Saturday, October 17, 2015

দশভুজা

- নায়েব।

- বড়বাবু।

- সেজগিন্নীর ঘরে নতুন মেয়েটা কে?

- শিউলি। মোক্ষদা গাঁ থেকে নিয়ে এসেছে।

- মোক্ষদা এনেছে। কেন?

- ছেলেবেলার বিধবা।  দেখবার কেউ ছিল না। খাটতে পারে। সেজমার ফাইফরমাশ খাটার মেয়েটা আবার গত মাস থেকে আসছে না। তাই বোধ হয়।

- কাজে কেমন?

- তুলনা হয়না বড়বাবু। শিউলি যেন দশ হাতে কাজ করে। গিন্নীমার চুল বাঁধা থেকে, পান সাজা থেকে, ঘর  পরিষ্কার করা থেকে, কুটনো কোটা থেকে, বাটনা বাটা থেকে, উঠোন ঝাড় দেওয়ার থেকে, সেজখোকাকে খাইয়ে দেওয়া থেকে, রান্নার ঠাকুরকে রান্না বুঝিয়ে দেওয়া থেকে...। 

- এত কিছু করছে?

- বাড়িময় দাপিয়ে কাজ করছে বড়বাবু। শুধু সেজমা কেন, বড়মা, মেজমা, ছোটমা; কারোর হুকুমেই শিউলির মুখে না নেই। দু সপ্তাহ হল মাত্র আছে, সবার মন জয় করে নিয়েছে। 

- বটে? আর কী পারে এই শিউলি?

- গিন্নীমাই সেদিন বলছিলেন শিউলি নাকি লেখা পড়াও জানে অল্পবিস্তর, হিসেবে-টিসেব বেশ করে নেয়।

- লেখাপড়া জানা মেয়েছেলে?

- আজ্ঞে।

- এ মেয়ে যে সত্যিই দশ হাতে কাজ করতে পারে যে নায়েব। তাছাড়া সেদিন যা দেখলাম, বিধবা হলে কী হয়; রূপের তেজ আছে। 

- আজ্ঞে।

- দুর্গা ছাড়া যে মেয়ে দশ হাতে কাজ করে তাকে কী বলে জানো?

- কী বলে বড়বাবু?

- ডাইনি।

- আজ্ঞে?

- আজ্ঞে আজ্ঞে কম কর। অত দাপুটে মেয়ের জমিদার বাড়িতে থেকে কী কাজ। আমি সেজগিন্নীকে বলে দেব। কাল ভোরে তুমি নিজে গিয়ে ও মেয়েকে ওর গাঁয়ে রেখে আসবে। কান্নাকাটি করলে হাতে দু'দশ টাকা ধরিয়ে দিও।

- আজ্ঞে?

- ফের আজ্ঞে আজ্ঞে করে। যা বললাম সেই মত কাজ হয় যেন।

- আজ্ঞে। 

- আর শোন। আজ রাত্রে ও মেয়েকে নিয়ে একবার বাগানবাড়িতে এসো। দেখো, কথার এদিক ওদিক যেন না হয়। 
  

1 comment:

Anonymous said...

ideata prothom theke bojha jay - very cliche - anek asha ai lekhoni theka - please provide.