অলোক মুখার্জী। কালীপুজোর সন্ধ্যেয় স্রেফ হিন্দি বলেন; দিওয়ালী পার্টি হোস্ট করার প্রেশারে।
"আইয়ে আইয়ে আইয়ে জনাব, হ্যাপি ডিওয়ালি"। নমস্কার করে মিষ্টির বাক্স অফার করলাম। অলোকবাবু গ্র্যান্ড হোস্টের মত গলে গিয়ে বললেন-
"আরে মিঠাই-উইঠাই কা ফর্মালিটি কিউ করতে হ্যায় আপ, ইউ আর ফ্যামিলি"। আমি অ্যাসুরেন্স দিলাম ওতে মিঠাই নেই, সন্দেশ আছে।
প্র্যাক্টিস করা অবাঙ্গালী "হে হে" ছুঁড়ে আমার থেকে সন্দেশের বাক্স নিয়ে আমায় ঘরের ভিতর নিয়ে গেলেন।
রঙ্গোলী দেখালেন। লক্ষ্মী পুজোর অ্যারেঞ্জমেন্ট দেখালেন। পনীরের সাত রকম আইটেম রয়েছে ডিনারে আর পাঁচ রকমের হালুয়া; সেসব ফিরিস্তি শোনালেন। বিশ হাজারের বাজি কিনেছেন, তার বিল দেখালেন। গেস্ট লিস্টে মহারথীদের গোনালেন। তারপর দিলেন ফাইনাল অফার - "তো ফির চলিয়ে, দো হাত হো যায়ে"।
- "দো হাত?" আমি আকাশ থেকে পড়লাম।
- "অ জি তিন পত্তি", অলোকবাবুর সেই প্র্যাক্টিস করা অবাঙ্গালী কেল্লা ফতে হাসি, "দীভালি মে প্রফিট-শফিট হতে হবে তো, না কী?"।
-" আমি তিন পত্তি খেলতে জানি না", স্ট্রেট সারেন্ডার করলাম।
অলোকবাবু ভেঙ্গে পড়লেন, "বঙ্গালী কসমোপলিটান কবে হবে বলুন তো ?"
আমি বললাম " আগা বঙ্গালী হই, তারপর কসমোপলিটান হওয়া যাবে"।
বিরক্তি আর হতাশা নিয়ে অলোকবাবু বললেন "যান, তাহলে মিসেস্দের সঙ্গে হাউজি খেলুন।"
অলোকবাবুকে থমকে দিয়ে বললাম, " হাউজি ব্যাপারটা ঠিক গ্রিপ হয় না"।
অলোকবাবু মরিয়া অ্যাটেম্পট নিলেন, "দারু খান তাহলে। অনলি সোলেস আই ক্যান অফার ইউ"।
মিনমিন করে সাবমিট করতে হল "আমি ঘোর শাক্ত বাড়ির ছেলে। কালী পুজোর অমাবস্যায় পাঁঠার চাট ছাড়া মদ্যপানে মন সায় দেয় না"।
একটা অদৃশ্য ব্লটিং পেপার এক পলকে অলোকবাবুর মুখ থেকে সমস্ত "আইয়ে জনাব" ভাব শুষে নিল। তার মুখ থেকে অস্ফুটে একটা ধুর বেরিয়ে এল। আমি নিশ্চিত "ধুর"য়ের লেজুড় হিসেবেও কিছু একটা ছিল। তক্ষুনি একটা চকোলেট বোমা ফাটায় সেই শব্দটা হারিয়ে গেস্ল।
No comments:
Post a Comment