কালী পুজোর পরের দিন ভোর ভোর ছাদে উঠে সেই আমেজটা বুকে আসে। নোনাধরা ইট, অল্প শিশির ভেজা শ্যাওলা আর পোড়ানো বাজির বারুদ মেশানো গন্ধ। চকোলেট বোমার খোল, পোড়ানো তুবড়ি, রংমশাল, চরকি সব এদিক সেদিক ছড়িয়ে।
গতকাল রকেট ছাড়েনি দীপু। কিচির টিয়া টিপুকুমার গতবছর কোন বেয়াড়া রকেট উড়ে এসে খাঁচায় পড়ায় মারা যায়। দীপুর রকেট বাদ দেওয়া অবিশ্যি সলিডারিটিতে নয়; ভয়ে। কিচির বাবা কিচিকে জুডো শিখিয়ে ঠিক করেননি।
একটা চকোলেট গতকাল হাতে ফেটে গেছিল। বাঁ হাতে। বুড়ো আঙুল জুড়ে ফোস্কা। আরেকটা ফোস্কা কড়ে আঙুলে।
গতকাল কিচিকে গন্ধরাজ দিতে গেছিল দীপু। কিচি নিয়মমাফিক আগুন চোখে ডিসমিস করে দিয়েছিল আইডিয়াটা। ভুলের মাশুলবাবদ দীপুকে গন্ধরাজসহ টিপুকুমারের কবরের সামনে নিয়ে গেছিল কিচি।
পাড়ার প্রান্তে, পুরোনো কুয়োর পাশে। সে কুয়োয় জল নেই। আশেপাশে আগাছা আর একটা ঝাঁকড়া জবা গাছ। তার তলে একবছর ধরে শুয়ে টিপুকুমার। কিচি এগজ্যাক্ট স্পট দেখিয়ে দিয়েছিল, সেখানে গন্ধরাজটা রেখেছিল দীপু। কিচির মধ্যে একটা ডেটল, সর্ষের তেল আর জুনের দুপুরের কাঁচা আম লঙ্কা মাখা মেশানো ঝাঁঝাল ভাব থাকে; সবসময়। কিচির চোখে জল আর দীপুর অঙ্কে লেটার একই ব্যাপার।
টিপুকুমারের কবর আর কিচির চোখের জলে ভেবড়ে গিয়ে দীপু খেয়ালই করেনি যে ওর বাঁ হাতের কড়ে আঙুলে কিচির ডান হাতের কড়ে আঙুল কখন ফোস্কা রেখে গেছিল।
No comments:
Post a Comment