Sunday, July 5, 2015

প্রশ্ন

-বাবা, ঘুমিয়ে পড়েছ?
-না।
-কেন ঘুমোওনি?
-ভাবছি।
-কী ভাবছ?
-তুই এত প্রশ্ন করিস কেন। তাই ভাবছি।
-তাই ভাবছ কেন?
-কারণ উত্তরগুলো আমাকেই দিতে হয়।
-উত্তরগুলো তোমাকেই দিতে হয় কেন?
-কারণ তোর মা ভোঁসভোঁস করে ঘুমিয়ে চলে, এই মেশিনগানের মত প্রশ্নগুলো তাই আমাকেই হ্যান্ডল করতে হয়।
**
-আমি ভোঁসভোঁস করে ঘুমোই?
-কই না তো।
-তবে তুমি ছেলেকে এই মাত্র বললে কেন?
-তুমি ঘুমিয়ে গেছিলে বলে এক্স্যাজারেট করে বলে ফেলেছি।
-এত এক্স্যাজারেট কর কেন কথায় কথায়?
-না মানে। ছেলেটার এত প্রশ্ন করে পদে পদে।
-প্রশ্ন করা কি খারাপ?
-না খারাপ কেন হবে।
-খারাপ যদি না হয় তাহলে তুমি বিরক্ত হচ্ছ কেন?
-আসলে সব কথাতেই যদি প্রশ্ন থাকে তাহলে...
-তাহলে কী?
-কিছু না। ঘরটা কেমন গুমোট লাগছে। তুমি ছেলেকে নিয়ে ঘুমোও, আমি ভাবছি ড্রয়িং রুমের সোফায় ঘুমিয়ে নেব আজ। প্লীজ।
**
-খোকা তুই সোফায় শুয়ে কেন?
-এমনি মা। ও কিছু না। তুমি আবার উঠে এলে কেন। শুয়ে পড়।
-বৌমার সাথে ঝগড়া হয়েছে?
-না। ঝগড়া হয়নি। আসলে মা ছেলে মিলে এত সওয়াল করে চলেছে একটানা।
-কিরকম সওয়াল?
-সব ফালতু সব প্রশ্ন।
-ফালতু প্রশ্ন বলছিস কেন?
-প্রশ্ন করতে হয় তাই করছে। তাই ফালতু।
-কোন প্রশ্ন করতে হয় বলে করা খোকা?
-ইয়ে মা। সোফায় কেমন অসোয়াস্তি হচ্ছে। ঘুম আর আসছে না। ভাবছি ছাতে একটু পায়চারী করে আসবো। প্লীজ।
**
-চ্যাটার্জি সাহাব আছেন নাকি ওখানে?
-হ্যাঁ। কে কেয়ারটেকার বুঝি!
-জি সাব। আপনি এত রাত্রে ছাদে কেন সাহাব?
-এমনি। হাওয়া খানে কে লিয়ে আয়া হ্যায়।
-ঘর মে এসি খারাব হ্যায় কেয়া সাহাব?
-না।
-ফির ছত পে হাওয়া কে লিয়ে কিউ আয়া সাব?
-আমি ঝাঁপ দেনে কে লিয়ে আয়া হ্যায়। ভাগো হিয়াসে।
-ঝাঁপ দেনে মতলব সাব?
-আউর এক সওয়াল করেগা তো হাম তুমকো মার ডালেগা।
-কিউ সাব। মেরা কেয়া কসুর?
**
-কী রে খোকা, হঠাৎ ছাদ থেকে ঝাঁপ দিলি কেন?
-প্রশ্নের ভয়ে বাবা।
-প্রশ্নের ভয়ে মানে?
-ছেলের প্রশ্নের ভয়ে পাশ ফিরে শুলাম। বৌয়ের প্রশ্নের ভয়ে বেডরুমে ছেড়ে ড্রয়িং রুমে শুতে এলাম। মায়ের প্রশ্নের ভয়ে ছাতে উঠে এলাম।শেষে কেয়ারটেকারের প্রশ্নমালা সহ্য করতে না পেরে ঝাঁপ দিলামl
-তা ঝাঁপ দিয়ে কী লাভ হল?
-অক্কা পেলাম। মন্দের ভালো এই যে তোমার সাথে এদ্দিন পরে দেখা হল।
-অক্কা পেয়ে কী বুঝলি?
-ভূত হয়েও শান্তি নেই। প্রশ্ন থামে না।
-অতএব?
-অতএব, নেক্সট কোশ্চেন প্লীজ।

No comments: