- আমি...আমি...আমি...কোথায়?
- বেশি এক্সাইটেড হবেন না বাবরবাবু। টাইম ট্র্যাভেলের পর এত এক্সাইটমেন্ট ভালো না।
- কী সর্বনাশ! আমার মুখ দিয়ে এ কোন ভাষা বেরোচ্ছে? আর আমি আপনার এই অদ্ভুত ভাষা বুঝতে পারছিই বা কী করে?
- আপনার ব্রেনে বাংলার একটা চিপ প্ল্যান্ট করা আছে। ঘণ্টা দুয়েক অ্যাক্টিভ থাকবে।
- অ। ব্রেনে চিপ। এ আর এমন কী। উটের পিঠের আঁচিল আর বেদুইনের দাড়ির উকুনের মত মত সহজ। সে না হয় বুঝলাম। কিন্তু এ’ আমি কোথায়?
- কলকাতা।
- কল...।
- কাতা!
- কলকাতা? সে’টা কোথায়?
- আপনার সময় থেকে অনেক দূরের শহর মশাই। তবে অত জেনে কাজ নেই আপনার, এ’সব অদরকারি।
- বেশ। এ’বার জলের মত সহজ হয়ে গেল। আমার ব্রেনে চিপ আছে আর আমি কলকাতায়; কেন? সে’টা আমার জেনে কাজ নেই। বাহ। দিব্যি। ভালো কথা। আচ্ছা, যদি কিছু মনে না করেন, আর একবার ঘ্যানঘ্যান করে জিজ্ঞেস করছি; আমায় কেন আনা হয়েছে এখানে?
- ইতিহাসের স্বার্থে।
- মানে?
- ফরগানায় আর কদ্দিন পড়ে থাকবেন বাবরবাবু?
- যদ্দিন, তদ্দিন।
- এই? এইটুকুই আপনার অ্যাম্বিশন?
- কী মুশকিল। আমায় কেন ধরে এনেছেন বলুন তো?
- আপনাকে জেনুইন মোগল করে তুলতে।
- মানে? আমিই জেনুইন মোগল। এক্কেবারে পিওর।
- এদ্দিন ছিলেন না। থাকলে এদ্দিন ওই ফরগনার জমিদারি করে দিন গুজরান করতেন না। তবে আজ হবেন। রিয়েল মোগল।
- কী করে?
- এই পরোটাটা খান। তারপর দেখবেন কেমন নিজের গাঁয়ের বাইরে বেরোবার জন্য মনটা হাঁকুপাঁকু করবে। আর গাঁ ছেড়ে বাইরে বেরোতে পারলেই আপনি হয়ে উঠবেন জেনুইন মোগল।
- এই পরোটা খেলে?
- বিলকুল।
- ব্যাপারটা একটু সাজিয়ে নিই, কেমন? আমি, ফরগানা অধিপতি বাবর, মোগল শিরোমণি বাবর এখনও আদত মোগল হয়ে উঠতে পারিনি।
- ঠিক।
- আর এই পরোটা খেলে আমি আদত মোগল হয়ে উঠব ।মাইরি?
- গ্যারেন্টি।
- আমি কি এখন এখানেই থাকব? আজীবন?
- পাগল? ইতিহাসে গড়বড় হলে কে সামলাবে? এই পরোটা খাওয়া হয়ে গেলেই আপনাকে আপনার দেশে আর সময়ে ফেরত দিয়ে আসব। আপনার শুধু মনে হবে যেন এই ঘুম থেকে উঠলেন। এই সমস্তটা মনে হবে স্বপ্ন। ঢেঁকুর অবিশ্যি থাকবেই; জেনুইন। এই স্বাদই আপনাকে দিয়ে যা যা করানোর করিয়ে নেবে, কেমন?
No comments:
Post a Comment