১
- এহ্ হে।
- কী হল?
- আঙুলের ডগাটা গেল কেটে।
- দাড়ি?
- রেজারে বসানোর আগেই তো...।
- দেখলি তো, কেত দাড়িতে নেই। সরঞ্জামে।
- উফ! বাবা! ফার্স্ট এড বাক্সটা কই?
- ফলস ফার্স্ট এড বাক্সটার কথা বলছিস না গীতবিতান?
- আহ! বাবা। বেশ কেটেছে কিন্তু।
২
- বস!
- আমায় বস বলে ডাকছ কেন?
- ডিভোর্স দিয়েছি, বসবাজি ছাড়ার লাইসেন্স দিইনি।
- ন্যাকামো করতে ফোন করলে?
- শোন না!
- কী?
- ডিভোর্সটা বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে।
- শাট আপ।
- আই উইল। কিন্তু তুমি না থাকলে চলছে না।
- এই আদেখলাপনাগুলো বাদ দিলে হয় না? আমাদের ডিভোর্স দু'দিন আগে হয়নি সৃজন। ষোলো বছর কেটে গেছে।
- সো হোয়াট? তোমায় এখনই সবচেয়ে বেশি দরকার। জানো কী কাণ্ড? আজ ফার্স্ট এড বাক্সটাই খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
- তার দরকার কেন পড়ল? কী হয়েছে?
- বিনু আজ প্রথম দাড়ি কামাতে গেছিল, ব্লেড রেজারে লাগাতে গিয়ে সে রক্তারক্তি ব্যাপার।
- সৃজন, এমন কেন করছ?
- সে কী রক্ত নিভা!
- বিনু নেই। নেই। নেই।
- শাট আপ! শাট আপ! খচ্চর মেয়েছেলে কোথাকার! শাট আপ! শাট আপ!
- সৃজন, শান্ত হও। প্লীজ। প্লীজ।
- যা ভাগ! মর! মর! মর!
৩
- বাবা! বাবা!
- বি...বিনু....।
- তুমি ফোনের রিসিভারে কী গজরগজর করছিলে?
- মা! তোর মাকে ফোন করেছিলাম।
- বাবা! কেন এমন পাগলামি কর?
- তোর মা ফিরে আসতে চায় না।
- বাবা। মা নেই। মারা গেছে।
- হারামজাদা। চোপ!
- আমাদের ল্যান্ডলাইন কাটা আজ বহুদিন বাবা!
- তোর গলা কেটে ফেলব! বাপ কে মিথ্যেবাদী বলা! রাস্কেল!
৪
সৃজনের চোখ আবছায়ায় ঢেকে যায়। বিকেলের আকাশ তিরতির করে চলে একটানা। নদীটার নাম কী?
নদীর জল কী জ্বলজ্বলে! ঘাসে কী নরম স্নেহ। বোতাম ছেঁড়া জামায় বড় হাওয়া খেলে যায়, বুকে মেঘ মেঘ ছাপ লেগে থাকে।
যন্ত্রণা সামান্য স্তিমিত হয়ে আসে। দপ্ রাগ ডানা গুটিয়ে অপেক্ষা করে।
অপেক্ষা। রক্ত ধুয়ে যাওয়ার অপেক্ষা।
এ নদীর জল খুন ধুয়ে দেবে? দেবে?
নিভা চলে যেতে চেয়েছিল; ওকে নিয়ে। রাগ হবে না? হবেই।
তবে কি রাগ বেহিসেবি হয়েছিল?
হয়তো, সে খুন তো আর হিসেবের নয়।
ও কে ছিল? বিনু? না বিনি? নিভা জানতে দিল না। রাগ বড় বেহিসেবি হয়ে গেছিল। বড়।
No comments:
Post a Comment