সমুদ্রের
ঠাণ্ডা হাওয়া মন্দ্ররাচের মুখে ঝাঁপটা মেরে যাচ্ছিল বারবার। হাওয়ায় হালকা শীতের
মিশেল। আলোয়ানটা ভালো করে গায়ের সঙ্গে লেপটে নিলেন তিনি। ঢেউয়ের দাপট দেখে ঠাহর
করলেন যে জোয়ার এসেছে। সূর্য উঠতে আর ঘণ্টাখানেকের বেশি দেরি নেই তবে। তবে এখনও
চারপাশে চাপ চাপ অন্ধকার। ঢেউয়ের ফেনার সফেদ ছাড়া আর নজরে কিছুই পড়ে না।
দুশ্চিন্তা সামান্য ছিলই মন্দ্ররাচের মনে। সকলের এতক্ষণে চলে আসার কথা ছিল। কিন্তু
কেউই আসেনি। তবে কি পরিকল্পনা মুলতুবি হল?মেঘ-কালো নিকষ আকাশের দিকে চেয়ে
আকাশ-কুসুম ভাবনায় ঋজু হয়ে আসছিলেন মন্দ্ররাচ।
“মন্দ্র,কতক্ষণ
হল এসেছো? দুঃখিত, আমার দেরী হল। আসলে রাস্তার যা অবস্থা তা তো জানোই” হম্মদ্ম’র
ডাকে সম্বিত ফিরে পেলেন মন্দ্ররাচ, আলিঙ্গন করলেন তাকে। দু’জনে মিলে ঢেউ বাঁচিয়ে
বালির ওপর বসলেন।
“কী
যে বলবো, ঠাহর করতে পারছি না হে হম্মদ্ম। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে হয়তো ভুল করছি। যার
যন্ত্র ঘিরে এতসব পরিকল্পনা, সেই উটননি ব্যাটারই সন্দেহ দূর হচ্ছে না”, ঢেউয়ের
দাপুটে শব্দ ছাপিয়ে মন্দ্রারাচের দীর্ঘশ্বাস হম্মদ্মের কানে এলো।
“উটননির
বয়স অল্প, তিরিশও নয় বোধ হয়, আমাদের মত চল্লিশে ভোঁতা হওয়া তেতো বয়স নয় ওর”, নম্র
বিষণ্ণতা কে আড়াল করার চেষ্টায় হাসলেন হম্মদ্ম, “তার মাথায় বিস্তর চিন্তা আসবে,
সেটাই তো স্বাভাবিক। তা ছাড়া, সে পরম জ্ঞানীও বটে। তবে অর্জিত জ্ঞানের পরিধি
মানুষকে অজ্ঞানতার মতই কখনও কখনও তীব্র ভাবে বেঁধে ফেলতে পারে মন্দ্র”।