প্রেম
হঠাৎ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি।
মন্মথ সিগারেত ছুঁড়ে ফেলে ছাত থেকে হুড়মুড় করে নামতে গেলে। ভিজলে মুশকিল, আগামীকাল এগজ্যামিনেশন। ফিজিক্স।
নয়নতারা চাইলে দুদ্দাড় করে সিঁড়ি বেয়ে উঠে যেতে চাইলে। আগামীকাল ছেলের বাড়ি থেকে আসছে তাকে দেখতে। যদি তারা পছন্দ করে ফেলে? শ্বশুরবাড়ির লোকজন যদি ফের বৃষ্টি ভিজতে না দেয়?
সিঁড়ির বাঁকে একটা জবরদস্ত ধাক্কার প্রোগ্র্যাম করা ছিল। দু'টো ইন্ডিপেন্ডেন্ট কার্ভ মিলে মিশে যাবে। কিন্তু খামখেয়াল বড় গোলমেলে চিজ। ঈশ্বর দেখলেন চপের দোকানটা আজ বন্ধ। উঠে গিয়ে বেসিনের আলগা ভাবে লাগানো কলের মাথা কষে ঘুরিয়ে বন্ধ করলেন।
দড়াম বৃষ্টি শুরু না হতেই থেমে যাওয়ায় মন্মথকে দ্বিতীয় সিগারেট ধরাতে হলো। ছাতের দরজার মুখ থেকে ফেরত এলে মনমরা নয়নতারা। কাল দু'জনের এগজ্যামিনেশন। মন্মথ আবার পাশ করতে বদ্ধপরিকর।
যুদ্ধ
সে এক ধুন্ধুমার বৃষ্টির রাত। স্ট্রিট ল্যাম্পের নিভু নিভু হলুদ গুলে যাচ্ছিল সরু গলির অন্ধকারে। বাতাসে অল্প জুঁই আর রামের ভাসা ভাসা সুবাস।
সামান্য অ্যাসবেস্টসের চালার আশ্রয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বৃদ্ধ মহেন্দ্রলাল। আধ ঘণ্টার ওপর হয়ে গেল; বৃষ্টি ধরার নাম নেই।
"দত্তবাবু"! ডাক শুনে অন্ধকার হাতড়ালেন বৃদ্ধ মহেন্দ্র।
"কে?"।
"আপনি? এ পাড়ায়?"।
"কে ওখানে?"।
"আপনাকে এ নষ্ট পাড়ায় দেখবো ভাবিনি"।
"আপনার ভুল হচ্ছে পালবাবু। আমি দত্ত নই"।
" পাল? কে পাল?"।
" দত্ত? কে দত্ত?"।
" ধুর ছাতা"।
"ছাতার মাথা"।
খানিক পরে বৃষ্টির ঝাপটা খানিকটা নরম হয়ে এসেছিল বইকি।
বিচার
- মাই লর্ড, আমায় এইভাবে আটক করার কী মানে?
- অর্ডার অর্ডার। প্রথমত, এ কোর্টে চিবিয়ে কথা বলা বারণ। দ্বিতীয়ত, দৃষ্টিকটু ভাবে দাড়ি চুলকানোর জন্য আপনাকে বেয়াল্লিশ টাকা জরিমানা করা হলো।
- থামুন। আই মিন, মাই লর্ড! আমার অপরাধটা কী?
- আপনি বৃষ্টি দেখেছেন?
- সে'টা অপরাধ?
- প্রশ্নের সোজা উত্তর দিন।
- দেখেছি।
- বৃষ্টির ছবি এঁকেছেন?
- এঁকেছি। সো?
- সো? বৃষ্টি দেখলেন অথচ বেগুনী না ভেজে ছবি আঁকলেন? ওদিকে অতগুলো দামী মেঘ জাস্ট জলে গেলো। জাস্ট জলে।
No comments:
Post a Comment