Tuesday, February 14, 2017

ভ্যালেন্টাইন ফর্দ



দশকর্মা ভাণ্ডারগুলোকে আপগ্রেড করার সময় এসেছে। তেরো তারিখ সন্ধেবেলা সে দোকানে গিয়ে খোকা খুকুরা দাঁড়াবে ফর্দ হাতে।
তারা গড়গড় করে বলে যাবে, দোকানি সুড়সুড় করে টুকে যাবেন।


ঠোঁট পালিশের বোরোলিন টিউব
১টা
আঙুলের ডগায় লাগিয়ে চেটে নেওয়ার জন্য মধুর ছোট শিশি
১টা
ভিক্টোরিয়া বা ময়দানের ঘাসে পেতে বসার জন্য রুমাল
২টো
খোলা না ভাঙা বাদাম ২৫০ গ্রাম করে
২ ঠোঙা
ফ্লপ সিনেমার কর্নার সীটের টিকিট
২টো
চিঠি লেখার হ্যান্ডমেড কাগজ
১/৪ বান্ডিল
গোলাপি রঙের সুগন্ধি খাম
'টো
স্পার্কল ঝরানো কালি ভরা কলম
১টা
ঝোপঝাড়ে জ্বালানোর গুডনাইটের কয়েল
১টা
ক্যাডবেরির প্যাকেট, বড় সাইজের
১টা
এমপি থ্রী প্লে লিস্ট (শুধু মাখোমাখো গান, হয়তো তোমারই জন্য, টাইটানিকের গান আর জাতিস্মর মাস্ট)
১টা প্লেলিস্ট (৫০টা গান)
মাউথ ফ্রেশনার
১টা
প্রেমের কোটেশনের পকেট বই
১টা
গোলাপ
২টো
টেরাকোটা কানের দুল / মানিব্যাগ
১ জোড়া/ ১ পিস্‌
ইত্যাদি।

দোকানিকে ফর্দ আর ব্যাগ দিয়ে অপেক্ষা মিনিট কুড়ি। তারপর ব্যাগ হাতে সোজা বাড়ি। রাত্তিরে ঠাকুরঘরে থাকবে সে ব্যাগ। মেজপিসি গিয়ে সে ব্যাগ খুলে ফর্দের সঙ্গে জিনিসপত্র মিলিয়ে নেবেন। দু'জনের নামসহ হার্ট শেপের চাবির রিংটা না পেয়ে আঁতকে উঠবেন তিনি।

সে কথা বাবার কানে উঠতে গনগনে রাগ বাড়ির সিলিঙে ধাক্কা খাবে।
"রাস্কেলটা চাবির রিংটাই ভুলে গেছে? ও কি প্রেম করছে না মুর্গি কাটছে? দত্তবাড়ির সেজছেলে শুনলাম কফির কাপে প্রেমিকার ছবি আর শেষের কবিতার কোটেশন সাঁটিয়ে এনেছে। আর এদিকে আমাদের ছাগলটা চাবির রিংটুকু ভুলে মেরে দিলে। অকালকুষ্মাণ্ড! শেষে কিনা আমাদের ফ্যামিলির ছেলে অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ করবে? ওর পিঠে ছাল আমি ছাড়িয়ে নেব"।

শেষে পুরুতমশাইকে ফোন করতে সলিউশন বেরোবে। দু'জনে মিলে হটচকোলেটে কুলকুচি করে চুমু খেলে নাকি হার্ট শেপের চাবির রিং না থাকার দোষ কেটে যাবে।
মেজদা ক্ল্যারিফাই করে নেবে "দোষ খণ্ডনে গুপ্তপ্রেস কি স্মুচ বলছে না পেক্‌"?

পরের দিন ভোর ভোর বাড়ির বড়দের প্রণাম করে খোকা ব্যাকপাকে ভ্যালেন্টাইন সামগ্রী পুরে বেরোবে অভিসারে। মা সন্তোষীর ঘটে দশটাকা মানত করবেন "মা, খোকা যেন এবার গতবারের মত সন্ধ্যের আগে বাড়ি ফিরে না আসে। ফিরতে অন্তত যেন রাত এগারোটা হয়। মা, মা গো"।

No comments: