গুজিয়া নিয়ে ব্যাগ ব্যাগ সাহিত্য হয় না।
ঠিক যেমন বালুচরে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার রোম্যান্স নিয়ে একজন ছাড়া তেমন কেউই বিশেষ রকমের লাগসই কথা বলে যেতে পারেননি।
ছোট্ট বাক্সে আট পিস। বাক্সের গায়ে নীলে লেখা কল্পতরু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, দু'টো গার্ডার। দিব্যি এ'টে যায় মন্টুবাবুর পাঞ্জাবির পকেটে। মন্টুবাবু ভিজিটিং কার্ড, লেটার প্যাড বা ওই ধরণের জিনিসপত্র ছাপান। এ অফিস থেকে সে অফিস ঘুরে অর্ডার নেন এবং সাপ্লাই করেন।
মন্টুবাবু রোজ নতুন গুজিয়ার বাক্স পকেটে গুঁজে দিন শুরু করেন। চারটে নিজে খান। দু'টো লাঞ্চের পরে, আর দু'টো অন্য যে কোন সময়; মনখারাপে, ক্লান্তিতে, আনন্দে, ফুরসতে। জিভে গুজিয়া ঠেকলেই চনমনিয়ে ওঠেন ভদ্রলোক, এ কথা তিনি নিজেই বলেন।
আর বাকি চারটে তিনি অন্যদের অফার করেন। অটোচালক আগ বাড়িয়ে খুচরো দিলো, মন্টুবাবু গলে গিয়ে গুজিয়া অফার করলেন।
বাসে কেউ টেস্ট জেতার খবর শোনালো, মন্টুবাবু শুধোলেন "গুজিয়া খাবেন? অমায়িক ফ্লেভার। মিষ্টি কড়া নয়"।
কোনও অফিসে গিয়ে দেখলেন পরিচিত কেউ ঝামেলায় জর্জরিত, তিনি বাক্স এগিয়ে বললেন "আসুন সেনসাহেব, আসুন! ফাইলপত্তর তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না, মেজাজটা আগে একটু শরিফ করুন দেখি"।
স্মার্ট ফোনের অভ্যেস আয়ত্ত না করতে পারলেও, স্মার্ট গুজিয়ার বাক্সই পঁয়ষট্টি বছরের মন্টুবাবুর ব্যবসার ট্রেড সিক্রেট। মন্টুবাবুর হাত থেকে আজ পর্যন্ত কোনও অফিস স্টেশনারি অর্ডার ফস্কে যায়নি।
মন্টুবাবুকে আজ পর্যন্ত কেউ রাগতে দেখেনি।
No comments:
Post a Comment