অনির্বাণবাবু কাঁপছিলেন।
খাট কাঁপছিল।
তাই বলে অনির্বাণবাবু খাটের ওপর ছিলেন না।
মেঝে কাঁপছিল।
অনির্বাণবাবু অবিশ্যি মেঝেতেও বসে ছিলেন না। শুয়ে ছিলেন না। এমনকি দাঁড়িয়েও ছিলেন না।
ছাত কাঁপছিল। দুমুর দুমুর দুমুর। সে'সময় অনির্বাণবাবু ছাতেও ছিলেন না।
অনির্বাণবাববাবু কাঁপছিলেন। ছাদে রাখা ফুলের টবগুলো কাঁপছিল। কিন্তু না। অনির্বাণবাবু যেহেতু ছাদে ছিলেন না, ফুলের টবগুলোর পাশেও তিনি ছিলেন না।
এবার আসি দেওয়ালের কথায়। হ্যাঁ। ছাদ মেঝে কাঁপলে দেওয়ালের না কাঁপাটা বোকামি। দেওয়ালে মা বগলা হার্ডওয়্যার স্টোরের ক্যালেন্ডারটাও খচর খচর করে কাঁপছিল। তাকের বইগুলো ঝুপুরঝুপুর করে ডাইভ দিচ্ছিলে মেঝের দিকে।
মনে রাখবেন, মেঝেও কাঁপছিল।
অনির্বাণবাবুও কাঁপছিলেন। কিন্তু তিনি ছাদে ছিলেন না, খাটে বা মেঝেতে ছিলেন না এমন কী দেওয়ালেও ঝুলছিলেন না।
অনির্বাণবাবু হাওয়ায় ভাসছিলেন। লজিক তাই বলে। লজিক ছাড়া রিয়ালিটি হয় না। অনির্বাণবাবু উত্তেজনায় কাঁপছিলেন।
বিশাখাদেবী অনির্বাণবাবুকে খেপচুরিয়াস হয়ে মাটিতে নামতে আদেশ করছিলেন। বার বার। যদিদং ভূমিকম্প মম, তদিদং ভূমিকম্প তব নয় কেন?
অনির্বাণবাবু অনেক চেষ্টা করেও বিশাখাদেবীকে বোঝাতে পারছিলেন না যে এরকম উড়ুক্কু মনোভাব দেখিয়ে আসলে তিনি মেরুদণ্ডের জোর দেখাতে চাইছেন না। স্ত্রৈণ সত্তা নিয়ে বিন্দুমাত্র লজ্জা তার নেই। ভূমিকম্পের মুখে দাঁড়িয়েও নেই।
এটা একটা অনাবিল ঘটনা। ভূমিকম্প এলে অটোমেটিক ভেসে বেড়ানোর ক্ষমতাটা আগে জানতেন না বলে নিজেকে অপরাধি মনে হল তার। বিশাখা না জানি কী মনে করছে। বৌ জানেনা এমন কাজ করতে বা তেমন কোন ক্ষমতা বহন করতে অনির্বাণবাবুর লজ্জা লাগে। সরি। লজ্জা নয়। ভয় হয়।
ঝ্যামেলা মিটে গেলো যখন একদিকের দেওয়াল ভেঙে খান পাঁচেক ইট বিশাখার মাথায় এসে পড়ল। মেঝে কাঁপছিল তখনও, চাপ চাপ রক্তের ছোপও কাঁপছিল। রক্তের ছোপ মেঝেতে পড়েছিল কী না।
দু'সেকেণ্ডের দুঃখটা ফার্মেন্ট হয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেরিয়ে এলো অনির্বাণবাবুর বুক বেয়ে। বিশাখার দেমাক ছিল বটে, কিন্তু এদ্দিনে একটা মায়ার বলয় তৈরি হয়েছিল ওর চারদিকে। হাউ হাউ করে বুকের ভিতর থেকে কান্না বেরিয়ে এলো অনির্বাণবাবুর।
ঠিক তক্ষুনি। বিশাখা একটু নড়ে উঠলেন। কাঁপুনি নয়। সে তো আছেই। মেঝে কাঁপছে তো। নড়ে ওঠা। সামান্য। ঠিক সেই মূহুর্তে অনির্বাণবাবু টের পেলেন তিনি কাঁদতে চাইছিলেন না; আচমকা এ নড়ে ওঠাও তিনি দেখতে চাইছিলেন না। আচমকা অনির্বাণবাবু পিঠের মধ্যে শক্ত কিছু একটা টের পেলেন। ভাসতে ভাসতে কোনও ক্রমে দেওয়ালের কাছে গিয়ে খান চারেক ইট তুলে সপাটে ছুঁড়লেন বিশাখাদেবীর দিকে।
ব্যাস। নো মোর নড়নচড়ন। ওনলি কাঁপুনি, মেঝের কাঁপুনির সাথে এক সুরে। আর কিছু বাড়তি কাঁপা কাঁপা রক্তের চাপ। মেঝেতেই।
এতক্ষণে হাসি ভাসলো ভাসমান অনির্বাণবাবুর মুখে। আর তার দু'সেকেন্ডের মাথায় নিজের শক্ত পিঠে দু'টো টোকা অনুভব করে পিছন দিকে ঘুরলেন অনির্বাণ রায়।
ভাসমান বিশাখাদেবী গনগনে চোখে জানতে চাইলেন "তোমার পেটে পেটে এই ছিল?"।
খাট কাঁপছিল।
তাই বলে অনির্বাণবাবু খাটের ওপর ছিলেন না।
মেঝে কাঁপছিল।
অনির্বাণবাবু অবিশ্যি মেঝেতেও বসে ছিলেন না। শুয়ে ছিলেন না। এমনকি দাঁড়িয়েও ছিলেন না।
ছাত কাঁপছিল। দুমুর দুমুর দুমুর। সে'সময় অনির্বাণবাবু ছাতেও ছিলেন না।
অনির্বাণবাববাবু কাঁপছিলেন। ছাদে রাখা ফুলের টবগুলো কাঁপছিল। কিন্তু না। অনির্বাণবাবু যেহেতু ছাদে ছিলেন না, ফুলের টবগুলোর পাশেও তিনি ছিলেন না।
এবার আসি দেওয়ালের কথায়। হ্যাঁ। ছাদ মেঝে কাঁপলে দেওয়ালের না কাঁপাটা বোকামি। দেওয়ালে মা বগলা হার্ডওয়্যার স্টোরের ক্যালেন্ডারটাও খচর খচর করে কাঁপছিল। তাকের বইগুলো ঝুপুরঝুপুর করে ডাইভ দিচ্ছিলে মেঝের দিকে।
মনে রাখবেন, মেঝেও কাঁপছিল।
অনির্বাণবাবুও কাঁপছিলেন। কিন্তু তিনি ছাদে ছিলেন না, খাটে বা মেঝেতে ছিলেন না এমন কী দেওয়ালেও ঝুলছিলেন না।
অনির্বাণবাবু হাওয়ায় ভাসছিলেন। লজিক তাই বলে। লজিক ছাড়া রিয়ালিটি হয় না। অনির্বাণবাবু উত্তেজনায় কাঁপছিলেন।
বিশাখাদেবী অনির্বাণবাবুকে খেপচুরিয়াস হয়ে মাটিতে নামতে আদেশ করছিলেন। বার বার। যদিদং ভূমিকম্প মম, তদিদং ভূমিকম্প তব নয় কেন?
অনির্বাণবাবু অনেক চেষ্টা করেও বিশাখাদেবীকে বোঝাতে পারছিলেন না যে এরকম উড়ুক্কু মনোভাব দেখিয়ে আসলে তিনি মেরুদণ্ডের জোর দেখাতে চাইছেন না। স্ত্রৈণ সত্তা নিয়ে বিন্দুমাত্র লজ্জা তার নেই। ভূমিকম্পের মুখে দাঁড়িয়েও নেই।
এটা একটা অনাবিল ঘটনা। ভূমিকম্প এলে অটোমেটিক ভেসে বেড়ানোর ক্ষমতাটা আগে জানতেন না বলে নিজেকে অপরাধি মনে হল তার। বিশাখা না জানি কী মনে করছে। বৌ জানেনা এমন কাজ করতে বা তেমন কোন ক্ষমতা বহন করতে অনির্বাণবাবুর লজ্জা লাগে। সরি। লজ্জা নয়। ভয় হয়।
ঝ্যামেলা মিটে গেলো যখন একদিকের দেওয়াল ভেঙে খান পাঁচেক ইট বিশাখার মাথায় এসে পড়ল। মেঝে কাঁপছিল তখনও, চাপ চাপ রক্তের ছোপও কাঁপছিল। রক্তের ছোপ মেঝেতে পড়েছিল কী না।
দু'সেকেণ্ডের দুঃখটা ফার্মেন্ট হয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেরিয়ে এলো অনির্বাণবাবুর বুক বেয়ে। বিশাখার দেমাক ছিল বটে, কিন্তু এদ্দিনে একটা মায়ার বলয় তৈরি হয়েছিল ওর চারদিকে। হাউ হাউ করে বুকের ভিতর থেকে কান্না বেরিয়ে এলো অনির্বাণবাবুর।
ঠিক তক্ষুনি। বিশাখা একটু নড়ে উঠলেন। কাঁপুনি নয়। সে তো আছেই। মেঝে কাঁপছে তো। নড়ে ওঠা। সামান্য। ঠিক সেই মূহুর্তে অনির্বাণবাবু টের পেলেন তিনি কাঁদতে চাইছিলেন না; আচমকা এ নড়ে ওঠাও তিনি দেখতে চাইছিলেন না। আচমকা অনির্বাণবাবু পিঠের মধ্যে শক্ত কিছু একটা টের পেলেন। ভাসতে ভাসতে কোনও ক্রমে দেওয়ালের কাছে গিয়ে খান চারেক ইট তুলে সপাটে ছুঁড়লেন বিশাখাদেবীর দিকে।
ব্যাস। নো মোর নড়নচড়ন। ওনলি কাঁপুনি, মেঝের কাঁপুনির সাথে এক সুরে। আর কিছু বাড়তি কাঁপা কাঁপা রক্তের চাপ। মেঝেতেই।
এতক্ষণে হাসি ভাসলো ভাসমান অনির্বাণবাবুর মুখে। আর তার দু'সেকেন্ডের মাথায় নিজের শক্ত পিঠে দু'টো টোকা অনুভব করে পিছন দিকে ঘুরলেন অনির্বাণ রায়।
ভাসমান বিশাখাদেবী গনগনে চোখে জানতে চাইলেন "তোমার পেটে পেটে এই ছিল?"।
No comments:
Post a Comment