কত ভালোবাসার। নার্সিংহোমে প্রথম কোলে নেওয়া তুলতুলের। মিহি কুঁইকুঁই কান্নার মিঠে সুর বুকে আগলে নেওয়ার। খোকা।
নরমস্য নরম আঙুলের ছোঁয়ার। নাহ্, অপরিষ্কার কর্মব্যস্ত হাতে ছোঁয়া যায়না খোকাকে, ওর গা বড় সরল। আদরের, তাতে ধুলো লাগতে নেই।
খোকার ঘুমে পাখির বাসার ঠুনকো আসবাব, সামান্য শব্দে কেঁপে ওঠে সে। তার মুখের বিরক্তিতে বুকে মোচড় খেলে যায়। অতএব বাড়তি কোনও শব্দ নয়; শুধু ঘুমপাড়ানির মাপা সুর।
সমস্ত ঘাম ধুলো শুষে নিক বাবার জামা, মায়ের কাপড়। সমস্ত সবুজ হোক খোকার। টলটলে চুমু থাক খোকার গালে। খোকার বুকের নরম ধুকপুক শুনুক মায়ের কান, খোকার গালে ঠেসে থাক বাবার সদ্য দাড়ি কাটা গাল।
থাকুক খোকার সামান্য পেটে ব্যথায়
মায়ের যন্ত্রণা মাখানো ছটফট,
থাকুক বাবার 'কেন কিছু করতে পারছি না'র কাচুমাচু।
বোমার আঘাতে,রক্তে, ধুলোয়, অমানুষিক যন্ত্রাণায় হতবাক সে খোকার পাথুরে নিশ্চুপ মুখ বুকে বয়ে বেড়াতে কত হাজার বার মরতে হয় তার মা বাবাকে?
খোকার ব্যথায় বাবা কোন সংগ্রাম সান্ত্বনা খুঁজে নেবে? খোকার গাল বেয়ে নামা রক্তে খোকার মা কোন সিরিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, বেহালার হিসেব বুঝে নেবে?
আমার দেশ নেই। সংগ্রাম নেই। যুদ্ধ নেই।
আমার খোকা আছে। সে থাকার মত করে থাকুক।
সবার খোকা খুকি থাকুক। তারা থাকার মত করে থাকুক।
(২০১৬য় লেখা। আলেপ্পোর যুদ্ধ থমকে দিয়েছিল পাঁচ বছরের এই খোকাকে। খবরের ওয়েবসাইটে তার ছবি দেখা)।
No comments:
Post a Comment