- ভয় করে না অনিলবাবু? ভয় করে না?
- করে না আবার? ইনফ্লেশনের ভয়। বসের ভয়। বৌয়ের ভয়। চৈত্র সেলের ভয়। ছেলেমেয়ে আমায় যথেষ্ট ভয় পাচ্ছে না ভেবে ভয়। লোডশেডিং হলে ফিউজ উড়েছে কী না ভয়। ক্যানসারে মরার ভয়...।
- এ বয়েসে প্রেমে পড়ার ভয়? করে না?
- কী যে বলে পাঁজাবাবু। আমি রেলের ক্লার্ক। আমার শ্বশুরবাড়ি মালদা। এক বৌ দুই ছেলে তিন মেয়ে। মেয়েটা সেকেন্ড ইয়ার, বড় ছেলে এগারো ক্লাস, ছোট ছেলে নাইনে। দেড় বছর পর রিটায়ারমেন্ট। ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়াম দিতে গিয়ে হিমশিম। প্রেমে পড়ব?
- কলেজে প্রেমে পড়ছিলেন?
- মুখচোরা ছিলাম তো।
- প্রেম করেছিলেন কী না জিজ্ঞেস করিনি। প্রেমে পড়েছিলেন?
- ঈশানী। চ্যাটার্জী বোধ হয়। আমার আওতার বাইরে ছিলে সে মশাই। অবভিয়াসলি। সে গেল মাস্টার্সে। আমি ঢুকলাম ফেয়ার্লি তে ক্লার্ক হয়ে।
- ঈশানীরা আর নেই? না আপনার সে চোখ নেই?
- এ বয়েসে...ছিঃ...ছিঃ...।
- ঈশানীরা আর নেই? সেই চোখ আপনার, নেই?
- সে সময়ের সাহস...।
- এ সময়ের ভয়?
- জলের গেলাসটা এগিয়ে দিন না এদিকে।
- হ্যাপি হ্যালোউইন অনিলবাবু।
- হ্যালো...কী?
- নীলা শার্প মেয়ে অনিলবাবু। ইংলিশে তুখোড়। ওর হোম টিউশানির দরকার নেই।
- দরকার...নেই...মানে?
- মানে মনে হয় ওকে আর পড়ানো আমার হবে না।
- সে কী? আপনি পড়াতে শুরু করার পর থেকে এত ইম্প্রুভ করেছে ওর মার্কস...।
- নতুন চাকরী জুটেছে একটা কটিহারে। কলকাতা ছাড়তেই হচ্ছে। আর এ মাসের মাইনেটা বরং থাক। চলি।
No comments:
Post a Comment