আধুনিক অনলাইন তর্কক্ষেত্র বিপদসংকুল। চারদিকে ছড়িয়ে ল্যান্ডমাইন। এ'দিক ও'দিক পড়ে ক্ষতবিক্ষত লাশ, ভাঙাচোরা বাড়িঘরদোর।
ক লিখলেন অমুক চিন্তা মন্দ। তমুক ভালো।
খ তর্ক জুড়লেন। অমুককে খণ্ডন করে নয়। তমুকের হয়ে যুক্তি সাজিয়ে নয়। ক'কে হারামজাদা বলে।
গ ঝাঁপিয়ে পড়লেন ক'য়ের হয়ে লড়তে। ক'কে অকারণে "হারামজাদা" খিস্তি শুনতে হয়েছে। ব্যাপারটা মোটেও সমীচীন নয়। গ কী করলেন? খ' হারামজাদা বলে গায়ের ঝাল মেটালেন? না। গ বললেন খ'য়ের বাপ হারামজাদা। স্কেল-আপ না করলে টক্কর দেওয়া যায় না।
এ'বারে ক ফিরে এলেন তর্কে। খ'কে কোণঠাসা করা গেছে গ'য়ের আগুনে। তিনি এসে ঘোষণা করলেন যে অমুক চিন্তার সকল মানুষের বাবা হারামজাদা।
স্যাট করে মাঠে ঘ ঢুকে পড়ে জানালেন যে গোটা তর্কটাই ইনসেনসিটিভ। অমুকও শয়তানি। তমুকও ঢ্যামনামি।
ক, খ, গ মিলে ঘ'কে খিস্তোলেন। ঘ'য়ের হয়ে ঙ এসে ক'কে মেনিমুখো বলে খোঁটা দিলেন। গ সুট করে খবর বের করলেন যে ঙ ১৯৯৬ সালের অমাবস্যায় পাঁচটা ঢেঁকুর তুলেছিলেন ঠাকুরঘরের কুড়ি ফুটের মধ্যে, তাঁর প্রমাণ ফলাও করে সোশ্যাল মিডিয়াময় ছড়িয়ে পড়ল।
এ'দিকে জানা গেল খ সিগারেটে ফিল্টারে পোস্ত মাখিয়ে টানেন। ক সেই প্রসঙ্গ তুলে পোস্তর ইজ্জত বাঁচাতে খ'কে অ্যাসহোল বলে পাইলস প্রসঙ্গ টানলেন। ঘ খ'কে ক'য়ের চেয়ে বেশি ঘেন্না করেন। কাজেই ক খ'য়ের ব্যক্তিগত স্পেস খর্ব করছে বলে রেগেমেগে হাজার শব্দের পোস্ট দিলেন।
এমন ঘুরলি খেতে খেতে ক, খ, গ, ঘ, ঙ'র মধ্যে থেকে অগুনতি হারামজাদা, ক্যারেক্টারলেস, উন্মাদ, চাড্ডি, দেশদ্রোহী বেরিয়ে এলো।
অথচ।
অথচ।
ক নয়নতারার টবের দিকে তাকিয়ে গোটা বিকেল কাটিয়ে দিতে পারেন।
খ মাদুর আর একবাটি মুড়ি বাতাসা পেলে কোটি টাকার লোভ ছাড়তে পারেন।
গ শিব্রামভক্ত।
মশা মারলে ঘ'য়ের মনখারাপ হয়।
ঙ শ্যামল মিত্রে নিজে সঁপে রেখেছেন।
ক টু ঙ; আদতে অমুকে বা তমুকে কারুরই তেমন কিছু এসে যায় না। শুধু সেডিমেন্ট হিসেবে একে অপরের প্রতি ঘেন্নার বালি আর গালের নুড়িপাথর।
1 comment:
চমৎকার
Post a Comment