গান এমন ভাবে কানে
এসে পড়বে যেন ধোঁয়া ওঠা ধবধবে সাদা ভাতের ঢিপির বুকে টপটপ করে পড়া গলা মাখনের
ফোঁটা। রাত জমাট বেঁধে আসবে। আধো জেগে থাকা ছলছলে স্বপ্নের জেলির মত বুকে ছড়িয়ে
যাবে।
জানালার একটা পাল্লা
আধবোজা চোখের সাথে তাল মিলিয়ে আধ-খোলা। ডিসেম্বরি কলকাতার হাওয়ার মৃদু মসৃণ
যাতায়াত। গায়ে জড়ানো চাদর, বুকে জড়ানো আধখোলা বই। দারোয়ানের রেডিওর বুড়ি ছুঁয়ে
হেমন্তবাবুর বুকে ঢেলে যাওয়া ফুসমন্তর।
খোয়াব চুন রহি হ্যায়
রাত, বেকরার হ্যায়, তুমহারা ইন্তেজার হ্যায়, তুম পুকার লো...
ভদ্রলোকের কণ্ঠে, আহা। যেন মাখন
এসপার-ওসপার করা ছুরি।
হেমন্তর সুরে কানে,
ভেজা মখমলে একটা স্পার্ক সিগন্যাল বয়ে নিয়ে চলে যাবে হৃদয়ে, এরপর প্রথমে একটা ঘুম-ঘুম অসাড় স্নেহ-অনুভূতি
ছড়িয়ে যাবে শরীর জুড়ে, মন ভারী হয়ে আসবে। দুঃখের রঙ কচি কলাপাতা সবুজ হয়ে আসবে,
আনন্দগুলো হয়ে যাবে ফ্যাঁকাসে লাল। ঠোঁটের অস্ফুট থরথরটুকু খোদ নিজেকেও টের না
পেতে দিয়ে রিমঝিমে লেভিটেশন।
“দিল বহেল তো জায়েগা ইস খয়াল সে, হাল মিল গয়া তুমহারা, অপনে
হাল সে...”।
নিজের বেসুর হেমন্তর
সাথে মিলে ভালোবাসার অ্যাসেম্বলি লাইন সম্পূর্ণ হবে। স্মৃতি গুটিসুটি পায়ের কাছে
এসে বসবে, সস্নেহে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া। ততক্ষণে হেমন্তবাবু জাল গুটিয়ে
আনছেন।
“রাত ইয়ে করার কি, বেকরার হ্যায়...তুমহারা ইন্তেজার হ্যায়”।
মন থিতিয়ে আসে।
সেডিমেন্ট বলতে চিনচিনে ব্যাথাওয়ালা ভালো লাগা।
3 comments:
তোমার উপমার ক্ষমতা ঈর্ষণীয়, তন্ময়।
আমার প্রিয়তম গান... বেড়ে লাগল হে!
পুরো লেখাটা তো পরে, প্রথম লাইনটাই তো আমায় বিগলিত করে দিল, ঠিক যেমন করে মহাশিবের গান শুনে বিষ্ণু আপনহারা হয়ে তন্ময় হয়ে গিয়েছিলেন।
Post a Comment