বিনয় দত্ত নিজের বাথরুমটাকে বড় ভালোবাসেন।
বারান্দা পেরিয়ে উঠোন, তার উত্তর কোণ।
অ্যাসবেস্টসের ছাদ, টিনের দরজা। দু'টো কল; একটা কর্পোরেশনের টাইম কল, অন্যটা ছাদের সিনটেক্সের ট্যাঙ্ক থেকে সাপ্লাই পায়। এক কোণে একটা চৌবাচ্চা, কর্পোরশনের কলের মুখে লাগানো সবুজ পাইপ বেয়ে জল এসে জমা হয় সেখানে; এতে টুলু পাম্পটায় চাপ কম পড়ে, ইলেক্ট্রিক বিলে সাশ্রয় হয়।
একটা লোহার বালতি, একটা প্লাস্টিকের। একটা অ্যালুমিনিয়ামের মগ। চৌবাচ্চার উলটো দিকের দেওয়ালে প্লাস্টিক ফ্রেমের আয়না ঝোলানো, তার নিচে প্লাস্টকের র্যাক। সে র্যাকে মার্গো সাবান রাখার সাদা সাবানদানি, ক্লিনিক অল ক্লিয়ার শ্যাম্পু, প্যারাশুট তেল, সাবান ঘষার খোসা আর দাড়ি কামানোর বাক্স।
বিনয় দত্ত মনে মনে বাথরুমটাকে আই সি ইউ বলে ডাকেন; আদর করে।
অফিস ফেরতা রোজ সপাট নিজেকে চালান করে দেন আইসিইউ'র অন্দরে। "মা মা গো, আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না মা"; অক্সিজেন চলে এক টানা। চৌবাচ্চার ঠাণ্ডা জলের স্টেরয়েড। মার্গো সাবানের মর্ফিন। ব্যথা স্তিমিত হয়ে আসে, ভয়ের দানা গুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়।
আধ ঘণ্টা আগের ভয়ার্ত ছোটখাটো জামরুল-নরম মানুষটা বাথরুম থেকে ইস্পাত কঠিন হয়ে বেরিয়ে আসেন। গেরস্থ হয়ে বেরিয়ে আসেন।
বিনয়বাবু পিতা হয়ে বেরিয়ে আসেন।
No comments:
Post a Comment