অ্যাটলেটিকো ডি কোলকাতার আই-এস-এল জয় টিভিতে দেখার পর যথেষ্ট ফুর্তি করলাম।
মৃদু লাফালাফি সহ। আনন্দ। হাই ফাইভ। থামস আপের ছিপি খোলা।
তক্ষুনি। মনে হল।
ক্রিকেট তো আমাদের ধর্ম। ক্রিকেট যদি সূর্য হয়, ভারতীয় ফুটবল তো তাঁর তুলনায়
ডেসিমাল। ফুটবল কেন?
নিজেকে বললাম- পৃথিবী ক্রিকেটের আগে ফুটবলকে মানে। মারাদোনা পেলেকে ক’জন চেনে
আর গাওস্কর-বিশ্বনাথকে ক’জন চেনে? শুধু কপিলে-বেদীতে আটকে থাকবো কেন? রইবো না বদ্ধ
ঘরে, দেখবো এবার জগতটাকে।
জগত চিনে কী করবো?
গ্লোবালাইজেশনের যুগ। দ্রাবিড় যেমন আমার হিরো, তেমনই আমার হিরো মেসি।
আমাদের মেহতাব-নবীদের সাথে ওদের তফাৎটুকু বুঝে নেওয়া। সমঝে নেওয়া।
তফাৎ বুঝে কী হবে?
তফাৎটুকু জানলে তবেই না তফাৎটুকু মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা যাবে।
তফাৎ মিটে গেলে কী হবে?
ফুটবলের মত অসামান্য খেলার জগতেও আমাদের একটা হিল্লে হয়ে যাবে। বাজারে
অর্থনীতির যুগ খেলাতেও। অতঃপর ফুটবলকে ভারতীয় মার্কেট খাবে। টিআরপি বাড়বে। আরও
ইনভেস্টমেন্ট। আর জেল্লা। অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতা বা কেরল ব্লাস্টার্সয়ের মত টিমের
সাফল্যের দীপ্তি তখন আর শুধু ভারতবর্ষ নয়, পৃথিবীর সমস্ত কোণে ছড়িয়ে পড়বে। আমরা
আবেগে ভেসে যাবো।
অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতা বা কেরল ব্লাস্টার্সয়ের সাফল্যের গপ্প পৃথিবীময় ছড়িয়ে
পড়লে আমরা আবেগে ভেসে যাবো কেন?
বাঃ রে বাঃ। আবেগে ভাসবো না? অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতা বা কেরল ব্লাস্টার্সয়ের
সাফল্য মানে তো সৌরভ ও সচিনের সাফল্য – সে যে আমাদেরই সাফল্য। সে যে আমাদেরই গর্ব।
সেটা ভাবতেই যে বুকের ভেতর থেকে টেনিস বলের দল গল বেয়ে উঠে আসে। চোখ ছলছল। সচিন
সৌরভের সাফল্য বলে কথা।
তক্ষুনি বুকের ভেতর ছ্যাঁত করে উঠলো। আমার হৃদয়ে আই-এস-এল যে আগুন ছড়িয়েছে, তার
দেশলাই হল সৌরভ ও কেরোসিন হল সচিন। ইন দি এন্ড ক্রিকেট ইজ দি উইনার। দীর্ঘশ্বাস।
সেই অনেকদিন আগে শোনা গল্পটা। এক আলসে ভদ্রলোক-ক দিনের বেলা পুকুরপাড়ে গা
এলিয়ে বসেছিলেন। ঝিমচ্ছিলেন। মুখে আলগা তৃপ্ত হাসিটি। কর্মঠ ব্যক্তি-খ তখন পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। ক’য়ের
আলসেমি দেখে খ বিরক্ত হয়ে হাঁক পাড়লে- “হ্যাঁ ভাই ক, এমন আলসেমি না করে কিছু কাজ করছ
না কেন?”
ক যেন আকাশ থেকে পড়লে। সে জিজ্ঞেস করলে “কাজ করলে কী হবে ভাই খ?”
- কেন? উপার্জন হবে।
- উপার্জন করে কী হবে খ?
- উপার্জন করলে তবেই না সঞ্চয় হবে
ভাই ক।
- সঞ্চয় করলে কী হবে?
- ভবিষ্যতের ব্যাপারে আর দুশ্চিন্তা
থাকবে না।
- ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা না থাকলে কী
হবে?
- উফফ। বড় বাজে প্রশ্ন কর।
দুশ্চিন্তা না থাকলে দিনভর নিশ্চিন্তে সুখে কাটাতে পারবে।
- নিশ্চিন্তে সুখে দিন কি ভাবে
কাটানো! সেটা কিরকম?
- মানে মনে চাপ কম থাকবে। দিনভর নিশ্চিন্তে
গা এলিয়ে বসে থাকতে পারবে।
- তাহলে আমি এখন কী করছি ভাই খ?
খ-ভদ্রলোক তো থ।
তেমনই। প্রায় তেমনই।
1 comment:
Darun!!! Ekdom khanti kotha!!
Post a Comment