Thursday, September 10, 2015

ছোটকা

ছাতের ঘরে ছোটকা থাকে; তাই পিলুর সেখানে যাওয়া বারণ। ছোটকার মাথার ব্যামো আছে, তাই সারাক্ষণ ছোটকার ঘরে বাইরে থেকে শিকল টানা। রামখিলন শুধু দিনে তিন থেকে চার বার সেই শিকল খোলে; খাওয়ার দিতে, ছোটকাকে স্নান করাতে, ঘর সাফ করতে।

আজ কেউ খেয়াল করার আগেই পিলু ছাতে উঠে এসেছিল মিলি কে খুঁজতে। মিলি পিলুর পোষা মেনি; বয়েস আট মাস।

- অ্যাই পিলু, ইধার আ।
জানলার গ্রিলে থুঁতনি ঠেকিয়ে ডাক দিলে ছোটকা।

- মিলিকে খুঁজছি। দু'দিন ধরে দেখছি না ওকে।
ছোটকার গাল ভরা দাড়িকে ছোটকার চেয়েও বেশি ভয় পায় পিলু। মা বলে ওই দাড়িতে ইঁদুরের সাইজের সমস্ত উকুনেরা বাস করে।

- মিলি? কউন মিলি?

- আমার মেনি।

- হাউ সারপ্রাইজিং। তোর বেড়ালের নামও মিলি?

- হ্যাঁ।

- আমার রুমালের নামও মিলি। সে'টা জানিস?

- ধুৎ, রুমালের আবার নাম হয় নাকি?

- বিলকুল হয়।

- ও।

- দেখবি? রুমাল?

- বাবা তোমার কাছে যেতে বারণ করেছে।

- রুমালটা ম্যাজিকের রুমাল। কাছে আয়। আয়। আয়। দ্যাখাব।

- বাবা বকলে?

- তুই কি ভীতু?

- না।

- তাহলে আয়। আয়। আয় পিলু।
ছোটকার কাছে এগিয়ে আসতেই বিকট গন্ধ নাকে এলো। কিন্তু পিছন ফেরার আগেই জানলার শিকের ভিতর দিয়ে ডান হাত বাড়িতে খপাৎ করে পিলুর হাত ধরে ফেললে ছোটকা।
গলা শুকিয়ে এল পিলুর; ভয়ে গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বেরোল না।

- রুমাল দেখবি না পিলু?

এই বলে নিজের বাঁ হাত প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে ছোটকা বের করে আনলে সে'টাকে।

পিলু কাঁপছিল ; ছোটকার হাতে বেড়ালের পাতলা লোমশ রক্ত মাখা চামড়া...খয়েরী সাদা মেশানো। ওটা মিলির চামড়া; রক্তে মাখামাখি।

পিলু ভয়ে কাঁদতেও পারছিল না।

- সুকুমার রুমাল কে বিড়াল করেছিল। আমি রিভার্স অসমোসিস করেছি দ্যাখ। দ্যাখ, দ্যাখ। ল-র-ব-জ-হ...দ্যাখ দ্যাখ। কাঁদিস না পিলু। কাঁদিস না। আমার নাম হিজবিজবিজ...মনে রাখিস...তোর বাবার নাম হিজবিজবিজ...মনে রাখিস...।
সাত দিন পিলুর জ্বর ছাড়েনি।

**
- তুই পিলুকে ডেকে ফের সে সব কথা বলতে গেছিস?

- না। দাদা না। বলতে চাইনি।

- চুপ কর। রামখিলান নিজের কানে শুনেছে।

- বেশ। বলেছি। বেশ করেছি।

- তোর পিলুর ওপর কোন রাইট নেই। স্কাউন্ড্রেল, ফের যদি বিট্রে করেছ, তবে পাগল হয়েও আআর বাঁচতে দেব না। বলে গেলাম।

- মেরে ফেল দাদা প্লীজ। শুধু রামখিলানকে রোজ আর পাঠাস না। পিলুকে বল ওর বাবার নাম হিজবিজবিজ। আমি হিজবিজবিজ। প্লীজ।

- রামখিলান। ইঞ্জেকশন রেডি রেখেছিস?

No comments: