ব্রজমোহন
বিষ মাখানো ছুঁচের ডগাটা অনেক চেষ্টা করেও নিজের হাতে ফুটিয়ে দিতে পারলেন না ব্রজমোহন।
এত জ্বালা, এত যন্ত্রণা; তবু আত্মহত্যাটা এখনও করা হয়ে উঠলো না। এবারেও হল না। তবে আত্মহত্যা না হোক, সুইসাইডের একটা শেষ চেষ্টায়; ছুঁচটাকে পাশে সরিয়ে রাখলেন ব্রজমোহন।
সান্ত্বনা পুরষ্কারের মত,
মুখ বেয়ে ওঠা শেষ রক্তধারার মত;
উত্তেজিত ব্রজমোহনের ঠোঁটের পাশ দিয়ে পানের পিক গড়িয়ে পড়লো।
নির্মল
মাথার ওপরের গাম্বাট মেঘের ড্যালাটার নাম কোনি দিলেন নির্মল চপওলা।
মুঠো শক্ত করে বলা "ফাইট কোনি ফাইট" যদি মেঘমল্লারের কাজ করে; এ'টুকুই আশা।
পহলাজ
একদিন হয়েছে কী, পহলাজবাবু ডাউন কাটোয়া লোকালের জানালার সিট নিজের রুমাল পেতে দখল নিয়েছেন। কিন্তু মুনমুনদেবী রুমাল রিজার্ভেশন পাত্তা না দিয়ে দিব্যি বসে পড়েছেন সে সিটে।
তাই দেখে পহলাজবাবু তেলেবেগুনে চিড়বিড় হয়ে চিৎকার করে উঠলেন;
"সেন সর, সেন সর, সেন সর, সেন সর"!!!!!
অরুন মার্ফি
চেনা কবিতায় নতুন শব্দরা আবছায়া খুঁজে নিলো।
নতুন কবিতাটা না পড়েই বসে পড়তে হল অরুন মিত্রকে।
কারণ ততক্ষণে;
ফ্লাইট থেকে নেমে কনভেয়ার বেল্টের দিকে হাঁটতে শুরু করেছেন মার্ফি।
বাল্মীকি
প্রফেসর বাল্মীকি সুকুমার সমগ্রটা বগলদাবা করে টাইম মেশিনে ওয়াপিস যাত্রা শুরু করলেন।
পেজমার্কটা তখন লক্ষণের শক্তিশেলের পাতায় গুঁজে রাখা।
বনলতা
সে'বার।
ফর আ চেঞ্জ।
হাজার বছরের পথ হাঁটলেন সেন বনলতা।
আর হাঁটা শেষ হলে ফস্ করে লিখলেন;
"...থাকে শুধু অন্ধকার,
মুখোমুখি বসিবার
রায় সুকুমার"।
অনুপ
ভূতে বিশ্বাস প্র্যাক্টিস করছিলেন অনুপবাবু।
টেবিলে ছড়ানো ছিল কিছু ভূতুড়ে গল্পের বই, কিছু তান্ত্রিকপন্থার পুরোনো পুঁথিপত্র আর খান চারেক খুলি।
ঘণ্টা তিনেকের একনিষ্ঠ চেষ্টা করার পরেও যখন বুকে ভূত-বিশ্বাস দানা বাঁধতে শুরু করেনি, তখন একরাশ বিরক্তি নিয়ে টেবিল ছেড়ে উঠে এসে আয়নার সামনে দাঁড়ালেন অনুপবাবু।
আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখতে না পেয়ে সামান্য ভূত-বিশ্বাস গোছের গন্ধ নাকে এসেছিল বটে; তবে তা টিকলো না।
উপায়ন্তর না দেখে এস-ও-এস হাঁকলেন অনুপবাবু; মিতাকে লেখা না-পোস্ট করা প্রেমের চিঠির গোছাটা তাক থেকে নামালেন তিনি। খান দুই গদগদ লাইন পড়েছেন কি পড়েননি; অমনি ভূতের ভয়ে ঠকঠক করে কাঁপতে শুরু করলেন আদিসপ্তগ্রামের অনুপ গোস্বামী।
অমলকান্তি
একটা নরম অমলেট চেয়েছিলেন অমলকান্তি। রোদ রঙা, যার গায়ে অল্প লাল পেঁয়াজ কুচির ছোপ ছোপ।
**
সসপ্যানের বুকে গলগল করে ছড়িয়ে পড়া কুসুমে চিড়বিড় ভালোবাসেন অমলকান্তি।
**
ভেবে দেখলেন অমলকান্তি। শালপাতার দোনার স্পর্শে অমলেটে সুর যোগ হয়।
**
মাখন ভাতের তাপে অমলেটে লজ্জা আসে। আসে কবিতা। মনকলমের খসখসে সে অমলেটের বুকে গল্প জমা হয়।
No comments:
Post a Comment