-কতটা নৃশংস হলে মানুষ কুকুর খেতে পারে গো?
-যতটা নৃশংস হলে ইলিশ বা পাঁঠা কেটে খাওয়া যায়, ততটা হলেই চলবে।
-পাঁঠা কাটা আর কুকুর কাটা এক জিনিষ গো?
-একই তো। প্রোভাইডেড কাটার অবজেক্টিভ যদি একই হয়; তাদের মাংস খাওয়া।
-কুকুরের মাংস তোমার পাতে দিলে খেতে পারবে বুঝি?
-বায়াস্ড প্রশ্ন করছ নীলা। যার কাছে কুকুরের মাংস সুস্বাদু, সেও হয়তো পাঁঠার মাংসে ঘেন্না পেতে পারে। অথচ পাঁঠা ভক্ত আর কুকুরের মাংস বিলাসী দু'জনেই মোজার্ট রসিক হতে পারে। দু'জনেই সমান ভাবে সভ্য এবং সমান ভাবে অসভ্য।
-ছিঃ, তুমি আমার বর হয়ে যে কী করে এমন ব্রুটের মত কথা বলতে পারো মাঝে মাঝে। এটা জেনেও যে আমি কুকুর অন্ত প্রাণ। এরপর কবে বলবে আমায় কেটে ফেললেও সেটা মাগুর মাছ কাটার চেয়ে বড় কোন অপরাধ হবে না।
-প্রোভাইডেড যদি তোমাকেও ঝোলে ফেলে খাওয়ার তাল করি।
-খেতে পারবে নাকি?
-প্র্যাকটিসে কী না হয়।
-তুমি মানুষ খাওয়ার প্র্যাকটিস করছ?
-তাহলে বলেই দিই। তোমার এত প্রশ্ন আর সহ্য হচ্ছে না।
-কী বলে দেবে?
-আমি প্র্যাকটিস শুরু করেছি। তোমার মা যখন মারা গেলেন, তার কয়েক মাস পরে যখন তোমার বাবা মারা গেলেন; তাদের দাহ করার সময় কোন আত্মীয়স্বজনকে কাছে ঘেঁষতে দিইনি কেন জান?
-কেন?
-কারণ তাদের দাহ করিনি আমি নীলা। আমি অভ্যাস করেছি তাদের মাংসে।
-কী পাগলের মত কথা বলছ। গলা থেকে হাত সরাও।
-রিয়েলি নীলা। অভ্রর সঙ্গে তোমার ব্যাপারটা গোড়াতেই নজরে চলে এসেছিল গো আমার। শুধু স্ত্রী হত্যার মত নোংরা পাপটা করতে চাইছিলাম না! কিন্তু খাওয়ার জন্য হত্যা করাটা পাপ নয়। আমরা ইলিশ মারি, ডিম ফাটাই, মুর্গি কাটি; তাতে পাপ নেই। কারণ তাদের আমরা খাই। আমি মানুষ খেতে শিখেছি। সেই তোমার বাপ-মাকে দিয়ে শুরু। গত ছ'মাস ধরে প্রতি শনিবার আমি অফিসের ট্যুরের নাম করে তারাপীঠ গিয়ে রাত কাটাই গো। তুমি যখন অভ্রর সাথে রাত কাটাও, তখন আমি শ্মশানে সময় কাটাই। নতুন মাংসের স্বাদে নিজের জিভটাকে অভ্যস্ত করে তুলি। রিয়েলি। ইট্স নট দ্যাট ব্যাড রিয়েলি।
-গলা ছাড়! তুমি উন্মাদ হয়ে গেছ। আ...আহ...প্লীজ...।
-সরি। সরি গো। এখন বুঝতে পারছ তো আজ ডিনারটা কেন স্কিপ করেছিলাম?
No comments:
Post a Comment