নীল চাঁদে নামতেই গমগমে আওয়াজে কেঁপে উঠলো তার ওয়্যারলেস রিসিভার।
- ওয়েলকাম নীল। ওয়েলকাম।
- কেমন আছেন স্যার।
- উজ্জীবিত। মাচ নিডেড ব্রেক।
- যাক। আপনাকে ফিরে পেয়ে রাষ্ট্রনেতারা আপ্লুত হবেন।
- তারা তো আপ্লুত হবেনই। এমন সস্তার প্রব্লেম সল্ভার কি সহজে জোটে? সিগারেট আছে?
- সরি স্যার। মানে...চাঁদে তো।
- অ। তাই তো। যাক গে। ভেবেছিলাম ছেড়ে দেব। তবে কাউকে দেখলেই...বুঝলে কী না...বাতিক। যাক। সে ব্যাটাকে এনেছ?
- আজ্ঞে হ্যাঁ স্যার। অফ কোর্স।
- ইঞ্জেকশন?
- দেওয়া। অজ্ঞান। টোটালি। ফর গুড।
- গুড। লুনার ক্যাম্পে শুইয়ে দাও ওকে। ও এখানেই থেকে যাবে।
- জানি স্যার। ইন্সট্রাক্শন চলে এসেছে। তবে ইয়ে। আপনি নতুন ইমেজ নিয়ে ফিরে যাবেন গোচরের আড়ালে থাকতে সে'টা তো বুঝলাম। কিন্তু আপনার মত চোস্ত বাঙালি কিনা ফিরে যাবে দক্ষিণ ভারতীয় সেট আপে? দক্ষিণ ভারতীয় পরিচয়ে?
- চাঁদকে গ্রীনরুম বানিয়ে এত বছর মেকআপ নিলাম। এত ম্যারাথন মেকআপের পর যদি বাঙালির ব্যাটা বাঙালি হয়েই ফিরি তবে আর থ্রিল কোথায়?
- তা বটে। মেকআপ জব্বর হয়েছে স্যার। ঠিক যেন উনিশ বছরের দক্ষিণ ভারতীয় যুবক। কে বলবে আপনার বয়স সত্তরের উপরে।
- সত্তর? হেহ!
- আশি?
- আশি ? হেহ!
- কত স্যার?
- আন্দাজ করে কী হবে, চাঁদে হার্ট অ্যাটাক হলে সে একাকার কাণ্ড হবে। যাক গে। ক্যুইকলি ওই অজ্ঞান বডিকে এই লুনার ক্যাম্পে ডাম্প কর। আর শোন হে নীল, আমার চেহারা দেখে দেশে কেউ সন্দেহ করবে না তো?
- কী যে বলেন স্যার। আপনি চাঁদে বসে মেকআপ নিলেন, কার বাপের সাধ্যি বুঝতে পারে যে আপনিই আসলে রজনীকান্ত নয়।
- রজনীকান্ত? যাকে উঠিয়ে এনেছ তার নাম রজনীকান্ত? সেন নয় তো?
- না না স্যার। ইডলি দোসাওলা রজনীকান্ত। রজ্নীকান্থ বলতে পারেন।
- আই সি। ওটাই তাহলে আমার নতুন নাম।
- হ্যাঁ স্যার।
- বেশ। রকেট তোয়ের কর। এবার রওনা হব। নতুন জীবন শুরু করার আগে একবার শুধু গোপনে কলকাতা যেতে হবে।
- কলকাতা কেন স্যার?
- পুরোনো মেস বন্ধুর কাছে হাজার খানেক সিগারেটের ঋণ রয়ে গেছে। সে ঋণের বোঝা সামান্য বাড়াব ভেবেছি। অভ্যাস আর স্মৃতি স্নেহ বড় ভয়ানক, বড্ড ভয়ানক। এনিওয়েজ, যাওয়া যাক। আর হ্যাঁ, চাঁদে ল্যান্ড করার সঙ্গে সঙ্গে আমার লিখে দেওয়া কোটেশনটা আউড়ে ছিলে তো বাবা নীল?