- নেতা, কথায় কথায় কীসের এত প্রতিবাদ তোমাদের?
- জমিদারমশাই, প্রতিবাদ কি আর সাধে করি? ক্ষেতে জল নেই, পেটে দানা নেই। আমাদের দরকার খালের। আপনার দাদুর মূর্তি আপনি যে টাকায় বানাবেন, তা'তে অন্তত দশটা খাল খুঁড়ে ফেলা যাবে।
- তোমরা বড় পেছন পাকা। ফেসবুক পেয়ে সাপের পাঁচ পা দেখেছে। নিজের মাথাও গেছে, আর পাঁচটা লোকের মাথাও চিবিয়ে মরলে।
- দেখুন, খালি পেট কার্বাইডের ডিপো। পিছন না পেকে উপায় নেই।
- আমার দাদু, ঈশ্বর রায়বাহাদুর শিবরাম হালদারের পত্তন করা এই গ্রাম। তার একটা আড়াই মানুষি মূর্তি বানানো নিয়ে তোমরা এত কেচ্ছা করবে? দূর দূর থেকে মানুষ এসে সে মূর্তি দেখে যাবে। গাঁয়ের সুনাম করবে। তা সহ্য হচ্ছে না? তখন থেকে খালি খাল খাল করে খাল খিঁচে নিলে। উফ।
- জমিদারবাবু। করের টাকা দিয়ে ও মূর্তি গড়া পাপ হবে। খাল না হয়ে পরে হবে'খন। ও টাকা আপনি জমিদারির কাজে খরচ করুন। মানুষের দরকারে খরচ করুন। মূর্তি গড়লে প্রতিবাদ হবেই।
- জ্বালিয়ে মারলে। ঠিক আছে। মূর্তি হবে না। ও টাকা প্রজা স্বার্থেই ব্যয় হবে।
- কথা দিচ্ছেন?
- যদুনাথ হালদার কথার খেলাপ করে না। এ টাকা আমি প্রজাদের পিছনেই ঢালব। খাওয়ার চেয়েও দরকারি কী জানো নেতা?
- কী?
- সুরক্ষা। গাঁয়ের সুরক্ষা। দশের সুরক্ষা। সরকার বাহাদুর আমাদের গাঁয়ের প্রতি সদয়। তাতে আর চারটে জমিদারির লোকের গা জ্বলে। কে জানে, দেখ তারাই আমাদের খাল থেকে জল চুরি করে হয়তো।
- জল চুরি?
- কতটুকু জানো তুমি নেতা? বেশ। এ টাকায় মূর্তি হবে না। ও টাকা দিয়ে আমি আরও দু'শো লেঠেল পুষব আর বর্মা থেকে দু'হাজার পালিশ করা লাঠি আনাবো।
- লাঠি?
- দেশের জন্য। দশের জন্য। বুঝলে নেতা?
- না মানে, মূর্তির আইডিয়াটা একেবারে ফেলনা ছিল না জমিদারমশাই।
- মাইরি বলছ? নেতাকুমার?
No comments:
Post a Comment