- সুবিমলকে একটু ডেকে দেবেন?
- কে?
- আমি মনোময় দত্ত। ও আমার সঙ্গে অক্রুর দত্ত লেনের মেসবাড়িতে টানা অনেকদিন ছিল।
- না না, আপনি কাকে খুঁজছেন বললেন?
- সুবিমল। সুবিমল মৈত্র। ডেকে দিতে পারবেন কি?
- এ'খানে ওই নামে কেউ থাকেন না।
- ওহ। ডাকতে পারবেন না তা'হলে।
- থাকেনই না কেউ ওই নামে।
- আমিও তো তাই বললাম। সুবিমল তা'হলে এখন নেই।
- আরে! বলছি সুবিমল নামে কেউ এ বাড়িতে থাকেই না।
- আমি কি আপত্তি করেছি?
- তাহলে বলছেন কেন যে সুবিমলকে আমি ডেকে দিতে পারব না।
- পারবেন কি? ডেকে দিতে? এখন?
- ইয়ার্কি হচ্ছে! ওই নামে কেউ কস্মিনকালেও এ'খানে থাকেনি।
- অত ঘুরিয়ে বলছেন কেন? জানতে চাইলাম সুবিমলকে ডেকে দিতে পারবেন কিনা। পারবেন না, ল্যাঠা চুকে গেল!
- পারার প্রশ্নটা আসছে কোথা থেকে? যে এ'খানে নেই তাকে ডাকবই বা কী করে?
- মহামুশকিল। সে যদি এখানেই থাকবে, তা'হলে তাকে খামোখা ডাকতে বলবই বা কেন? এখানে নেই, তাই বলেই তো জিজ্ঞেস করলাম যে সুবিমলকে ডেকে দিতে পারবেন কিনা।
- না মানে, কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে।
- স্বাভাবিক। আমি এক প্রশ্ন করছি অথচ আপনি কী সব আগডুমবাগডুম উত্তর দিয়ে চলেছেন। পারবেন কি সুবমিলকে ডেকে দিতে?
- সুবিমল? আপনার মেসের বন্ধু?
- এই তো। দিব্যি চেনেন। পারবেন ডেকে দিতে?
- আমি তো সুবিমল বলে কাউকে চিনি না। মাইরি। আমার নাম হরিহর দত্ত। আমার বাপ দিবাকর গত হয়েছেন বছর দশেক। আমি এক ছেলে, বিয়েথা করিনি। একাই থাকি।
- ফের অদ্ভুত যুক্তি। আপনার বাপের নাম দিবাকর বলে আপনি সুবিমলকে ডাকবেন না? উইলে লিখে গেছিলেন নাকি আপনার বাবা?
- আমার কেমন গোলমাল ঠেকছে মনোময়বাবু।
- ঠেকছে না? আপনার কথাবার্তায় আমারও তেমনই মনে হচ্ছে হরিহরবাবু।
- আচ্ছা, ডেকে দেখব? সুবিমলকে?
- ক্ষতি তো নেই। থ্যাঙ্ক ইউ।
- কিছুই বলা যায় না, বলুন?
- পয়েন্ট।
- তা'হলে ডাকি? সুবিমলবাবুকে?
**
"সুবমিলবাবু" বলে বার চারেক হাঁক পাড়তেই পুঁটিরাম সুট করে সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে এসে মনোময় দত্তর কোলে উঠে বসল। মনোময় শুকনো থ্যাঙ্ক ইউ বলে বেরিয়ে গেলেন।
মাস ছয়েকের পরিচয়েই পুঁটিরামকে বড় আপন করে নিয়েছিলেন হরিহরবাবু। কিন্তু আজ স্পষ্ট বোঝা গেল যে পুঁটিরাম হরিহরবাবুকে আদৌ নিজের ভাবতে পারেনি। যাকগে, একা থাকার কপাল হরিহরবাবুর, তাঁর ভাগ্যে অমন আদুরে বেড়ালের সঙ্গ-সুখ সইবে কেন?
No comments:
Post a Comment