Saturday, March 3, 2018

চিঠি ও পদ্য

গত তিনদিনে এই নিয়ে বাহাত্তর নম্বর চিঠি এলো। উড়ো। এ'তেও বক্তব্য মোটামুটি একই রকম।
অবশ্য বক্তব্য না বলে হুমকি বলা ভালো।

বিয়ে না করলে সে মেয়ে নাকি আত্মহত্যা করবে। কিন্তু কী মুশকিল। সে যে নিজের নাম ঠিকানা কিছুই লেখেনি। অবশ্য তাঁর পরিচয় কিছুটা হলেও আঁচ করেছেন মনোহর। নিজে থেকে তাঁর একটা নাম দেওয়া হয়ে গেছে ভাবতে একটু লজ্জাই লাগে মনোহরের; সুলিয়া। খামে অল্প গন্ধরাজের সুবাস। আর চিঠির ভাষায় এই যে সামান্য অনুযোগ মেশানো হুমকি, তা'তে মায়া আরও তরতর করে বেড়ে চলে।

পরিচয় পেলে বিয়েটা সেরে ফেলতে খুব আপত্তি করতেন না মনোহর। সুলিয়াকে নিয়ে সে'সবই সাতপাঁচ ভাবছিলেন  তিনি। ভেবে ভেবে উপায়ন্তর না দেখে নীল ডায়েরীটা টেনে নিয়ে বাহাত্তর নম্বর পদ্যটা লিখে ফেললেন মনোহর।

আর তখনই চড়ুইপাখির ডানঝাপটানো সুরে জানালা বেয়ে তিয়াত্তর নম্বর চিঠিটা এলো।

***

- চিঠি?
- তাই তো বলে ডাক্তারবাবু।
- আপনি দেখেছেন সে চিঠি?
- চিঠি না হাতি।
- আরে! কী মুশকিল। এই যে বললেন আপনার দাদার চিঠি পাওয়া বাতিক হয়েছে?
- বাতিক না। ব্যামো। আর আদতে কিস্যু আসে না। সে জন্যেই তো আপনার কাছে আসা ডাক্তারবাবু।
- নার্ভটার্ভ ফেল করেছে নাকি?
- আশ্চর্য নয়, নতুন কবিদের অমন একটু হতেই পারে। এ'বার দু'দাগ ওষুধ দিন দেখি।

***

দুপুরবেলা গন্ধরাজ গাছটায় হেলান দিয়ে একটু ঝিমটি না দিলে টুসুর চলে না। দিন তিনেক হল; সে'খানে শুয়ে সে রোজ ঝিমঝিমে স্বপ্ন দেখছে। সে'সব স্বপ্নে বাবার পছন্দের ব্যাঙ্ক চাকুরে পাত্রটি তার পিছনে ঘুরঘুর করে না। বরং তার চোখের সামনে নতুন নতুন পদ্যরা নেচে বেড়ায়। সব পদ্যর একই বিদঘুটে শিরোনাম; "অ্যাই সুলিয়া"!

No comments: