আমি চারদিকে অন্ধকার দেখতে পাচ্ছি।
না মানে, আমি বলতে চাইছি যে আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।
নিকষ।
নিশ্ছিদ্র।
কানে যে গম্ভীর শব্দের ঝমঝমে শব্দের আসা যাওয়া, সে'টা নিশ্চয়ই সমুদ্রের ঢেউ।
মুখে ফুরফুরে হাওয়া। অল্প ভেজা।
পায়ের নিচে বালি। তা'তেও সামান্য ভেজা ভাব। সৈকত। বেশ। বেশ।
যাক। স্পষ্ট হচ্ছে ব্যাপারটা। পায়ের পাতায় বার বার জল ছুঁয়ে যাচ্ছে, পায়ের তল থেকে বারবার বালি সরে যাওয়ার অদ্ভুত শিরশিরানি।
অন্ধকারের গুমোট কালচে ভাবটা কেটে গিয়ে তা'তে নীল মিশতে শুরু করেছে। কানেও ঢেউ বাদ দিয়ে অন্যান্য শব্দ ঢুকতে শুরু করেছে:
গেলাসে ডিম ফাটিয়ে চামচ দিয়ে নাড়ার খটখট শব্দ।
"আপনার হাতে কি ও'টা আনন্দবাজার নাকি"?
"পইপই করে বলেছিলাম মাদুর ক্যারি করতে"।
"বাবু, চা দিব"?
"ঢাইকিড়িকিড়ি"।
অন্ধকারের বেলুন ফুটো করে দু'টো একটা আলোর দানা ভেসে উঠতে শুরু করেছে। নিথর ঠাণ্ডা অনুভূতিটা কেটে গিয়ে বুকের ভিতরের আনচানটা টের পেতে শুরু করেছিলাম সবে। পিঠে একটা জব্বর ধাক্কা এসে পড়াতে অন্ধকারটা এক ধাক্কায় উবে গিয়ে চোখ ঝলসে গেল।
পায়ের টনটনে ব্যথাটা ফেরত এলো। ঘামের গন্ধ। ঢেউয়ের শব্দ উবে গেল মাইকের কড়া আওয়াজে;
"আমাদের পুজো কমিটির পক্ষ থেকে, দূরদূরান্ত থেকে আগত সকল দর্শনার্থীকে জানাই আন্তরিক শারদ শুভেচ্ছা..."!
লাইন ফের এগোতে শুরু করেছে। আমি আড়াই সেকন্ডের ঝিমটিতে হাফ পদক্ষেপ পিছিয়ে পড়ায় লাইনে আমার পিছনে দাঁড়ানো ভদ্রলোক ভারি মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন বোধ হয়। ।
No comments:
Post a Comment