- অভিবাদন হে সিজার।
- ধ্যাত্তেরি ছাই অভিবাদন। অমন অভিবাদনে আমি ইয়ে করি।
- এ কী! ইতিহাস সিজারকে “অভিবাদনে আমি ইয়ে করি” বলে কোট
করবে?
- থামো বিদূষক। গা চিড়বিড় করে চলেছে তখন থেকে।
- সেই অদম্য গল গ্রাম নিয়ে চিন্তা?
- হবে না? হাড় ডিপ ফ্রাই করে রক্তে আরশোলা ছেড়ে দিয়েছে
ব্যাটাচ্ছেগুলো। বদের বাসা যত।
- বদ তো বটেই। আপনার অফার করা স্বাধীনতার স্বাদ রিফিউজ করছে। বেআক্কেলে,
বেওকুফ।
- বটেই তো। স্বাধীনতায় বিন্দুমাত্র রুচি নেই তাদের। গোটাদিন
খালি ফুর্তি, ফিস্টি আর আমার সৈন্য ঠ্যাঙানো। উফ। বিশ্রী।
- অতি বিচ্ছিরি। ব্যাটাগুলো সিভিলাইজ্ড হল না আর।
- নাহ। কতবার বললা্ম, আমায় ট্যাক্স দাও; সে ট্যাক্সের টাকায়
আমি ইউনিভার্সিটি বানিয়ে দেব। তোমাদের গ্রামের মধ্যে। ছেলেপিলেরা পড়াশোনা করবে,
সভ্যভব্য হবে। স্বাধীনতার চাকা বনবন করে ঘুরবে। কিছুতেই কিছু নয়। ঢ্যামনাগুলো শুধু
ক্যালাকেলি করতেই ব্যস্ত।
- উফ। এ’সব ভাষা সিজারের মুখে মানায় না হে রাজাধিরাজ। ইতিহাস
রাগ করবে।
- ধ্যার রে বাবা। এট্টু শান্তি নেই মনে, আর এদিকে এ পড়েছে
কোটেশন নিয়ে।
- আচ্ছা এদের লোভ দেখানো যায় না?
- না না। সে’সব হওয়ার নয়। পয়সা দিয়ে কিনতে চেষ্টা করলাম,
ব্যবসা করতে শেখালাম; কিছুতেই কিছু হল না। আমার দেওয়া স্বাধীনতা মেনে নিতে এদের
ঘোর অনিচ্ছা।
- আরে আপনার দেওয়া স্বাধীনতাই তো আসলি স্বাধীনতা! চাট্টি
ট্যাক্স দেবে আর অমনি জিন্দেগি গুলজার। কেয়া বাত। কেয়া বাত।
- সহজ ব্যাপারটা যে মালগুলো কেন ঠাহর করতে পারছে না। মুশকিল।
মুশকিল।
- মুশকিল তো বটেই। তবে হে রাজন, এমন ভ্রুকুঞ্চন আপনাকে মানায়
না। শান্ত হোন। উপায় কিছু একটা নিশ্চই বেরোবে।
- উপায়?কচু বেরোবে। এই গতকালও এক দল সৈন্যকে পিটিয়ে পিঠের
চামড়া তুলে দিয়েছে। সে বেচারিদের এখন বাইশ গজে ছুঁড়ে মারলেই রিভার্স স্যুইং করবে
এমন হালত। সিংহের কাছে ফেলে দেখলাম, সিংহও তাদের চাটতে রিফিউজ করলে।
- শান্ত হোন হে সিজার। শান্ত।
- আর একবার শান্ত বললে তোমায় সেনাপতি করে পাঠাবো সেই গলেদের
গ্রামে যুদ্ধ করতে।
- উপায় না থাকলে তবে আর খামোখা আপনাকে বলছি কেন? শুনুন। গায়ের
জোরে এদের স্বাধীনতা গছানো যাবে না, হাড় বজ্জাত ব্যাটাচ্ছেলেগুলো। টাকাপয়সার লোভেও
এদের নড়ানো যায়নি এমনই ঢ্যাঁটা। কাজেই এদের নষ্ট করার একমাত্র উপায়; নেশা।
- নষ্ট? না না। এদের নষ্ট কে করতে চায়।
- নষ্ট। স্বাধীন। ওই হল। যাহাই বাহান্ন। তাহাই। যা বলছিলাম।
এদের বাগে আনার , থুড়ি; স্বাধীনতা দেওয়ার একটা উপায় আছে।
- আছে?
- তবে আর বলছি কী!
- কত লোকেই তো কত কিছু বলে। হয় তো কিস্যু না।
- বেশ। তাহলে আপনি সৈন্য সৈন্য বারফাট্টাই ঝেড়েই চালান। আমি
আসি।
- আহ! বিদূষক। রাজার কথায় মুখভার করতে নেই। বলো। কীসের নেশায়
বদ গলগুলোকে স্বাধীনতায় বাঁধা যাবে?
- স্মার্টফোন।
- স্মার্টফোন? অশিক্ষিত বর্বর যত মাল, ট্যাঁকের জোর কিস্যু
নেই। তাদের ধরাবে স্মার্ট ফোনের নেশা?
- আলবাত! অফ কোর্স! এ স্মার্ট ফোনই তেমনই। আড়াইশো টাকায়
ক্যামেরা, ফ্রন্ট ক্যামেরা, সেলফি, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ট্যুইটার, টাচস্ক্রিন আর
যাবতীয় ভেলকি।
- এ’সব কিছু আড়াইশো টাকায়? ধুর ছাই।
- রাজায় বিশ্বাস না করলে প্রজায় মানবে কেন? অবিশ্বাসে যে নেশা
হয় না রাজন।
- আড়াইশো টাকায় ফোন দেব?
- দেবেন। বর্বরদের স্বাধীনতার স্যুপ খাওয়াবেন, টু পাইস বাড়তি
খরচ করতে হবে না? ভাবুন হে সিজার, হারামিরা দিনরাত হয় সস্তায় ফোন পাওয়ার স্বপ্নে
বিভোর থাকবে নয়তো সে ফোন পেয়ে ফেসবুকে আউটরেজ করে হদ্দ হবে। জমিতে দাঁড়িয়ে লড়াই
করার কেউ থাকবে না। আপনার স্বাধীনতার মন্ত্রে হাবুডুবু খাবে গোটা দেশ। গোটা দেশ।
- গোটা দেশ। গোটা দেশ আমার স্বাধীনতার মন্ত্রে প্রাণায়াম
করছে। আহা! আহা! ছড়িয়ে দাও এ ফোনের খবর সে গলেদের গ্রামে। আড়াইশো টাকায় স্মার্ট
ফোন। দ্য ফোন অফ স্বাধীনতা।
No comments:
Post a Comment