- দাদা গো! কী বৃষ্টি! কী বৃষ্টি!
- বটে?
- ঝমঝম শুনতে পাচ্ছ না?
- ঝমঝম কি? ঝিরঝির মনে হচ্ছে।
- তোমার কান গ্যাছে। এদিকে আবার শঁশঁশঁশঁ করে ঝড়!
- সামান্য ফুরফুর কানে এসেছে বটে।
- প্রলয় এলো বুঝি, এমন দিন তিনেক চললে কলকাতা বে অফ বেঙ্গলে মার্জ হয়ে যেতে পারে।
- না না। বড় জোর বেহালায় অটো উল্টোবে, আমহার্স্ট স্ট্রিটে হাঁটুজল। মেজকাকার সামান্য সর্দিজ্বর। ঠাম্মার সাধের গামছাজোড়া শুকোবে না।
- এই আন্ডারপ্লে করাটা তোমার একটা বদভ্যাস দাদা। সে'বার মোদীর ল্যান্ডস্লাইড ভিক্ট্রিকে বললে স্টেজম্যানেজ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। মোহনবাগানের চার গোল খাওয়ার পর বললে ক্লোজলি ফট্ কনটেস্ট। পিসিমার কিডনি স্টোনের দুর্দান্ত ব্যথাকে মাইল্ড ডিসকমফর্ট বলে পিসেমশাইকে রিপোর্ট করলে।
- বাঙালির এই অকারণ লাফিয়ে ওঠার স্বভাবটা বড় বিশ্রী রে ছোট।
- ধুস, তোমার সঙ্গে কথা বলাই ঝকমারি। তার চেয়ে বরং রান্নাঘরে গিয়ে মায়ের কড়াইয়ে খুন্তি নাড়া দেখি। বাবা আজ ঢাউস ইলিশ এনেছে; দেড় কিলোর।
- খোকা ইলিশ নয়, সে'টা ঠিক। তাই বলে ঢাউস? ধুস। এক কিলো সাড়ে তিনশো। অনলি।
- বাজে না বকে পড়তে বসো। গতবার ফিজিক্সে অক্কা পেয়েছিলে সে'টা মনে আছে তো? জ্যাঠা বলেছে এ'বারেও ফেল করলে তোমার কান ছিঁড়ে নেবে।
- অক্কা কি বলা চলে রে? আর পঁয়ত্রিশটা নম্বর পেলেই ফার্স্ট ক্লাস হয়ে যেত। আর জ্যাঠা অতটা কানিং নয় যে গাধা পিটিয়ে ভ্যান গঘ বানাবে।
- আমি চললাম রান্নাঘরে।
- অ্যাই ছোট শোন! অল্প এক কুচি ভাজা ইলিশ আনিস তো বাটিতে করে। টেস্ট করব। মুখ জিভ ফ্রেশ থাকলে টোটাল ইন্টারনাল রিফ্লেকশনটা ভালো ভাবে ইন্টারনালাইজ করা যাবে।
- এক কুচি ইলিশ ভাজা, তাই তো?
- এক কুচি মাত্র। মাইনর। ইনসিগনিফিকেন্ট। এই ধর, তোদের মত বাঙালিদের হিসেবে দু'টো পেটির পিস। চট করে রান্নাঘর থেকে নিয়ে আয় দেখি।
No comments:
Post a Comment