হাওয়াই চটি জোড়া পায়ে না গলিয়েই ছাতে উঠে এলেন মনোহরবাবু।
রাতবিরেতে ফটাসফট শব্দ মোটে কাজের কথা নয়।
উত্তর কোণে রাখা বেলফুলের টবের কাছে এসে মুখ গুঁজে দাঁড়িয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। সন্ধ্যেবেলা জোর বৃষ্টি হয়েছে, বাতাসে এখনও অল্প ভেজা ভাব, ফতুয়ার খোলা বোতাম বেয়ে বুকে টুপটাপ শীতের আভাস ঝরে পড়ছে।
মিনিট দশেক পর সে এলো। সপাটে। যেমন ভাবে মনোহরবাবু চাইছিলেন। বুক ভরিয়ে। মন হাল্কা করে। হাউহাউ করে। "মা মাগো, আর ভাল্লাগে না"র চাপা গোঙানিতে দিব্যি খানিকক্ষণ ভেসে রইলেন।
হাউহাউয়ের হুড়মুড় কেটে যেতেই ফতুয়ার খুঁট টেনে মুখ মুছে নেমে এলেন শোওয়ার ঘরে। গিন্নীর ভোঁসভোঁসানি থেমে গেছিল, ঘুম ভেঙেছে।
- ফের তুমি উঠেছিলে?
- ওই, দেরাজটা খুলে দেখে এলাম।
- বিশ্রী বাতিকটা কি আর যাবে না?
- কী করব গিন্নী, অতগুলো কাঁচা টাকা! বারবার গিয়ে নজরদারি না করলে শান্তি পাই না। কোনদিন যে ট্যাক্সের রেড পড়বে...শেষে এ বয়সে আবার...।
- ঘুষের টাকার গরমে ঘুম যদি না আসে তাহলে ঘুষ নাও কেন? রেড পড়লে আমি বাঁচি। রাতে অন্তর ঘুমোতে পারব। যত্তসব!
ও'দিকে দেরাজের অন্ধকারে গীতাদেবীর প্রাণ হুহু করে ওঠে। "বাছা আমার ঘুষ নেয় বলে কি মানুষ না যে বৌটা অমন বিশ্রীভাবে চোপা করবে? বাছা আমার নরম মনের মানুষ; ছাত ভালোবাসে, বেলফুলের সুবাস ভালোবাসে। অল্প ঘুষ নেয় আর ডেডবডি যক্ষের কাজ করে বলে মাকে পোড়ায়নি। তাই বলে ওই দু'চোক্ষের বিষ বৌটা ওকে চোপা করবে"?
No comments:
Post a Comment