Monday, January 2, 2017

মিউজিয়াম ও স্বর্গ

মিউজিয়াম।।

মিউজিয়ামের এই কোণটা বড্ড প্রিয় গিগাবাইটবাবুর। এই প্রাচীন শিরস্ত্রাণ আজ থেকে প্রায় আড়াইশো বছর আগে উদ্ধার হয়েছিল। বৈজ্ঞানিকরা বলছেন এ শিরস্ত্রাণের বয়স অন্তত দেড় হাজার বছর। মাসে অন্তত একবার এসে মিউজিয়ামের কোণের এই আলমারিতে পড়ে থাকা প্রাগৈতিহাসিক শিরস্ত্রাণটির দিকে নিষ্পলকে তাকিয়ে থাকেন গিগাবাইটবাবু।

কী দুর্ধর্ষ জাতের মানুষ এর ব্যবহার করত। ভাবলেই মেরুদণ্ড বেয়ে টপটপিয়ে থ্রিল ঝরে পড়ে।

আঁটোসাঁটো।
মজবুত।
বিদ্যুৎ ছিটকে যাবে এমন। আগুনে পুড়বে না এমন। জলে ভেসে যাবে না এমন।  এমন একটা বাঁধুনি মাথায় থাকলে যেন বিশ্বজয় করা যায়। সম্ভবত এ শিরস্ত্রাণ মাথায় যুদ্ধে বেরোত আদিম মানুষেরা।

এ শিরস্ত্রাণের সামনে দাঁড়িয়ে এক শিরশিরে উত্তেজনায়  কেঁপে ওঠেন গিগাবাইটবাবু। প্রতিবার।

**

ক্যালেন্ডারও গেল পালটে। শরত বাদ, বসন্ত বাদ; সবচেয়ে বড় কথা - শীত বাদ। হাতে রইলো শুধু গ্রীষ্ম ও বর্ষা। সংবিধান পালটে সমস্ত শীতের পোশাক হয়ে গেল বেআইনি।
আইন করে সমস্ত শীতের পোশাক পুড়িয়ে ফেলা হল। কারুর কাছে শীতের পোশাক পাওয়া গেলে পাক্কা ছ'মাসের জেল।

সেই সময়। ঠিক সেই সময়ে। হালদারবাবু নিজের বহুদিনের প্রিয় মাঙ্কিটুপিটাকে মাটির নীচে লুকিয়ে রাখলেন। সে মায়া, বড় মায়া। অমন মায়ার টুপিকে কেউ পুড়িয়ে ফেলতে পারে?

স্বর্গ।।

- ওয়েলকাম টু হেভেন সান্যালবাবু। আমি এদিকের গাইড।
- এদিক? হার্ট অ্যাটাকটা সার্ভাইভ করতে পারলাম না?
- ভালো ফাইট দিয়েছিলেন। টাফ লাক। তবে ভালো খবর হল এই যে আপনি স্বর্গে এসেছেন। পুণ্যি কম করেননি দেখছি।
- স্বর্গ? কিন্তু এ যে আমার শোওয়ার ঘর।
- করেক্ট। সেই মডেলেই তৈরি।
- নরকটা কেমন হত?
- ওই। আপনার বেডরুমের মডেলেই।
- যাচ্চলে। তাহলে ফারাকটা কোথায়?
- স্বর্গ থাকে জানুয়ারির রাতের সিমুলেশনে। রোজ ঠোঁটে বোরোলিন ডলে লেপ জড়িয়ে শুতে যাওয়া। নরক হলে জুনের দুপুরে আপনাকে স্যান্ডো গেঞ্জি গায়ে পিঠে নাইসিল ঘষতে হত।

No comments: