Friday, May 8, 2015

সলমানি

– জেল হয়েছে। পাঁচ বছর। জব্বর জাস্টিস। কী বলেন ফেলুবাবু?
– লাল মোহনে ভালো, মগনে নয়।তেমনই জাস্টিস ব্যাপারটা জেলে ভালো, সেলেব-প্যারোলে নয়। দ্যাখা যাক।
-খুড়ো, ফুটপাথে শুয়ে থাকাটা অন্যায়; তাই না?
– আলবৎ! হাতে দামী গাড়ির স্টিয়ারিং আর পেটে দামী স্কচ থাকলে বুঝতিস ন্যাপলা; ফুটপাথে হিউমান স্পীড ব্রেকার কি বিরক্তিকর।
– এমন ম্যাদা মেরে আছেন কেন মশাই?
– মিরাকিউরল ফেল মেরে গেল অবিনাশবাবু।
– সেই আজব বড়ি? কেন?
– মিরাকিউরল মারণ রোগ সারাতে পারে। কিন্তু চেষ্টা করে দেখলাম; মাতালের ফুটপাথ প্রেম আর অন্ধ ভক্তের উন্মাদ ভক্তি ঘোচাতে পারে না।
গাড়ী?
রাস্তায় চালাবো?
নেক্সট ইজ হোয়াট?
জামায় বোতাম আঁটবো?
‘নায়ক’ সিনেমায় মদ্যপ অরিন্দম বলেছিলেনঃ “আই উইল গো টু দ্য টপ। টু দ্য টপ। টু দ্য টপ”।
**
কয়েক পেগে ভেসে তিনি বললেনঃ “আই উইল গো টু দ্য ফুটপাথ। টু দ্য ফুটপাথ। টু দ্য ফুটপাথ।”
“তুমি জানো এমন দামী স্কচ দুনিয়ায় খুব বেশি নেই?”, মলসন খানের পা টলছিল, কিন্তু কথা থামছিল না,”তুমি জানো এর দু’ফোঁটা পাথরে পড়লে পাথরে প্রাণ সঞ্চার হয়? জানো কি”
এত রাত্রে রাস্তায় মলসনের কথা শোনার জন্য কেউ ছিলেন না। তবু মলসন বলে যাচ্ছিলেন; তার বলতে ভালো লাগছিলো। লোকের ভিড়ে কথা বলতে তার এতটা ভালো লাগে না, বলার সুযোগটুকুও পান না।
মলসনের মাথাটা এতটাই ঝিমঝিম করছিল যে সোজা চুমুক দিয়েছিলেন বোতলে। হঠাৎ কি খেয়াল হল বোতল থেকে কয়েক ফোঁটা ছড়িয়ে দিলেন ফুটপাথে। আচমকা মনে হল যেন ফুটপাথটা নড়ে উঠলো। কেঁপে উঠলেন মলসন। মনে হল আজ বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে বোতল হাতে।
বোতলটা মলসন ছুঁড়ে ফেলার আগে ফুটপাথটা কারপেটের মত ভেসে উঠলে, মলসন তখন টলমলে। ফুটপাথের কারপেটটা তারপর ঝটাপট ভাঁজ হয়ে একটা পুঁটুলি হয়ে গেল। পুঁটুলির ভেতরে মলসনের দম বন্ধ হয়ে আসছিল; নিজের উন্মত্ত ক্লস্ট্রোফোবিয়াকে গাল পাড়তে ইচ্ছে হল তার। ঘেমে নেয়ে অস্থির হয়ে পড়ছিলেন মলসন; মনে হল পরনের জামাটাকে খুলে ফেলা দরকার। তখনই মলসন টের পেলেন, তার পরনে জামা তো নেই; কখনও থাকেনা। সানগ্লাস আর সাজানো বাইসেপ-ট্রাইসেপগুলো খুলতে পারলেন না মলসন; জ্ঞান হারাবার আগে শুধু নিজের চুলটা আঙুল চালিয়ে ঠিক করে নিলেন তিনি।

1 comment:

malabika said...

লেখাটা এত সুখপাঠ্য হয়েছে যে শুধু বাহারে বলে মন ভরে না। এরকম আরো লেখা চাই, রোজকার খবরের উপর।