“আই মিস্ ইউ” মার্কা মেসেজ্ পড়লেই গা গুলোয় মনোজ চ্যাটার্জির। “ধুর শালা” বলে রিপ্লাই করার আগে চানাচুরের বাটিটা কাছে টেনে নেওয়ায় খানিকটা সুস্থ বোধ করলেন তিনি।
**
- শাড়ি চাই। একটা।
- তাঁত? সিল্ক? নাকি...।
- পুরো লাল না হলেও লালচে। মিনিমাম হলুদ থাকলে বাদ। দাম পনেরোশো থেকে সাড়ে পনেরোশোর মধ্যে।
- আঠেরোশো থেকে...।
- পনেরোশো থেকে সাড়ে পনেরোশো।
- প্রায় ওই রেঞ্জেই আর কী!
- প্রায় নয়। ওই রেঞ্জেই।
- আসলে দোকান ভরা শাড়ি, দেখতেই পাচ্ছেন প্রচুর ভ্যারাইটি!
- আচ্ছা। লাল। সবুজ বা হলুদ চলবে না কোন ভাবেই। দাম পনেরোশো থেকে পনেরশো পঁচিশের মধ্যে। স্ট্রিক্টলি।
- না মানে...।
- দোকান ভরা তেমন শাড়ি?
- না। মানে অত স্ট্রিক্টলি দেখলে...।
- অতটাই স্ট্রিক্টলি দেখুন। নয়তো আমি বাদ।
- পাঁচ মিনিট দিন।
- ছ'মিনিট নিন। কিন্তু ছয় বলে সাত মিনিট নেবেন না। প্লীজ।
*সাড়ে চার মিনিটের মাথায়*
- স্যার। আপনার স্পেসিফিকেশনে মাত্র দু'টো শাড়ি। লালচে। সবুজ, হলুদ একদম নেই। দাম আপনার রেঞ্জে। একটা হচ্ছে তাঁত...।
- স্টপ। কোয়ালিটি কে জানতে চেয়েছে? দু'টোর দাম কত?
- দেখাচ্ছি আপনাকে!
- দেখতে কে চেয়েছে?
- না মানে...।
- কে চেয়েছে দেখতে?
- ও। না। তাই তো। বলছিলাম একটার দাম ডিসকাউন্ট করে পনেরোশো দশ। অন্যটা এগজ্যাক্টলি পনেরোশো পঁচিশ।
- পনেরোশো পঁচিশেরটা প্যাক করিয়ে দিন।
- একবার দেখবেন না?
- দেখতে কে চেয়েছে?
- পেমেন্টটা কাউন্টারে হবে স্যার।
মনোজ চ্যাটার্জি বছরে একটা শাড়ি কেনেন। কিনতে বাধ্য হন। বিবাহবার্ষিকীর উপহার। প্রতি বছরের মত এবারও বারো মিনিটের কমে শাড়ির দোকান থেকে প্যাকেট হাতে বেরিয়ে এলেন মনোজবাবু। বেরিয়ে মোবাইলের স্টপওয়াচটা বন্ধ করলেন। এগারো মিনিট তেরো সেকেন্ড। গত বারের দশ মিনিট পঞ্চান্ন সেকেন্ডের রেকর্ডটা অধরা রয়ে গেল খুচরোর গোলমালে। ধুস্।
**
মনোজবাবু ইকুয়ালিটিতে বিশ্বাস করেন। ব্যান্ডেল লোকালে উঠে পাওয়া গেল একটা জানলা অথচ ক্যান্ডিডেট দু'জন; মনোজবাবু আর পাপনকুমার।
অতএব, টস। পাপন বললে টেল, মনোজবাবু বললেন "ইয়েস!!!"।
টসে হেরে পাপনকুমার জানলায় বসার অধিকার হারালে। মনোজবাবু সাত বছরের পুত্র পাপনকে ইকুয়াল অপরচুনিটির শিক্ষা দিতে পেরে তৃপ্ত হয়ে জানালার ফুরফুরে হাওয়ায় মেজাজ ভাসিয়ে দিলেন।
No comments:
Post a Comment