Sunday, June 11, 2017

কিছুনা

নিবিষ্টমনে ব্রীজের বাতিগুলোর টিমটিমের দিকে তাকিয়ে সল্টেড বাদাম চিবুলে বুকের মধ্যের চিনচিন কমে যায়। চোখের ফোকাস একটু আবছা হয় বটে তবে সন্ধ্যের লাগাম ফের হাতে ফিরে আসে।

পুরনো টোটকা। অব্যর্থ।

তিননম্বর বাদামের প্যাকেট ছিঁড়ে রেলিঙে ঝুঁকে দাঁড়াল দীপক। মুখে বুকে মেঘলা হাওয়ার ঝাপটা।

কিছু হয়নি।
সমস্ত ঠিক আছে। স্কেলে মেপে চলছে সমস্ত কিছু। যেমনটা হওয়ার কথা। আগামীকাল ফের আটটা সতেরোর ট্রেন ধরে অফিস। পেন্ডিং ফাইলগুলোর হিল্লে না করলে চলছে না, কাজেই ফিরতে রাত। বাড়ি ফেরার পথে মায়ের শুগারের ওষুধ, সে'টা আর্জেন্ট। ছাদের ঘরের প্লাস্টারটা নতুন করে করাতে হবে, দামোদর মিস্ত্রীকে রাতের দিকে ডাকতে হবে।
সমস্ত ঠিক আছে।
কিছু হয়নি।

বুক পকেটের চিঠিটা আদতে কিছু না। কিছু না।

"কিছু না কিছু না" বিড়বিড়টা ক্রমশ দলা পাকিয়ে উঠছিল বুকের ভিতর। কিছুনার গায়ে গন্ধরাজের সুবাস। ছোটবেলার বিকেলের আলো মাখানো কিছুনা। কিছুনা অঙ্কে ভালো। কিছুনা মাথায় হাত বুলিয়ে দিলে মনে হয় এইবারে কলকাতা ভেসে যাবে।

হাওড়া ব্রীজ থেকে খাম না খোলা চিঠির দুলে দুলে নদীর বুকে নেমে যাওয়ায় কিছুনার ছটফট দেখতে পেলো দীপক।

**

"টিকিট করুন জলদি। স্টেশন না হাওড়া ময়দান"?

"স্টেশন। এই যে। আচ্ছা, চিঠি পড়তে হলে যে খাম খুলতেই হবে, তেমন প্রিমিটিভ ধারণায় আটকে থাকার কোনও মানে হয় না। তাই না দাদা"?

"আমায় কিছু বললেন নাকি"?

"নাহ্, ও কিছুনা।

No comments: