইতিমধ্যেই বাংলা তোলপাড় করে সরে পড়েছেন। বাইরে চড়া রোদ, অফিস যাওয়ার সময় চলে এসেছে।
বউ আউট অফ সিমপ্যাথি এক কাপ চা, এক বাটি চানাচুর আর এম-পি-থ্রি প্লেয়ারে মহালয়ার রেকর্ডিং অফার করলে। গর্জে উঠলাম, জান থাকতে এম-পি থ্রিতে বাসি মহিষাসুরমর্দিনী শুনে জাত খোয়াবো না। নেভার। লাল গামছা উড়িয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে দুড়দাড় করে বাথরুম অভিমুখে এগিয়ে গেলাম।
~~~
দ্বিতীয় কিস্তি ঃ
তৃতীয়ার ব্যাপার-স্যাপার
পুজো ইজ নিয়ার। কত কিছু বাকি রয়ে গেল। একটা সবুজ প্রিন্টের হাফ পাঞ্জাবি কিনতে গড়িয়াহাট যাব যাব করেও সময় বের করতে পারলাম না। বউয়ের শাড়ি আর বসের ফাইলের পেছন পেছন ছুটেই জিন্দেগী কড়কে গেল।
সব চেয়ে সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার হচ্ছে যে খান চারেক পুজো সংখ্যা কিনে ফেলেছি কিন্তু একটাও ঠিক করে পড়া হল না। দুর্গাপুজো থেকে অঞ্জলি বাদ গেলে চলতে পারে কিন্তু শারদীয়া উইদাউট পুজো সংখ্যা ? ক্যালামিটি। এ যে অফসাইড ছাড়া সৌরভ।
বস বললে অফিসের কি এক বিশেষ পার্টি আছে সন্ধ্যাবেলা; যেতেই হবে।
বউ বললে সন্ধ্যাবেলা তার বিশেষ দরকার আছে নিউ মার্কেটে; যেতেই হবে।
বস কে বললাম যে বউয়ের বিশেষ দরকার; সন্ধ্যের পার্টিতে যাওয়া সম্ভব নয়।
বউ কে বললাম যে বিশেষ অফিস পার্টি রয়েছে, অতএব সন্ধ্যে বেলা নিউ মার্কেট যাওয়া অসম্ভব।
ঠিক ছটা নাগাদ অফিস থেকে দুটো পুজো সংখ্যা বগল দাবা করে বেরিয়ে পড়লাম। ট্যাক্সি ধরে সোজা বাবু-ঘাট। গঙ্গার ধারে লাগোয়া পার্কে একটা জুতসই বেঞ্চি দেখে বসে পড়লাম। মাথার ওপরেই ঝকঝকে সহৃদয় ল্যাম্প-পোস্ট। চা-ওয়ালাকে একটা লেবু চা দিতে বলে; গঙ্গার ফিনফিনে হাওয়ায় গা এলিয়ে পড়তে শুরু করলাম পুজোবার্ষিকী শুকতারা।
তৃতীয় কিস্তি ঃ
পঞ্চমীর ব্যাপার-স্যাপার
টেরিফিক ব্যাপার। কোলকাতা শহরের পলিউশন বুকের মধ্যে যতই কার্বন ঝড় তুলুক, মনের মধ্যে যে অনবরত শিউলি ঝরে চলেছে। পাঁজরের আনাচে কানাচে শরতের মিঠে রোদ্দুর। ট্যাগোরের ট্র্যাডিশন বয়ে চলা ইজ নট চাইল্ড্জ প্লে। মেহেনত লাগে।
পুজোর মরসুমে কেমন করে অফিসে ফাইল ঠেলবো তা বুঝে উঠতে পারছি না। পাঁচ দিন পরেই সপ্তমী। ভাবতেই তো তলপেটে চকোলেট বোমা ফাটছে। বস চাইছে মান্থলি স্টেটমেন্ট আর আমি মনে মনে কষছি অষ্টমীর ডিনার প্ল্যান। বস জানতে চাইলে সেল্স ট্রেন্ড কি বলছে ? আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল ম্যাডক্স স্কোয়ার। সহকর্মী জানতে চাইলেন বিজয়া ট্রেডার্স’য়ের ফাইলটা রেডি আছে কি না, আমি বলে ফেললাম “ কোলাকুলি”।
বস আমার অবস্থা দেখে একটু চিন্তিত হলেন। ভাবলেন মাগনায় মদ খাইয়ে চাঙ্গা করে তুললেন। অফিস শেষ হওয়ার মুখে বললেন “ মুখার্জি, লেট্স গো ফর এ ড্রিংক। ইউ উইল এন্জয়”
আমি বললাম “ বেশ তো স্যার। লেট্স”।
পার্ক স্ট্রিটের মনোরম পানশালায় নিয়ে গেলেন স্নেহময় বস। বেয়াড়া কে ডেকে হুকুম করলেন-
“ ওয়ান হুইস্কি ফর মি প্লিজ। আর তুমি কি নেবে মুখার্জি ?”
আমি লাগামহীন ভাবে বলে ফেললাম ; “ অনলি এক গেলাস সিদ্ধি ফর মি প্লিজ, অ্যালং উইথ ফিউ নারকোল নাড়ুজ্ অ্যান্ড নিম্কি। থ্যাঙ্ক ইউ”
তাবড় একটা বিষম এসে বস’কে এক্কেবারে পর্যুদস্ত করে দিলে। এদিকে আমি পড়ে রইলাম উইথ মাই টেইল ইন কাউ ডাং; অর্থাৎ ল্যাজে গোবরে।
~~~
সপ্তমীর ব্যাপার-স্যাপার
পুজো শুরু। ঠিক যেমন ভাবে শুরু হওয়া উচিত ছিল। পাড়ার মণ্ডপ এক ধারে শ্রীকান্ত আচার্য আর অন্য ধারে বলিউডি লে হালুয়া ফায়ার করে চলেছে।মাঝে সাঝে ঢাকের ইন্টারাপ্শন। সকালের এই সময় আমার পুজো কমিটির হয়ে ভলেন্টিয়ারগিরি করার কথা; আদ্দির পাঞ্জাবি পরে। কিন্তু আমি বসে ঘরে; পায়জামা আর স্যান্ডো গেঞ্জিতে। মন সেন্টিমেন্টে ভিজে জ্যাবজ্যাবে হয়ে রয়েছে। সকাল থেকে মনের দুঃখে তিন কাপ চা খেয়ে ফেলেছি। ফুলকো লুচি মিইয়ে গেল, আলুর দম আলগা পড়ে রইলে কিন্তু মুখে তুলতে ইচ্ছে হল না। বিস্বাদ। ক্ষমতা থাকলে কবিতা লিখে ফেলতে পারতাম এমন দুঃখ। ইয়ে পুজো ঝুটা হ্যায়।
আসলে ছেলেবেলার বন্ধু-বান্দারা সক্কলে হাওয়া। মাকু আমেরিকায়, পাপাই ব্যাঙ্গালোরে, চিন্টু শিমলায় আর আমি আনন্দবাজার হাতে ব্যালকনিতে।
বন্ধুরা নেই,
বউ বিউটি পার্লারে,
বাঁদুরে আদর অফার করার দাদু-দিদারা সরে পরেছেন,
রিহার্সালে থাকার সময় নেই বলে পাড়ার থিয়েটারে রোল নেই,
ভুঁড়ির পাল্লায় পড়ে ধুনুচি নাচার দম নেই –
কিসের পুজো স্যার ? ছেলেবেলার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাটাচ্ছেলে পুজোর ছুটিও অক্কা পেলে।
ভাইপোকে ডেকে বললাম ওর ক্যাপ বন্দুকটা একবার দিতে, ডেঁপো বলে গেলে তোমার এখন নিউজ চ্যানেল দেখার বয়েস। রাস্কেল ছেলে কোথাকার।
বউকে বললাম, লেট্স গো ফর আরসালান লাঞ্চ। সে বললে তোমার কোলেস্টেরল লেভেল জানো ? দুপুরে স্রেফ চিকেন স্টু আর ভাত খাবে। বোঝো কি ক্যালামিটি।
বিসর্জনে সলিড নাচবো বলে চিলেকোঠায় একটা দুটো স্টেপ ঝালিয়ে নিচ্ছিলাম; বড়দা দেখতে পেয়ে এই বয়সে আমার কান মলে বললে যে দশমীর আগেই হয়ত আমায় রাঁচি পাঠাতে হবে।
দুঃখের ভারে বিছানায় সপাট শুয়ে বাঁটুল দি গ্রেট পড়ছিলাম; এমন সময় টের পেলাম মা’য়ের গন্ধ। মা কখন আমার পাশে এসে বসেছে। বেচারি রোগগ্রস্ত হয়ে প্রায় গোটা দিন বিছানায় পড়ে থাকেন; আজ আচমকা বিছানা ছেড়ে উঠে এসেছেন দেখে ঘাবড়ে গেলাম।
- “ মা তুমি উঠলে কেন ? “
- “ শুনলাম তুই এখনও পাড়ার পুজো মণ্ডপে না গিয়ে ঘরে বসে আছিস। লুচি না খেয়ে ফেলে রেখেছিস। মনে হল তোর হয়ত মন খারাপ। তাই ভাবলাম তোর মাথায় হাত বুলিয়ে দি। ছেলেবেলার তোর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলে তোর মন ভালো হয়ে যেত না ? আর একটু পরে যেন দেখি তুই নতুন জামা পরে পুজো মণ্ডপের দিকে রওনা দিয়েছিস। কেমন ? “
কুলকুল শব্দে বুকে আনন্দ বয়ে চলে; মায়ের গন্ধের সাথেই ছেলেবেলা মিশে আছে।
~~~
~~~
নবমীর ব্যাপার-স্যাপার
বাবলা মামা আমেরিকা থেকে ফিরেছে। ঠিক ফেরেনি। মাস দুয়েকের ছুটিতে ঘুরতে এসেছে নিজের পুরনো পাড়া। গ্রাজুয়েশনের পরসাঙ্ঘাতিক এক স্কলারশিপ নিয়ে দেশ ছাড়া হয়েছিল, তারপর কুড়িটি বছর কোনও পাত্তা নেই। বাপ-মা সমেত ওদেশে গেঁড়ে বসেছে বাবলামামা। মেম বিয়ে করে ওয়াশিংটনে চমৎকার সংসার করছে। তিনি এখন সে দেশের এক তাবড় প্রফেসর। তো এহেন মামা এতদিন পরপুজোর সময় পুরনো পাড়ায় ফিরেছে; এটা একটা মস্ত বুলেটিন তো বটেই।
নবমীর বিকেলে দেখি বাবলামামা পাড়ার মণ্ডপ চত্বরে উদয় হয়েছেন। আমরা সবে খিচুড়ি ভোগ বিতরণের জন্যে প্রস্তুত হচ্ছিলাম। ইয়া বড়নৌকা আকারের লোহার কড়াই খিচুড়িতে ভরাট। আর সঙ্গে এলুমিনিয়ামের দামড়া সব বালতি ভরা লাবড়া। জনতা লাইন দিয়ে এগিয়েআসবে আর আমরা যারা ভলেন্টিয়ার; তাঁদের মধ্যে থেকে একজন দেবে শাল পাতার দোনা, একজন ঢালবে খিচুড়ি আর অন্য জন সার্ভকরবে লাবড়া। বাবলামামাকে দেখে তুরন্ত অ্যালার্ট হয়ে গেলাম। শুনেছি বাবলামামা ডলারে চাঁদা দিয়ে পুজো কমিটিকে লাল করে দেবেএমন একটা সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া অমন মহাপুরুষ , ওয়াশিংটন নিবাসী বলে কথা; ইজ্জতে ত্রুটি হলে চলবে না।
বাবলা মামা ধারে কাছে আসতেই মনে হল যে সাহেবি মামাকে সাহেবি কেতায় খিচুড়ি অফার করতে হয়।
বললাম – “ হাউ ডু ইউ ডু বাবলা মামা। আই অ্যাম পচা। ব্রাদার অফ বাপ্টু ফ্রম দক্ষিণ পাড়া। দ্যাট বাপ্টু যাকে ইউ টট্ অ্যালজেব্রাবিফোর মাধ্যমিক। ওয়েলকাম টু আওয়ার মণ্ডপ স্যার...আই মিন বাবলা মামা। উড ইউ কেয়ার ফর সাম ফ্যান্টাস্টিক খিচুড়ি অ্যালংউইথ এ-ক্লাস লাবড়া ? প্লিজ ?”
বাবলা মামা আমায় কয়েক সেকেন্ড জরীপ করলেন। তারপর হুড়ুম স্বরে বললেন ; “ব্যাটাচ্ছেলে পচা, তোকে ছেলেবেলায় কত চাবকেছিলাম ঘ্যান ঘ্যান করে কাঁদতিস বলে, আর তুই ব্যাটা এখন আমায় নামতার সুরে নিজের পরিচয় দিচ্ছিস ? তাও আবার ইংরেজিতে ?পেছনে এমন হুড়কো দেব যে ইংরেজি চটকে গণেশের বাঁ দাঁত হয়ে যাবে”
আমি তো ভেবড়ে চ।
“ আর তুই খিচুড়ি বিতরণ করবি ?” , বাবলা মামার গম্ভীর প্রশ্ন ।
আমতা আমতা করে বলতে হল, “ ইয়েস। মানে হ্যাঁ। আমি, এই বিশে আর ওই হুলোদা; এই তিনজনে মিনে বিতরণ করব”
“ রাবিশ”, মামা গর্জে উঠলেন, “ খিচুড়ি বিতরণ করবি অথচ মেইন আইটেম টাই তোদের কাছে নেই ?”
“ মেইন আইটেম?”। আমি তখন বেবাক চমকে গেছি। “ আইটেম তো সব আছে। খিচুড়ি, লাবড়া রেডি। শাল পাতা রেডি। হাতাওআছে দেওয়ার জন্যে। আর তো কিছু লাগবে না ?”
মামা কাঁধে হাত রাখলেন “ ইস্টুপিডের দল, ট্র্যাডিশনকে যে তোরা গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়েছিস। তোরা করবি পরিবেশন ? তোদের হাতেআমার ছোটবেলার পাড়ার পুজো ? আরে তোদের পাল্লায় পড়ে কান্ট্রি ইজ গোয়িং টু ধাপার মাঠ বাবারা। ওরে তোরা এটাও শিখলি নাযে কোমরে গামছা না বেঁধে; পরিবেশনের কাজ করা পাপ ? অন্যায়? কোমরে গামছা বাঁধা না থাকলে তোর পরিবেশনে কমিটমেন্ট এবংপারফেকশন থাকতে পারে না, পারে না, পারে না”
পারফেকশন বাবলা মামা দেখালেন। ভালোই দেখালেন। কোথা থেকে একটা গামছা জোগাড় করে আনলেন। তারপর তা নিজের কোমরেবেঁধে , আমায় সাইড করে নিজেই দাঁড়ালেন খিচুড়ি পরিবেশন করতে। চোস্ত গ্রিন কার্ড হোল্ডার বাবলা মামা টানা তিন ঘণ্টা ধরে খিচুড়িপরিবেশন করে চললেন। শেষে যাওয়ার আগে আমায় ডেকে বলে গেলেন , “ জীবনের সব ব্যাপারে ল্যাদ খাওয়ানো কাজকর্ম চলতে পারে,কিন্তু হোয়েন ইট কাম্স টু দুর্গা পুজো- নাথিং লেস দ্যান পারফেকশন উইল ডু ফর এ বেঙ্গলি। এই অ্যাডভাইসটা কোনোদিন ভুলিসনি।কেমন ?”
~~~
বিজয়া দশমীর ব্যাপার-স্যাপার
ডিয়ার দুর্গাদি,
আই অ্যাম সো সরি। তোমায় অত নির্দয় ভাবে গঙ্গায় ভাসিয়ে এলাম। কিন্তু কি করব বল। কাস্টম। ট্র্যাডিশন। এই যে এত সিদ্ধি খেয়েআউট হয়েছি, তা তো তোমায় ভাসিয়ে দেওয়ার দুঃখেই । বাড়িতে একটা পুরনো ইনল্যান্ড লেটার পড়েছিল, ভাবলাম তোমায় দু লাইনলিখি।
দিল সে বলছি দুর্গাদি, তোমায় আমি ভারি রেসপেক্ট করি আর নিজের দিদির মত ভালোবাসি। সবাই মা মা করে বটে, কিন্তু তোমায়আমার একদম দিদি-দিদি মনে হয় মাইরি। তোমার দেখে আমার সেজদির কথা খুব মনে পড়ে। সেজদি আমায় দুপুরবেলা লুকিয়ে আমেরআচার খাওয়াতে। কি টেস্ট ছিল। সে যাক। মে সেজদির সোল রেস্ট ইন পিস।
যা বলছিলাম। তোমায় আমি কমপ্লিট দিদির মত দেখি। গনা, কেতো, সরু আর লক্ষ্মী কে আমি একদম আপন ভাগ্নে-ভাগ্নির মত স্নেহকরি। রিয়েলি। গা ছুঁয়ে বলতে পারি। ওসব রিলিজিয়াস বারফট্টাই আর দেবতা-গিরি রাখ তো। আরে তোমার ভক্তরা তোমায় স্রেফ ভয়পায়; অঞ্জলি দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যায়; ভাবে মা দুর্গা খুশ হুয়া। কিন্তু এই বান্দা যে তোমায় আপন ভাইয়ের মত ভালোবাসে; সেটা কিমাচ মোর ভ্যালুয়েব্ল নয় ? বল, দুর্গাদি ? বল ?
একটা কথা বল তো দিদি, চারটে দিনের জন্যে আমদের সঙ্গে কাটিয়ে যাও, তাও সর্বক্ষণ জামাইবাবু তোমায় ফলো করে কেন ? আমিকিন্তু এসব বাতিকগ্রস্ত হাজব্যান্ডদের বিলকুল সহ্য করতে পারি না। নেহাত নিজের জামাইবাবু তাই। যাক। বেশি নিন্দে করলে তুমি আবারমন খারাপ করবে।
এত কষ্ট হয় না দুর্গাদি, তুমি চলে গেলে। এই চারদিন তোমার পাল্লায় পড়ে কি চমৎকার কাটে মাইরি। কাল থেকে আবার অফিসে বস্আর বাড়িতে বউয়ের খপ্পরে। কান্না চলে আসছে জানো।
যাক। আমার কথা ভেবে মন খারাপ করো না তুমি দুর্গাদিদিভাই। সেজদির সঙ্গে দেখা হলে তাঁকে বোলো যে তার জন্যে অফ কোর্সআমার মাঝে মধ্যে মন কেমন করে।
সাবধানে যেও। আর হ্যাঁ, আসছে বছর আবার হবে।
ইতি
তোমার পচা
1 comment:
Beautiful!!!
Post a Comment