অজিতবাবু নিয়মিত
গঙ্গার এ ধারটায় এসে দাঁড়ান। প্রতিদিন অন্তত ঘণ্টা খানেক। বসেন না। দাঁড়িয়ে থাকেন।
মাথায় রোদ থাকুক না থাকুক, ছাতাটি মেলা থাকে। লোক-চক্ষুর ধার রোদের চেয়ে তো কম নয়।
অজিতবাবু নিজের মধ্যে গুটিয়ে আসেন।
রোদের তেজ যেমনই
হোক, দুপুরের গঙ্গার আমেজ অন্য। যারা নিয়মিত আসে না, তারা টের পায় না। ঝিরঝিরে
হাওয়া, তার সাথে নদীর মৃদু ছলছল আর গাছের পাতার শিরশিরানি শব্দ; শরীরে আরাম লাগে
অজিতবাবুর। লাল শান বাঁধানো ঘাটে কাদা মাটি আর ছপছপ জল। অজিতবাবুর দৃষ্টি ঘাটের
সিঁড়িগুলো বেয়ে নেমে এক্কেবারে মাঝ-নদীতে চলে যায়, তারপর আবার ফিরে আসে। এমন ভাবে
বারবার, দৃষ্টির যাওয়া আসা। মাঝ-দুপুরে। প্রায় রোজ। নদীর এ টুকরোটুকু অজিতবাবুর বাড়ির
বারান্দার মতই আন্তরিক ভাবে চেনেন।
নদীর দিকে তাকিয়ে
থাকতে থাকতে অকারণেই অজিতবাবুর বুক ছ্যাঁত করে ওঠে। মাঝেমাঝেই। কেঁপে ওঠেন
অজিতবাবু। মাঝে মাঝেই।
যদি সে উঠে আসে?
আচমকা? গত সতেরো বছরে আসেনি ঠিকই। কিন্তু তবু, আজ হঠাৎ যদি খোকা জল ভেঙ্গে উঠে
আসে?
(ছবি ক্রেডিট - স্বেতা)
1 comment:
এই টুক্রো লেখাটা (লিপিকা বলা যায় কি)অসাধারণ লাগল। 'লোকচক্ষুর ধার---' লাইনটা can be used as a quotation.
ভরদুপুর সময়টা ভূত ভর করার পক্ষে আদর্শ-ই বটে।
Post a Comment