Saturday, August 29, 2015
ফেলুদার রাখী
- ম্যাডাম, আপনি এত দূর থেকে এখানে এসেছেন আমায় রাখী বাঁধতে?
- প্লীজ পারদোশ দাদা, ম্যাডাম বলে অ্যাড্রেস করবেন না প্লীজ। আই কনসিডার ইউ টু বি মাই দাদা আর আমি আপনার ফিমেল ভক্ত আর বহিন দোনো আছি। আমাকে আপনি মেঘা বহেন বোলেন। প্লীজ। হে হে হে।
- বেশ মুভ্ড হওয়ার মত ব্যাপার-স্যাপার ঘটিয়েছেন দেখছি ম্যাডম...থুড়ি...মেঘা বহিন।
- বিগ ফ্যান। তেহকিক্যাৎ কে মামলে মে আপকা জওয়াব নহী। প্লীজ এই বহিনকে এই ছোট রাখী টাই করার প্লেজারের থেকে ডিপ্রাইভ করবেন না। প্লীজ।
- আসলে প্রমীলা ভক্তদের কাছ থেকে প্রেমপত্র পেয়ে অভ্যস্ত। কিন্তু এই প্রথম কেউ বাড়ি বয়ে আমায় রাখী বাঁধতে এলেন। সত্যিই রিফিউজ করতে ইচ্ছে করছে না। তোপসে, চট করে এক প্যাকেট মিষ্টি নিয়ে আয় মেঘা দেবীর জন্য। তবে মেঘা একটু জলদি করতে হবে। আমার বেরুতে হবে।
- হে হে হে। লিন। এই বারে আপনার রিস্টটা সামনে করে লিন। আমি রাখী বাঁধবে। প্লীজ। ইট উইল নট টেক মোর দ্যান টু মিনিট্স।
- এই যে।
- এই এই এই। রাখী বাঁধিয়ে দিলম পারদোশ মিট্টার ভাইয়া। অটূট বন্ধন। ভুলিয়েন না।
- না মেঘা। ভুলব না।
- ই বন্ধনের মতলব সমঝিলেন ভাইয়া?
- এই, আপনি এখন থেকে আমার বোন।
- বিল্কুল। অউর বহিন কা রক্শা করনা ভাই কা ডিউটি আছে।
- সে প্রতিশ্রুতি না দেওয়ার কি আর অবকাশ আছে? দাদা হিসেবে আপনাকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব অবশ্যই আমার।
- ভেরি গুড ভেরি গুড। আমি জানি আপনি জেন্টলম্যান আছেন। ভদ্দরলোকের কথার ভ্যালু আছে। আপনার কথার ভি ভ্যালু আছে।
-আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে মেঘা আপনার বিশেষ ভাবে প্রটেকশনের দরকার আছে। শুনুন, বোন যখন আপনাকে বলেছি তখন অফ কোর্স আপনাকে প্রটেক্ট করার দায়িত্ব আমি নেবই। কী ব্যাপার খুলে বলুন।
- খুলে বলার কুছু নাই মিট্টার দাদা। কুছু নাই। আপনি কসম নিয়েছেন বহিনকে প্রটেক্ট করবেন, ই বাত হি যথেষ্ট আছে। আপনাকে বেশি কুছু করতে হবে না। আপনি শুধু ইন্টারফেয়ার করবেন না। ব্যাস। দ্যাট উইল বি ইনাফ ফর মাই প্রটেকশন।
- ইন্টারফেয়ার করব না? কী'সে ইন্টারফেয়ার করব না?
- আমার বিজনেসে ইন্টারফেয়ার করবেন না মিট্টার দাদা। সিম্পুল। দ্যাট উইল কীপ দিজ বহীন অফ ইওর্স প্রটেক্টেড অ্যান্ড সেফ।
- আপনার বিজনেস?
- আপনি জানেন আমার বিজনেস বেস্ মিট্টার দাদা। বনারস ইজ নট নিউ টু ইউ। আপনি বহুত ডিস্টার্ব করছেন আমার বিজনেসে। আপনার এক্সটা-আর্ডিনারি বুদ্ধির সাথে আমি কম্পিট করতে পারলম না। আই নিডেড প্রটেকশন। হু কুড প্রটেক্ট মি এগেইন্সট ইউ মিট্টার দাদা? নান বাট ইউ। তরকীব সোচতে হল আমাকে, আপনার প্রটেকশনের কমিটমেন্ট আদায় করতে। হে হে হে।
- মগনলাল...।
- মেঘা বোলেন। মেঘা বোলেন। বহুত পয়সা গেলো এই সেক্স চেঞ্জ অপরেশনে। মেঘা বোলেন প্লীজ।
Tuesday, August 25, 2015
বানপ্রস্থ
- আরেকবার ভেবে দেখবে না বাবা?
- অনেক ভেবে দেখেছি পিন্টু। আগেই চলে যাওয়া উচিৎ ছিল।
- অভিমান?
- না রে বোকা। তোরাই তো আমার সবকিছু। কিন্তু বাণপ্রস্থ তো আজকের রীতি নয়।
- প্লিজ বাবা। কথা ঘুরিও না। এই বয়েসে দুম করে বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছ? কবে তুমি সিরিয়াসলি রিলিজিয়াস ছিলে যে আজ হরিদ্বারের আশ্রমের প্রতি এত টান উদয় হল?
- তোদের প্রাইভেসি দেওয়াটা দরকার পিন্টু। বৌমারও একটা স্পেস দরকার।
- শিখা তোমায় কিছু বলেছে?
- আরে না রে। শিখা ইজ আ গুড গার্ল। তোকে রুরুকে ভালো রাখবে।
- বাবা প্লিজ লুকিও না।
- শিখা আমায় কিছু বলেনি। ট্রাস্ট মি।
- ওর কোন ব্যবহারে তোমার খারাপ লেগেছে?
- আমার চলে যাওয়ার ডিসিশনটা এত স্কেপটিক্যালি কেন দেখছিস পিন্টু? কলকাতা আঁকড়ে এতদিন তো হল। এবার পিছুটান ছাড়ার সময়। আসি না ঘুরে। আর যাচ্ছি মানে কী এ মুখো হব না কোনদিন? বছরে একবার আসবই।
- বাবা প্লীজ। ডোন্ট গো। দরকার হয় অন্য একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে...।
- আমায় আটকাস না রে পিন্টু। স্পেসের কথাই যখন ভাবছি; কলকাতা আর কেন?
- যাবেই?
- প্লীজ পিন্টূু। এবার সময় হয়েছে।
- তোমায় ছাড়া এ বাড়ি খাঁখাঁ করবে যে...।
- এ বাড়ি ছেড়ে দূরে থাকতে আমারও ভালো লাগবে রে? বিশেষ করে রুরু সোনাটাকে যে কী মিস্ করব। সবসময় ওর দাদু দাদু ডাক...। তবে আর পারছিলাম না রে। তোর বৌমা, রুরুর থেকেও না থাকাটা...। ওই অ্যাক্সিডেন্ট এখনও ভুলতে পারি না পিন্টু। পারি না। আমায় যেতে দে।
- চলে গিয়ে ভূলতে চাইছ? আমাদের কি শেষ পর্যন্ত তুমি ভয় পেতে শুরু করেছ বাবা?
সুবাস
-বসব?
-পাবলিক পার্ক। পাবলিক বেঞ্চি। পারমিশন চাইছেন কেন?
-না মানে আপনাকে ডিস্টার্ব না করে ফেলি।
-পারমিশন চেয়ে ডিস্টার্ব করছেন।
-হে হে। থ্যাঙ্কস। আপনার হাতে ওটা আজকের কাগজ নাকি মশাই?
-হুঁ। পড়বেন?
-নাঃ, আমার আর এ যুগের খবরে কী দরকার।
-এ যুগের খবরে আপনার দরকার নেই?
-না মানে। খবরের হিসেব রাখা কবেই ছেড়ে
দিয়েছি।
-কবে থেকে?
-রামবাবুর এক্সপ্যায়ার করার পর থেকেই।
-রামবাবু?
-অযোধ্যার।
-দশরথের ছেলে?
-এল্ডার সান।
-পূর্ব জন্মের বাতেলা দিচ্ছেন? পুলিশ ডাকব?
-এ জন্যেই প্রসঙ্গটা এড়িয়ে যাই। এই আমি আর স্পীকটি নট।
-না না। বলে যান। আমার হাতে সময় আছে। বোর হচ্ছিলাম। আনন্দবাজারও খতম। আপনার গুলতানিই শুনি।
-আহঃ, আমি তো আর জোর করে বিশ্বাস করতে বলছি না।
-কত নম্বর রিবার্থ?
-রি...? না না, ডাইরেক্ট বেঁচে রয়েছি।
-তা, এদ্দিন বাঁচলেন কী করে?
-বর। অমরত্বের।
-অমর? আপনি কী...?
-পবনপুত্র।
-লেজ?
-মধ্যযুগে ছাঁটিয়ে নিয়েছি।
-ছাঁটিয়ে নিয়েছেন?
-কমম্পলেক্স সার্জারি মশাই। সে যুগের মেডিসিন যে কোথায় দাঁড়য়েছিল; জাস্ট ভাবা যায় না।
-ধুর।
-কেন? ধুর কেন?
-এ চেহারায় গন্ধমাদন তুলেছিলেন?
-এ'কয় হাজার বয়েসে ফ্লেক্সিবিলিটি কমেছে। শরীর শুকিয়ে এসেছে। আরে মশাই, অমরত্বের চেয়ে বড় অভিশাপ কিছু হয় না।
-এসব আমায় বলছেন কেন? হাততালি এক্সপেক্ট করছেন?
-বলেছি আপনি বিশ্বাস করবেন না বলে। সবাইকে সে বিশ্বাসেই বলি। এই কথা কেউ পাত্তা দেবে না বলে। অবশ্য এ অন্ধকার যুগে পাত্তা দিলেই মুশকিল হত। আমায় এরা ইন্ডাস্ট্রি করে ছাড়ত।
-স্মার্ট।
-হে হে।
-তা সে যুগের সাথে এ যুগের তফাৎ কী কী নজরে পড়ে?
-সবই তো চেঞ্জড।
-রিয়েলি? এমন কিছুই নেই যা সে যুগে এ যুগে একই রয়ে গেছে?
-আছে। একটা জিনিষ আছে।
-কী জিনিষ সেটা হনুবাবু?
-একটা স্পেশ্যাল ফ্র্যাগ্রর্যান্স এখনও টিকে আছে।
-ফ্র্যাগর্যান্স? সে যুগ থেকে এ যুগে? কীসের?
-বিশল্যকরণীর। এগজ্যাক্ট সেই সুবাস।
-বলেন কী! বিশল্যকরণীর সুবাস এ যুগে? সুবাস অফ প্যানাকিয়া?
-রাইট।
-এ যুগের কীসের সুবাস বিশল্যকরণীরর মত শুনি!
-প্রথম সে গন্ধ নাকে আসায় আমিও চমৎকৃত হয়েছিলাম। অবিকল বিশল্যকরণী... এত দিন পর।
-মডার্ন সোসাইটির কীসে আপনি বিশল্যকরণীর ফ্র্যাগর্যান্স পেলেন দাদা?
-বলি?
-তাই তো জিজ্ঞেস করছি।
-সেই সর্বরোগনাশা সুবাস; ঠিক যেন ফ্রেশলি পিকড ফ্রম গন্ধমাদন।
-আরে কীসে?
-বোরোলিনে।
মদ মামা
১/৩
"জেনে রাখ। যুদ্ধজয় একদিন আউট অফ ফ্যাশন হবেই। সেদিন তরবারিরা কচুকাটা হবে হেমন্তে। সুরের ধারে শত্রুজয় উড বি দ্য অনলি টেকনোলোজি দেন", মদের গেলাস টেবিলে নামিয়ে রেখে গলা ছাড়লেন ছোটমামা;
"না তুম হমে জানো, না হম তুমহে জানে
মগর লগতা হ্যায় কুছ অ্যায়সা
মেরা হমদম মিল গয়া..."
মগর লগতা হ্যায় কুছ অ্যায়সা
মেরা হমদম মিল গয়া..."
২/৩
-গেলাস চলকে পাঞ্জাবিতে। এ হেঃ।
-টিস্যু দেব?
-ক্যুইক।
-এই যে।
-আর চলকে যেটুকু চলকে পাঁজরা হিট করছে? সে'টা?
-মেলোড্রামার জন্য টিস্যু পেপার এক্সপেক্ট করো না মামা।
-টিস্যু অফ মিউজিক প্লীজ। যদি আরও কারে ভালোবাস, যদি আরও ফিরে নাহি আস;আই উইল সাসটেইন অন ট্যাগোর। দাড়ি মার্কা টিস্যু। প্লিজ।
৩/৩
-হোয়াট ইজ রিয়েল মাতলামি মামা?
-আমি গাইব "হায় গো কী যে আগুন জ্বলে বুকের মাঝে, বুঝেও তবু বুঝতে পারি না যে"। সুর কাঁপবে, কাঁপবে গেলাস। ঘরময় পোষা বেড়ালের মত মিউমিউ করতে করতে ঘুরঘুর করবে শনিবারি রাত্রের মেজাজ। আর স্টুপিড এই সস্তা মদের বোতল মাতাল হয়ে উলটে পড়ে থাকবে আমার নেশায়। বোতলের সেই মাতলামি; দ্যাট ইজ দ্য রিয়েল থিং। মানুষের মাতলামিটা স্রেফ প্রিটেন্স।
গুনগুন
১।
আলিবাবা প্রেমিক হয়ে প্রেমিকার হৃদয়ের গুহার একগুঁয়ে দরজায় যদি হত্যে দিয়ে পড়তেই হয়, তবে-
চিচিং ১:
"হোঁঠ পে লিয়ে হুয়ে দিল কি বাত হম
জাগতে রহেঙ্গে অউর কিতনি রাত হম"।
চিচিং ২:
"রাত ইয়ে করার কি...বেকারার হ্যায়"।
ফাঁক:
"তুমহারা ইন্তেজার হ্যায়"।
২।
"লগ যা গলে"র সুরে তাল ঠুকছিলেন বৃদ্ধ।
দু'চোখ বেয়ে ঝরা জলে তাঁর দাড়ি বুক ভিজে যাচ্ছিল।
"রবীন্দ্রনাথ কি এভাবেই প্রেমের সুরে হৃদয় ক্যাপচার করে থাকেন?", ভাবছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
৩।
-উয়ো শাম কুছ অজীব থি।
-ঢাকুরিয়া লেক?
-ইয়ে শাম ভি আজীব হ্যায়।
-ধুস, এই বোরিং ব্যালকনি।
-উয়ো কল ভি পাস পাস থি..।
-ছিলামই তো। জাপটে।
-উয়ো আজ ভি করীব হ্যায়।
-না থেকে উপায় কী? এ ব্যালকনিতে তোমায় একা মানায় না।
-তোমাকেও মানায় না। ফ্রেমে মালায়। মানায় না।
এস কে গুপ্ত
- আপনিই মিস্টার এস কে গুপ্ত?
- আমিই।
- বি ডি মুখার্জী আপনাকেই রেকমেন্ড করেছেন তো?
- আজ্ঞে।
- টপলেস মডেল হতে আপত্তি নেই আপনার, তাই তো?
- বাপ ঠাকুর্দাদের জন্মাবধি সন্ধ্যার পর থেকে টপলেস ইন লুঙ্গি দেখে অভ্যাস্ত। টু পাইস আসলে টপলেসে কী আর এসে যায়।
- ভেরি গুড। শুটিং কিন্তু কালকেই।
- বেশ বেশ। তবে ইয়ে, আপনি কি শুধু একটা লেয়ারেই টপলেস এক্সপেক্ট করছেন?
- টপলেসে লেয়ার?
- লেয়ার আছে বৈকি স্যার।
- জামা খুলে দাঁড়াবেন তাহলেই হবে। ওসব লেয়ার টেয়ার খুঁজতে যাবেন না। তা বিনয়বাবু ভালো আছেন?
-বিনয়বাবু কে?
- বিনয় দোদুল মুখার্জী। বি ডি মুখার্জী। যিনি আপনাকে রেকমেন্ড করেছেন।
- বিনয় দোদুল মুখার্জী? কই, তাকে তো চিনি না।
- সে কী! আপনি বললেন যে আপনি এস কে গুপ্ত। আর আপনি বি ডি মুখার্জীর রেকমেন্ডেশনে এসেছেন এখানে?
-এই দেখুন দেখি; কী কনফিউশন। আরে আমায় এখানে পাঠিয়েছেন অন্য বি ডি মুখুজ্জে ; বেম্ম দত্যি মুখুজ্জে। আর আমায় কি অন্য এস কে গুপ্ত ঠাউরেছেন নাকি? আমি স্কন্ধ কাটা গুপ্ত মশাই।
মাতালিয়া স্তোত্র
মাতালিয়া স্তোত্র ১ -
" মদ খাই না রে, মদ খাই না। শক্তির পারফিউম থোরাসিক ক্যাভিটিতে ছড়িয়ে নিই শুধু"।
" মদ খাই না রে, মদ খাই না। শক্তির পারফিউম থোরাসিক ক্যাভিটিতে ছড়িয়ে নিই শুধু"।
মাতালিয়া স্তোত্র ২ -
"জল নয়, সোডা নয়। যন্ত্রনা আস্বাদনের ব্যাপারে আমি পিউরিটান। বড় জোর এক ফোঁটা বোরলিনের মত এক টুকরো বরফ। বড় জোর"।
"জল নয়, সোডা নয়। যন্ত্রনা আস্বাদনের ব্যাপারে আমি পিউরিটান। বড় জোর এক ফোঁটা বোরলিনের মত এক টুকরো বরফ। বড় জোর"।
মাতালিয়া স্তোত্র ৩ -
"হাভাতের মত মদের গেলাস খামচে ধরিস নে ভাইটি। কোদাল দিয়ে তাজমহল বানানো যায় রে?"।
"হাভাতের মত মদের গেলাস খামচে ধরিস নে ভাইটি। কোদাল দিয়ে তাজমহল বানানো যায় রে?"।
ভূতের গল্প
- না না, সকাল সকাল আর যাই হোক ভূতের গল্প দাঁড়ায় না।
- সেজ হু?
- এ তো অবভিয়াস। ভূতের গল্প রাতে। অন্ধকারে। টিউবলাইটে নয়, হ্যারিকেনে। টিপটপ বৃষ্টি থাকলে অউর ভি বঢিয়া।
- এসব স্টিরিওটিপিকাল চিন্তা।
- আপনি বলতে চাইছেন এই অফিসটাইমের মিনিবাসের ভীড়ে লেপ্টে আপনি ভূতের গল্প শুনতে প্রেফার করবেন?
- আলবাত করব। নয়তো শিশি থেকে জোয়ান গুঁড়ো সাফ করে আপনাকে পুরে আনলাম কেন? আর সামান্য একটা গপ্প বলতে গিয়ে এত বাহানা? আপনি কন্ডিশন ভায়োলেট করছেন।
- আহা চটছেন কেন?
- চটব না কেন? ভূতের গপ্প ভূতের গপ্প করে মুখে থুতু উঠে গেল আর আপনি মাইরি লজিক ঝেড়ে যাচ্ছেন। আর ইয়ে। দেখুন প্রদীপবাবু, হ্যারিকেনের শালিসি করা আপনাকে মানায় না।
নিধুবাবুর অভ্যাস
নিধুবাবুকে পাড়াময় সবাই ভয় পায়। ভয় না পেয়ে উপায় নেই। তিনি ফালতু প্রশ্নের সম্রাট ।
বাজারের থলি ভরে বাড়ি ফিরছেন অনন্তবাবু, টুক করে তাকে নিধু বাবু জিজ্ঞেস করে ফেললেন "বাজার করে ফিরছেন দাদা?"।
পাড়ার ক্লাবের দালানে মাদুর পেতে ছেলেরা টুয়েন্টি নাইন খেলছে, পাশ দিয়ে যেতে যেতে নিধুবাবু উৎসুক সুরে জানতে চান। "হ্যাঁ রে, তোরা তাস খেলছিস নাকি?"
বিপিন বাবার ডেডবডিতে সবে কাঁধ দিয়েছে, সে সময়ই ঠিক নিধুবাবু দাম্ভিক ব্যারিটোনে জানতে চেয়েছিলেন "বাবা মারা গেল বিপিন?"। বিপিনের নিরুত্তরতা উপেক্ষা করে দ্বিতীয় সওয়াল ছুঁড়ে দিয়েছিলেন নিধুবাবু "তোর চোখে জল যে বিপিন, তুই কাঁদছিস?"
এমনকি নিজের ছেলের রিপোর্ট কার্ডে চোখ রেখে সপাট উদগ্রীবতায় প্রশ্ন করেছিলেন নিধুবাবু "তুই অঙ্কে বত্রিশ পেয়েছিস খোকা? তুই অঙ্কে বত্রিশ পেয়েছিস?"।
সে'সব পর্যন্ত যাও ঠিক ছিল। তবে পাড়াময় ভয় ছড়াতে আরম্ভ করল যখন দুমদাম যেখানে সেখানে উদয় হয়ে পাড়ার কাউকে না কাউকে পাকড়াও করে নিধুবাবু জিজ্ঞেস করা শুরু করলেন, "ট্রাকটার পিছনের চাকার নিচে চলে গেসলাম, তাই না?"।
বিশ্বাসে মিলায়
- ধুর মড়া! অত ভাবছিস কেন।
- একটা কোশ্চেন ছিল।
- শুনি।
- না না, দু'টো কোশ্চেন।
- ধুর। হারামি কোথাকার।
- প্লীজ। অনলি ট্যু।
- শুনি।
- এক। আমায় স্বর্গে রাখছেন না কী তেলের কড়াইতে?
- ধুর ধুর। অ্যান্টি ম্যাটারে ল্যান্ড করেছিস বিগ ব্যাংয়ের আওতার বাইরে। সময় স্বর্গ ম্যাটার কিস্যু নেই এখানে। টেকনিকালি আমিও নেই। তবে না থাকাটাই আমার থাকা।
- জলের মত সহজ। বুঝে গেছি। পরের প্রশ্ন করি?
- উদ্ধার করুন করে। হারামি। প্রশ্নবাজ।
- এটাই লাস্ট। গড প্রমিস। আচ্ছা, ইয়ে, আপনার চেহারায় এত কালশিটে দাগ কেন?
- ওই। একবার ওপারে যেতে পেরেছিলাম। বহুদিন আগে। বেদম ক্যালানির শেষে এদিকে এসে ল্যান্ড করেছি।
- ক্যালানি খেলেন কেন?
- ডারউইন ছিলাম তো। কনস্পেচুয়াল ক্যালানি। এন্ডলেস। ওপারে তো ধর্ম-টর্ম পাবলিক খায়।
-পাবলিকের কী দোষ বলুন। আপনি তো রিয়েলি আছেন।
-আমি শুধু না। আপনিও আছেন স্যার। ভগবান।
- আমি ? ভগবান? যা: শালা। আমি তো মরে এলাম।
- মরে এসেছেন! নেকু! কোমায় থাকা সাবকনশাস চলে এসেছে। রেয়ারলি কেউ আসতে পারে। অ্যান্টি ম্যাটারে, গ্র্যাভিটি বিগ ব্যাংয়ের আওতার বাইরে। এবার থাকো শালা ভগবান হয়ে লটকে। এখানে ছাই ইভোলিউশন-টিউশনও চলে না। সাইন্স তো শালা ম্যাটারেই ফেঁসে রয়েছে। ধুর ধুর ধুর।
***
- আফটার লাইফ? বিশ্বাস আছে?
- অঙ্কে ফেল করলেই কবিতা লিখব; সে বিশ্বাসের নাম রজনীকান্ত। সেন নয় রে।
***
- আকবর সাহেবের দীন-ই-ইলাহি ক্লিক করল না যখন; ভাবছি আমিই ইহিক্রি নামের ধর্ম শুরু করব। সর্ব ধর্ম সমন্বয়ে। ট্যাগ লাইন রাখব একটা, আরাম অফ আত্মা অ্যান্ড শান্তি অফ প্রাণ।
- ইহিক্রি? ইসলাম হিন্দুত্ব আর ক্রিশ্চিয়ানিটি মিশিয়ে তুমি নিউ এজ বুদ্ধ হবে মামা?
- ধুর। মগজে কী আরশোলারা ঘুড়ি উড়িয়ে বেড়াচ্ছে রে? ইহিক্রি। লাঞ্চের ইলিশ, জলখাবারের হিঙের কচুরি আর বিকেলের ক্রিম দেওয়া কফি মিলিয়ে। ইহিক্রি।
Subscribe to:
Posts (Atom)